স্বামী স্ত্রী এর সম্পর্কে
(৪) আমরা কোন মুসলমানের মন্দ বিষয় দেখলে বা শুনলে তা যেন অপরকে না বলি, এই নিয়ম যদি নিজের মাঝে বাস্তবায়ন করি,তবে অতীব উত্তম হবে।
(৫) মহিলাকে গোপন কথা বলবেন না।
(৬) (স্বামী স্ত্রী উভয়) বাবা-মাকে সর্বাবস্থায় সম্মান করুন, তাদের অধিকারগুলো আদায় করা ব্যতিত নিজেকে কখনো মুক্ত মনে করতে পারবেন না।
(৭) মহিলাদের বাম পাঁজরের বাঁকা হাঁড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তাকে হিকমতে আমলী তথা কৌশলী কাজের মাধ্যমে পরিচালিত করার মধ্যে সফলতা রয়েছে, কথায় কথায় রাগ ধমক বা তিরষ্কার করলে বিগড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
(৮) স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক: স্বামী হলো রাজা আর স্ত্রী হলো প্রজা। তাই অতিরিক্ত ফ্রি হবেন না, অন্যথায় ভয়ভীতি চলে যাওয়ার মাধ্যমে রাজত্বের দাপট নষ্ট হয়ে যাবে।(কথাটি অন্যভাবে না নিয়ে ভালভাবে বুঝার চেষ্টা করুন)
(৯) ধোয়া ও রান্না করার কাজ একমাত্র স্ত্রীই করবে, যদি তার সাথে কোন প্রয়োজন ছাড়া কোন সাহায্যকারী কর্মী থাকে, তবে হয়ত সেটা তাকে অলস বানাবে।
(১০) জানালা এবং বেলকনি থেকে কারণ ছাড়া উকি মারা কোন ভদ্র লোকের কাজ নয়। আপনিও সর্তক থাকবেন এবং আপনার স্ত্রীর উপর খুব কঠোর থাকবেন। প্রয়োজন বশত যদি উকি মারতে হয় তবে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন যেন কোন নামুহরিম প্রতিবেশীর ঘরে দৃষ্টি না পড়ে।
(১১) মাদানী ইনআমতের উপর আপনিও আমল করবেন এবং আত্তারের কন্যাকেও খুব কঠোরভাবে আমল করাবেন।
(১২) আপনার স্ত্রী একজন মানুষ, ভুল-ত্রুটির সম্ভাবনা রয়েছে, যদি তার আলোচনাটা নিজের বাবা-মা বা পরিবারে সদস্যদের কাছে করা হয়, তবে গীবতের গুনাহের সাথে সাথে পরিবারের ক্ষতি হবে। আপনি উত্তম পদ্ধতিতে সংশোধন করার চেষ্টা করবেন।
(১) স্বামীর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত প্রত্যেক হুকুম যা শরীয়াত বিরোধী নয়, তা পালন করা আবশ্যক।
(২) নিজের স্বামী এবং শাশুড়ীকে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাবে এবং দাঁড়িয়ে বিদায় দিবে।
(৩) দিনে সম্ভব হলে কমপক্ষে একবার শাশুড়ীর হাতে চুমু দিবে।
(৪) নিজের শ্বশুর শাশুড়ীকে বাবা-মা’র মত সম্মান করবে। তাদের আওয়াজের সামনে নিজের আওয়াজকে নিচু রাখবে। তাদের এবং স্বামীর সামনে “জ্বী জনাব! বলে” কথা বলবে।
(৫) স্বামী প্রয়োজন বশতঃ শাস্তি প্রয়োগে ক্ষমতা রাখে, এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা প্রকাশ করবে। রাগ করে বা মুখে
মুখে কথা কাটাকাটি করে ঘরে ফিরে আসার ক্ষেত্রে আপনার জন্য আমার ঘরের (তথা কন্যার আপন ঘর) দরজা বন্ধ।
(৬) হ্যাঁ, ফিরে আসবেন না, তবে স্বামীর অনুমতিক্রমে যখন ইচ্ছা তখন আপন ঘরে আসতে পারবেন।
(৭) নিজের ঘরের সংক্ষীর্ণতা স্বামীকে বলে গীবতের মতো কবীরা গোনাহে নিজেও জড়াবেন না এবং আপন স্বামীকেও তা শোনার
মত কবীরা গুনাহে জড়াবেন না।
(৮) নিজের আমলহীনতা বা জ্ঞানহীনতা ঢেকে রাখতে এই রকম বলে দেওয়া যে, “আমার বাবা-মা প্রভৃতি এটা আমাকে শিখাননি।” এটা মারাত্মক বোকামী।
(৯) বাহারে শরীয়াত ৭ম খন্ড, ভরণ পোষণের বর্ণনা, স্বামী-স্ত্রীর অধিকার প্রভৃতি অধ্যয়ন করে নিন।
(১০) নিজের জন্য কোন ধরণের প্রশ্ন স্বামীকে করে তার বোঝার পাত্র হবেন না, হ্যাঁ যদি সে নির্ধারিত অধিকারগুলো আদায় না করে তবে দাবি করতে পারবে।
(১১) মেহমানদের সেবা-যত্ন সৌভাগ্য মনে করবেন। তবে তাদের খরচাদির ব্যাপারে স্বামীর উপর অনর্থক বোঝা চাপাবে না।
(১২) স্বামীর অনুমতি ছাড়া কখনো ঘর থেকে বের হবে না।
(১): “তোমরা যা কিছুই আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য খরচ করবে, তোমাদেরকে তার সাওয়াব দেওয়া হবে। এমন কি যা কিছু তোমরা নিজের স্ত্রীর মুখে দিবে তার সাওয়াবও দেওয়া হবে।” (সহীহ বুখারী, ৪র্থ খন্ড, ১২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৫৬৬৮)
(২): “পবিত্রতা চেয়ে নিজেই নিজের জন্য যা কিছু খরচ করে, তবে এটা তার জন্য সদকা এবং সে নিজের স্ত্রী, পুত্র এবং
ঘরের সদস্যদের জন্য যা খরচ করে তবে এটাও সদকা।” (মাজমাউয যাওয়ায়িদ, ৩য় খন্ড, ৩০২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৪৬৬৬)
(৩): “মানুষ যদি তার স্ত্রীকে পানিও পান করায় তবে সে এটারও প্রতিদান পাবে।” (মুসনদে ইমাম আহমদ, মুসনদে শামীন, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৮৫ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১৭১৫৫) দুর্ভাগ্যবশত আজকাল অধিকাংশ মানুষ ছেলেরই আশা করে থাকে, যদি মেয়ে জন্ম গ্রহণ করে, তবে অশুভ মনে করে। মেয়ের ফযীলত পড়ুন আর আন্দোলিত হোন;
(৪): “যার কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হয়েছে আর সে তাকে জীবন্ত দাফন করেনি এবং তাকে অসম্মানও করেনি এবং ছেলেদেরকে
তার উপর প্রাধান্য দেয়নি। তবে আল্লাহ্ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।” (আবু দাউদ, ৪র্থ খন্ড, ৪৩৫ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৫১৪৬)
(৫):“যাকে আল্লাহ্ তায়ালা কন্যা সন্তান দান করেছেন এবং যদি সে তাদের প্রতি দয়া করে, তবে ঐ কন্যা সন্তানেরই তার
জন্য জাহান্নামের আগুনের প্রতিবন্ধক হবে।” (মিশকাত, ২য় খন্ড, ২১০ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৪৯৪৯)
(৬): “যার তিনটি মেয়ে বা তিন বোন রয়েছে এবং সে যদি তাদের প্রতি উত্তম আচরণ করে তবে সে জান্নাতে প্রবেশ
করবে।” (জামেউত তিরমিযী, ৩য় খন্ড, ৩৬৬ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১৯১৯)
নাস্তিকদের প্রশ্নোত্তর : বান্দাকে খারাপ কাজ করা থেকে আল্লাহ তাআলা বাঁধা প্রদান করেন না কেন?
হযরত সায়্যিদুনা আবুল হাসান খেরকানি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এর প্রসিদ্ধির কথা শুনে এক শিষ্য ভ্রমন করে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে তার ঘরে উপস্থিত হলেন। দরজায় করাঘাত করলেন এবং আসার উদ্দেশ্য জানালেন।
তার স্ত্রী বললেন: তিনি জঙ্গলে লাকড়ীর জন্য গিয়েছেন এবং সে হযরতের মন্দ স্বভাবের কথা বলতে লাগলেন। ঐ শিষ্য ভারাক্রান্ত মনে জঙ্গলের দিকে গেলেন, দেখলেন দূর থেকে এক ব্যক্তি আসছেন, তার পিছনে একটি বাঘ আসছে, বাঘের পিঠে লাকড়ীর বোঝা ছিলো।
তিনি দূর থেকেই বললেন: আমিই আবুল হাসান খেরকানি, যদি আমি আমার বদ মেজাজী স্ত্রীর বোঝা সহ্য না করতাম তবে বাঘ কি আমার বোঝা উঠাতো? (তাজকিরাতুল আউলিয়া, ১৭৪ পৃষ্ঠা)
স্বামী স্ত্রী উভয়ে সহ পুরো পরিবার সাবধান! পরিবার পরিজনদের শরীয়াতের প্রয়োজনীয় হুকুমআহকাম শিখানো আবশ্যক। তার একটি মাধ্যম হলো দাওয়াতের ইসলামীর “মাদানী চ্যানেল” TV শুধু এই উদ্দেশ্যেই নেওয়া যেতে পারে এবং এতে সব চ্যানেল বন্ধ করে দিয়ে শুধুই মাদানী চ্যানেল রাখা যাবে।
যদি আল্লাহ্ না করুক! তাদের শুধুই দুনিয়াবী জ্ঞান শিখানো হয় আর গুনাহ থেকে দূরে রাখার পরিবর্তে নিজেই গুনাহের উপকরণাদী উদাহারণ স্বরূপ: সিনেমা, নাটক ইত্যাদি দেখার জন্য TV এবং VCR ইত্যাদি ঘরে রাখা হয়
এবং শয়তানের প্ররোচনায় পতিত হয়ে যে, যদি ঘরের TV ইত্যাদির ব্যবস্থা করা না হয়, তবে তোমাদের ছেলে-মেয়ে অন্যের ঘরে গিয়ে সিনেমা দেখবে আর নিজ পরিবার পরিজনকে সুদ, ঘুষ বা হারাম উপার্জনের টাকা খাওয়ানো হয়, তবে আখিরাত মন্দ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তায়ালার দরবারে উপস্থিত করা হবে। তার স্ত্রী পুত্ররা অভিযোগ করবে, “হে আল্লাহ্!
তিনি আমাদের শরীয়াতের কোন হুকুম-আহকাম শিখাননি এবং তিনি আমাদের হারাম উপার্জন থেকে খাওয়াতেন, কিন্তু আমরা জানতাম না।
এই কারণে ঐ ব্যক্তিকে এমন শাস্তি দেওয়া হবে যে, তার চামড়া তো চামড়া এমন কি তার মাংস উঠে যাবে। অতঃপর তাকে মীযানের মানদন্ডে নিয়ে যাওয়া হবে। ফেরেশতারা তার পাহাড় সমপরিমাণ নেকী নিয়ে আসবেন। তখন পরিবার পরিজনের পক্ষ থেকে একজন তার নেকীগুলো থেকে কিছু নিয়ে নিবে।
দ্বিতীয়জন আসবে সেও তা থেকে নেকী নিয়ে তার অপূর্ণতা পূর্ণ করবে। এমনি করে তার সব নেকী তার পরিবার-পরিজনরা নিয়ে নিবে।
এখন সে তার সন্তানদের প্রতি মুখ ফিরিয়ে বলবে: আফসোস! এখন আমার ঘাড়ে শুধুমাত্র ঐ গুনাহগুলোই রয়েছে, যা আমি তোমাদের জন্যই করেছিলাম, ফেরেশতারা ঘোষণা দিবে এই হলো সেই ব্যক্তি যার সমস্ত নেকী তার সন্তান-সন্ততিরা নিয়ে নিয়েছে, আর সে তাদের কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করছে। (কুররাতুল উয়ুন, অষ্টম অধ্যায়, ৪০১ পৃষ্ঠা)
নিঃসন্দেহে ঐ ব্যক্তি বড়ই দুর্ভাগা, যে নিজের সন্তানদেরকে সুন্নাত অনুসারে চলার শিক্ষা দেয় না এবং নিজ স্ত্রীকে যতটুক সম্ভব পর্দা ও অন্যান্য ব্যাপারে হুকুম-আহকাম শিক্ষা দেয় না।
বরং আজ ফ্যাশনের সরঞ্জামাদি নিজেই এনে রাখে। মেকআপ করিয়ে পর্দাহীন অবস্থায় স্কুটারে বসায়, শপিং সেন্টারগুলোর শোভাবর্ধন করে এবং নারী-পুরুষের বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরাফিরা করে। মনে রাখবেন!
যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও নিজের কন্যা ও মুহরিমদেরকে পর্দাহীনতার জন্য বাধা দেয় না সে হলো দায়্যুছ। দায়্যুছের ব্যাপারে হুযুর পুরনূর ইরশাদ করেন: অর্থাৎ তিন ব্যক্তি কখনো জান্নাতে যাবে না, দায়্যুছ ও পুরুষের বেশধারী নারী এবং মধ্যপানে অভ্যস্ত ব্যক্তি।” (আত তারগীব ওয়াত তাবহীব, ৩য় খন্ড, ৭৬ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৮)
হযরত আল্লামা আলাউদ্দিন হাসকাফি বলেন, দায়্যুছ ঐ ব্যক্তি, যে নিজের স্ত্রী বা কোন মুহরিমের প্রতি আত্মমর্যাদা বোধ প্রকাশ করে না।
জানা গেলো, যে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও নিজ স্ত্রী, মা-বোন এবং যুবতী মেয়ে ইত্যাদিকে গলিতে, বাজারে, শপিং সেন্টারে, বিনোদন কেন্দ্রে পর্দাহীন চলাফেরা করতে, অপরিচিত প্রতিবেশী, না মুহরীম আত্মীয়-স্বজন, না মুহরীম চাকর, চৌকিদার ড্রাইভারদের থেকে নিঃসংকোচতা ও পর্দাহীনতার জন্য বারণ করে না, সেও মারাত্মক বোকা ও নিলর্জ্জ্ব।
দায়্যুছ জান্নাত থেকে বঞ্চিত এবং জাহান্নামের হকদার। যদি পুরুষ নিজের অবস্থান অনুসারে নিষেধ করেন। কিন্তু তারা তা অমান্য করে, এমতাবস্থায় তার উপর কোন অভিযোগ থাকবে না, তিনি দায়্যুছও না।
আল্লাহ্ না করুক! বউ শাশুড়ীর মধ্যে যদি মত বিরোধ হয়ে যায়, তবে এক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের রশি কখনো ছাড়বেন না। মাকে কখনোই অপমান করবেন না। এই অবস্থায় মায়ের ফরিয়াদ শোনে স্ত্রীকেও মারবে না। শুধুমাত্র নম্রতার মাধ্যমে কাজ আদায় করবেন।
YouTube এ সকল অ্যাসাইনমেন্টের সমধান পেতে আমাদের অফিসিয়াল YouTube চ্যানেলটিতে এখনি সাবস্ক্রাইব করো।
আমাদের চ্যানেলঃ 10 Minute Madrasah
প্রশ্ন প্রকাশ হলে সবগুলো বিষয়ের উত্তর দেওয়া হবে। তাই তোমরা পেজটি সেভ বা বুকমার্ক করে রাখো।
আপডেট পাওয়ার জন্য আমাদের ফেসবুক পেইজে যুক্ত থাকো
This post was last modified on June 16, 2019 8:31 pm
অষ্টম (৮ম) শ্রেণি হোম সাইন্স তৃতীয় সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ এর সমাধান আমার সারাদিনের কর্মকাণ্ডের একটি… Read More
নবম (৯ম) শ্রেণি অর্থনীতি তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ এর সমাধান Class 9 Economics 3rd Week… Read More
নবম শ্রেণি (৯ম) শ্রেণি গনিত তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ এর সমাধান নবম শ্রেণি (৯ম) শ্রেণি… Read More
নবম শ্রেণি উচ্চতর গনিত (৯ম) শ্রেণি অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ (৩য় সপ্তাহ) এর সমাধান নবম (৯ম) শ্রেণি… Read More
১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সময়কালে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর অবদান ২য় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ এর… Read More
দশম সপ্তাহ (10th Week) নবম সপ্তাহ (9th Week) অষ্টম সপ্তাহ (8th Week) সপ্তম সপ্তাহ (7th… Read More
View Comments