লোটা ইত্যাদিতে অযু করার পর বেঁচে যাওয়া পানি দাঁড়িয়ে পান করার মধ্যে শিফা রয়েছে। যেমনিভাবে- আমার আক্বা, আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত মাওলানা শাহ্ ইমাম আহমদ রযা খাঁনرَحۡمَۃُ اللّٰہ ِتَعَالٰی عَلَیہِ “ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংকলিত) ”র ৪র্থ খন্ডের, ৫৭৫ থেকে ৫৭৬ পৃষ্ঠায় বর্ননা করেন: অযুর বেঁচে যাওয়া পানির জন্য শরয়ী ভাবে মর্যাদা রয়েছে এবং নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم থেকে প্রমাণীত।
হুযুর صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم অযু করার পর অবশিষ্ট বেঁচে যাওয়া পানি দাঁড়িয়ে পান করে ছিলেন এবং একটি হাদীসের মধ্যে বর্ণনা করা হয়েছে যে, সেটা পান করা ৭০টি রোগের জন্য শিফা স্বরূপ। তবে সেটা ঐ বিষয়ে যমযমের পানির সাথে সামঞ্জস্য রাখে, এই ধরণের পানি দ্বারা ইস্তিন্জা করা উচিত নয়।
তানবিরুল আবছার নামক কিতাবে অযুর আদবের মধ্যে এটাও বর্ণিত হয়েছে; অযু করার পর অযুর অবশিষ্ট পানি কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে পান করে নিন। আল্লামা আব্দুল গণি নাবুলুছি رَحۡمَۃُ اللّٰہ ِتَعَالٰی عَلَیہِ বলেন: আমি পরীক্ষা করে দেখেছি যে, যখন আমি অসুস্থ হই, তখন অযুর অবশিষ্ট পানি দ্বারা শিফা (আরোগ্য) লাভ করি। নবীয়ে রহমত, শফিয়ে উম্মত, মুস্তফা জানে রহমত صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সঠিক নবুয়তি চিকিৎসার মধ্যে পাওয়া ইরশাদের উপর ভরসা করে আমি এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছি।
জান্নাতের আটটি দরজা খুলে যায় =================== পবিত্র হাদীসে বর্ণিত আছে: “যে ব্যক্তি ভালভাবে অযু করলো অতঃপর আসমানের দিকে দৃষ্টি দিলো এবং কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করলো, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হয়। সে যেটা দিয়ে ইচ্ছা করে সেটা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।” (সুনানে দারমী, ১ম খন্ড, ১৯৬ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৭১৬)
দৃষ্টিশক্তি কখনো দূর্বল হবে না ================== যে ব্যক্তি অযু করার পর আসমানের তাকিয়ে “সূরায়ে কদর” পাঠ করবে, اِنۡ شَآءَ اللّٰہ عَزَّوَجَلَّ তার দৃষ্টিশক্তি কখনো দূর্বল হবে না। (মাসায়িলুল কোরআন, ২৯১ পৃষ্ঠা)
অযুর পর “সুরায়ে কদর” পড়ার ফযীলত ================= হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে: “যে ব্যক্তি অযু করার পর একবার ‘সূরা কদর’ পাঠ করবে, তাকে সিদ্দীকীনদের এবং যে ব্যক্তি দুইবার পাঠ করবে তাকে শহীদদের মর্যাদা দান করা হবে। আর যে ব্যক্তি তিনবার (সূরা কদর) পাঠ করবে, তাকে আল্লাহ্ তাআলা হাশরের ময়দানে নবীদের সাথে হাশর করাবেন।” (কানযুল উম্মাল, ৯ম খন্ড, ১৩২ পৃষ্ঠা, হাদীস- ২৬০৮৫। আল হাভী লিল ফতোওয়ায়ে লিস সুয়ূতী, ১ম খন্ড, ৪০২ পৃষ্ঠা)
অযুর পর পাঠ করার দোয়া (শুরু ও শেষে দরূদ শরীফ) =================== যে অযু করার পর এই কলেমাটি পড়বে: سُبْحٰنَكَ اللّٰہُمَّ وَبِحَمْدِكَ اَشْهَدُ اَنْ لَّاۤ اِلٰهَ اِلَّا اَنْتَ اَسْتَغْفِرُكَ وَاَتُوْبُ اِلَيْكَ ــ অনুবাদ: তোমার সত্ত্বা পবিত্র আর হে আল্লাহ্! তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা, তুমি ছাড়া আর কোন মাবুদ নাই। তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তোমার দরবারে তাওবা করছি।
তখন এর উপর মোহর লাগিয়ে আরশের নীচে রেখে দেওয়া হয় এবং কিয়ামতের দিন এটা পাঠকারীকে দিয়ে দেওয়া হবে। (শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ২১ পৃষ্ঠা, নাম্বার- ২৭৫৪)
অযুর পর এ দোয়াটি পড়ে নিন (শুরু ও শেষে দরূদ শরীফ) ================= اَللّٰہُمَّ اجْعَلْنِیْ مِنَ التَّوَّابِیْنَ وَاجْعَلْنِیْ مِنَ الْمُتَطَہِّرِیْنَ অনুবাদ: হে আল্লাহ্! আমাকে বেশি বেশি তাওবাকারীগণের মধ্যে শামিল করো এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করো। (জামে তিরমিযী, ১ম খন্ড, ১২১ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৫৫)
অযুর ফরয ৪টি ========= ❁ মুখমন্ডল ধৌত করা। ❁ কনুই সহ দু’হাত ধৌত করা। ❁ মাথার এক চতুর্থাংশ মাসেহ্ করা। ❁ টাখ্নু সহ দুই পা ধৌত করা। (ফতোওয়ায়ে আলমগিরী, ১ম খন্ড, ৩, ৪, ৫ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ২৮৮ পৃষ্ঠা)
ধৌত করার সংজ্ঞা
কোন অঙ্গকে ধৌত করার অর্থ হচ্ছে, ঐ অঙ্গের প্রতিটি অংশে কমপক্ষে দু ফোঁটা পানি প্রবাহিত করা। শুধুমাত্র ভিজে যাওয়া, পানিকে তেলের মত মালিশ করা অথবা এক ফোঁটা পানি প্রবাহিত করাকে “ধৌত করা” বলা যাবে না, আর না এইভাবে অযু গোসল আদায় হবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংকলিত) , ১ম খন্ড, ২১৮ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ২৮৮ পৃষ্ঠা)
অযুর ১৪টি সুন্নাত
হানাফী মাযহাব মতে অযুর পদ্ধতিতে অযুর কিছু সুন্নাত ও মুস্তাহাব সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে। এখন তার বিস্তারিত আলোচনা লক্ষ্য করুন: ❁ নিয়্যত করা ❁ بِسْمِ الله পড়া। যদি অযুর পূর্বে কেউ بِسْمِ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰه বলে, তাহলে যতক্ষণ অযু সহকারে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত ফেরেস্তাগণ তাঁর জন্য নেকী লিখতে থাকবে। ❁ উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধোয়া ❁ তিনবার মিসওয়াক করা ❁ তিন অঞ্জলি পানি দিয়ে তিনবার কুলি করা, ❁রোযাদার না হলে গড়-গড়া করা ❁ তিন অঞ্জলী পানি দিয়ে তিনবার নাকে পানি দেয়া। ❁ দাঁড়ি থাকলে (ইহরামে না থাকাবস্থায়) দাঁড়ি খিলাল করা। ❁ হাত ও ❁ পায়ের আঙ্গুল সমূহ খিলাল করা। ❁ সম্পূর্ণ মাথা একবার মাসেহ করা। ❁ কান মাসেহ্ করা ❁ অযুর ফরযগুলোতে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। (অর্থাৎ প্রথমে মুখ তারপর কনুই সহ হাত ধোয়া, তারপর মাথা মাসেহ্ করা তারপর পা ধোয়া) আর ❁ একটি অঙ্গ শুকানোর আগে অন্য অঙ্গ ধৌত করা। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ২৯৪ পৃষ্ঠা)
নিজে জানুন, অন্যকে জানান
প্রচার কর, যদি একটি মাত্র আয়াত ও হয় সহীহ বুখারী -৩৪৬১
YouTube এ সকল অ্যাসাইনমেন্টের সমধান পেতে আমাদের অফিসিয়াল YouTube চ্যানেলটিতে এখনি সাবস্ক্রাইব করো। আমাদের চ্যানেলঃ 10 Minute Madrasah
প্রশ্ন প্রকাশ হলে সবগুলো বিষয়ের উত্তর দেওয়া হবে। তাই তোমরা পেজটি সেভ বা বুকমার্ক করে রাখো।