Table of Contents (সূচিপত্র)
কুরবানীর ফযীলত ও জরুরী মাসাইল
✍ গোলাম সামদানী
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন, (তরজমা) “আপনি আপনার প্রতিপালকের জন্য নামায পড়ুন এবং কুরবানী করুন।” (সূরা কাউছার-২)
কুরবানীর সময়ের বিবরণ
কুরবানীর সময় তিনদিন। অর্থাৎ জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ সুবাহ সাদেকের পর হতে বারোই জিলহজ্বের সূর্য্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। অর্থাৎ তিনদিন দুইরাত (দুররে মুখতার)
মাসয়ালা (১) - রাত্রে কুরবানী করা মাকরুহ (আলমগির)।
মাসয়ালা (২) - ১০ই জিলহজ্ব কুরবানী করা সবচেয়ে উত্তম। তারপর ১১ই জিলহজ্ব, তারপর ১২ই জিলহজ্ব। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে যদি ১০ই তারিখে সন্দেহ হয়, তাহলে ১২তারিখের পূর্বে কুরবানী করা উত্তম। যদি ১২ই তারিখে কুরবানী করা হয় এবং ১২ তারিখকে ১৩ তারিখ বলে সন্দেহ হয়, তাহলে সমস্ত মাংস সাদকা করে দেয়া উত্তম (আলমগির)।
মাসয়ালা (৩) – কুরবানীর দিনে কুরবানী করা উটের মূল্য সাদকা করা অপেক্ষা উত্তম। কারণ কুরবানী করা ওয়াজিব অথবা সুন্নাত এবং সাদকা করা কেবল নফল (আলমগিরী)
মাসয়ালা (৪) - যার উপর কুরবানী ওয়াজিব তার কুরবানী করতে হবে। সাদকা করলে ওয়াজিব আদায় হবেনা (বাহারে শরিয়াত)
মাসয়ালা (৫) – শহরবাসীর জন্য ঈদের নামাজের পূর্বে কুরবানী করা জায়েজ নয়। শহরবাসীর জন্য ঈদের খুতবাহ পর কুরবানী করা উত্তম (আলমগীরি)
আরো পড়ুন:
সাদাকাতুল ফিতর কী এবং সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ : কিছু কথা (ভিডিও সহ)
ইতিকাফের বিভিন্ন মাসয়ালা মাসায়েল জেনে নিন ( ভিডিও সহ )
রূহের অবস্থান- কিতাবুর রূহ্ এর বর্ণনা
মৃত্যুর পর রূহের অবস্থান কোথায়?
স্বামী স্ত্রী এর পরস্পর সুখে থাকার অবাক করা ১২টি উপায়
মাসয়ালা (৬) – গ্রামবাসীদের জন্য সুবহ সাদেক হতে কুরবানী করা জায়েজ। কিন্ত সূর্য্য উদয়ের পর হতে কুরবানী করা উত্তম। (আলমগিরী)
জরুরীমাসয়ালা (৬.১) – যে সমস্ত গ্রামে জুমা ও ঈদের নামাজ হয়ে থাকে সেখানে ঈদের নামাজের পর কুরবানী করা উচিৎ।
মাসয়ালা (৭) - ঈদের নামাজের পর খুতবাহর পূর্বে কুরবানী করলে কুরবানী হয়ে যাবে। কিন্ত এই প্রকার করা মাকরূহ (বাহারে শরিয়াত)।
মাসয়ালা (৮) - একই শহরে বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হলে কোনো এক স্থানে নামাজ সমাপ্ত হলে সর্বত্র কুরবানী করা জায়েজ হবে। সর্বত্র নামাজ শেষ হওয়া শর্ত নয়। (দুররে মুখতার ও রদ্দুল মুহতার)
মাসয়ালা (৯) - শহরবাসী নামাজের পূর্বে কুরবানী করতে ইচ্ছা প্রকাশ করলে পশু গ্রামে পাঠিয়ে সেখানে হতে কুরবানী করে আনতে পারবে। (দুররে মুখতার)।
মাসয়ালা (১০) – গ্রামের মানুষ শহরে থাকলে ঈদের নামাজের পূর্বে কুরবানী করা জায়েজ হবেনা (বাহারে শরীয়ত)।
মাসয়ালা (১১) – ১০ই জিলহজ্ব ঈদের নামাজ না হলে জাওয়ালের পূর্বে কুরবানী করা জায়েজ হবেনা। অর্থাৎ ঈদের নামাজের সময় অতিক্রম হবার পর কুরবানী করতে হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে নামাজের পূর্বে কুরবানী জায়েজ। (দুররে মুখতার)
মাসয়ালা (১২) - যেহেতু মিনা শরিফে ঈদের নামাজ হয়না, সেহেতু ফজরের পর হতে সেখানে কুরবানী করা জায়েজ। কোন শহরে ফিতনার কারণে যদি ঈদের নামাজ না হয় তাহলে সেখানে ১০ই জিলহজ্ব ফজরের পর কুরবানী করা জায়েজ হবে (রদ্দুল মুহতার)।
সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে সহজ পদ্ধতিতে আরবি শিক্ষা | সহজ পদ্ধতিতে শিক্ষক ছাড়া কুরআন শিক্ষা
মাসয়ালা (১৩) – ইমামের সালাম ফেরানোর পূর্বে পশু জবেহ হয়ে গেলে কুরবানী জায়েজ হবেনা। ইমামের একদিকে সালাম করার পর জবেহ করলে কুরবানী হয়ে যাবে। ইমামের খুতবা শেষ হবার পর জবেহ করা উত্তম (আলমগীরি)
মাসয়ালা (১৪) - ঈদের নামাজের পর কুরবানী করা হয়েছে। কিন্ত জানা গিয়েছে যে ইমাম বিনা অজুতে নামাজ পড়িয়েছেন এমতাবস্থায় পুনরায় নামাজ আদায় করতে হবে। কিন্ত পুনরায় কুরবানী করা জরুরী নয় (দুররে মুখতার)
মাসয়ালা (১৫) – ৯ই জিলহজ্ব সম্পর্কে কিছু মানুষ ১০ই জিলহজ্ব বলে সাক্ষ্য প্রদান করেছে। এই সাক্ষির উপর নির্ভর করে নামাজ ও কুরবানী করা হয়ে গিয়েছে। পরে সাক্ষ বাতিল প্রমাণ হয়ে ৯ই জিলহজ্ব প্রমাণিত হয়ে গেলে নামাজ ও কুরবানী দুই জায়েজ হয়ে গিয়েছে (দুররে মুখতার)।
মাসয়ালা (১৬) – যদি কোন ব্যক্তি কুরবানী না করে, কুরবানীর দিন অতিক্রান্ত হয়ে যায় এবং পশু অথবা তার মূল্য সাদকা না করে থাকে এবং দ্বিতীয় বৎসর কুরবানীর দিন উপস্থিত হয়ে যায় এবং গত বৎসরের কুরবানীর কাজা আদায় করতে চায়, তাহলে তা জায়েজ হবেনা। বরং পশু অথবা তার মূল্য সাদকা করে দিতে হবে (আলমগিরী)।
মাসয়ালা (১৭) - যে পশুর কুরবানী করা ওয়াজিব ছিলো, কোনো কারণ বশতঃ কুরবানীর দিন অতিক্রম হয়ে গেলে যদি তা বিক্রয় করে থাকে তাহলে উক্ত টাকা সাদকা করে দেয়া ওয়াজিব। (আলমগিরী)
মাসয়ালা (১৮) - যদি কোনো ব্যক্তি কুরবানীর জন্য মান্নত করে কোনো পশু নির্দিষ্ট করে রাখে এবং কুরবানীর দিন অতিক্রম হয়ে যায় তাহলে ধনী হোক বা গরীব, উক্ত পশু জীবিত অবস্থায় সাদকা করতে হবে। যদি জবেহ করে থাকে তাহলে সমস্ত মাংস সাদকা করতে হবে। তা হতে কিছু ভক্ষণ করা চলবেনা যদি কিছু মাংস খেয়ে থাকে তাহলে যতটুকু খেয়েছে ততটুকুর মূল্য সাদকা করতে হবে। যদি জবেহ করা পশুর মূল্য জীবিত পশুর মূল্য হতে কিছু কম হয়, তাহলে যত পরিমাণ হবে, তত পরিমাণ সাদকা করে দিতে হবে (আলমগিরী ও রদ্দুলমুহতার)।
মাসয়ালা (১৯) – গরীব মানুষ যদি কুরবানী নিয়তে পশু ক্রয় করে থাকে এবং কুরবানী দিন অতিক্রম হয়ে যায় তাহলে ঐ নির্দিষ্ট পশুটি জীবিত অবস্থায় সাদকা করে দিতে হবে। যদি জবেহ করে থাকে তাহলে সমস্ত মাংস সাদকা করতে হবে (রদ্দুলমুহতার)।
মাসয়ালা (২০) – ধনীব্যক্তি কুরবানীর জন্য পশু ক্রয় করলে যদি কোনো কারণে জবেহ করা না হয়ে থাকে তাহলে তা সাদকা করতে হবে। যদি জবেহ করে থাকে তাহলে সমস্ত মাংস সাদকা করতে হবে। যদি ধনী পশু ক্রয় করে না থাকে, তাহলে একটি ছাগলের মূল্য সাদকা করতে হবে (দুররে মুখতার)।
মাসয়ালা (২১) - যদি কোনো ব্যক্তি অসিয়ত করে থাকে যে তার পক্ষ হতে কুরবানী করে দিবে। কিন্ত গরু অথবা ছাগল তা কিছু বলেনি অথবা কত মূল্যের পশু দিতে হবে তাও উল্লেখ করেনি। এমতাবস্থায় অসীয়াত জায়েজ হবে এবং একটি ছাগল কুরবানী করে দিলে অসীয়ত পূর্ণ হয়ে যাবে। (আলমগিরী)
মাসয়ালা (২২) - গরু অথবা ছাগল নির্দিষ্ট না করে কেবল কুরবানী করার মান্নত করলে একটি ছাগল কুরবানী করে দিলে মান্নত পূর্ণ হয়ে যাবে। অনুরূপ ছাগল কুরবানী করার মান্নত করে গরু অথবা উট কুরবানী করলে মান্নত পূর্ণ হয়ে যাবে। (আলমগিরী)
মাসয়ালা (২৩) - কুরবানী মান্নতের হলে সমস্ত মাংস চামড়া প্রভৃতি সাদকা করতে হবে। তা হতে কিছু পরিমাণ খেলে সেইপরিমাণ মূল্য সাদকা করতে হবে। (আলমগিরী)
কুরবানীর ফযীলত ও জরুরী মাসাইল এর ১ম পর্বটি পড়ে নিন
কুরবানীর পশুর বিবরণ
মাসয়ালা (১) – কুরবানী পশু কয়েক প্রকার। যথাঃ উট, গরু, ছাগল। মহিষ গরুর মধ্যে গণ্য। অনুরূপ ভেড়া ও দুম্বা ছাগলের মধ্যে গণ্য। এই সমস্ত পশুর নর ও মাদাহ সবই কুরবানী করা জায়েজ। (আলমগিরী)
মাসয়ালা (২) - জংলি জানোয়ার যথা হরিণ, নীল গাই ইত্যাদি কুরবানী করা জায়েজ নয় (আলমগিরী)।
মাসয়ালা (৩) - জংলি পশু ও পালিত পশুর মিলনে বাচ্চা পয়দা হলে মাতার অবস্থা গ্রহণযোগ্য হবে। যথা হরিণ ও বকরীর মিলনে বাচ্চা পয়দা হলে কুরবানী জায়েজ হবে। কিন্ত বকরা ও হরিণীর মিলনে বাচ্চা পয়দা হলে কুরবানী জায়েজ হবেনা (আলমগিরী)।
মাসয়ালা (৪) – উট পাঁচ বৎসর, গরু দুই বৎসর, ছাগল একবৎসরের না হলে কুরবানী করা জায়েজ হবেনা। দুম্বা অথবা ভেড়ার ছয়মাসের বাচ্চা যদি খুব বড় হয় এবং দেখতে একবৎসর এর মনে হয়, তাহলে কুরবানী জায়েজ হবে। (দুররে মুখতার)
মাসয়ালা (৫) - ছাগলের মূল্য এবং মাংস যদি গরুর সাত অংশের একাংশের সমান হয়, তাহলে ছাগল কুরবানী করা উত্তম হবে। আর যদি গরুর সপ্তমাংশ ছাগলের থেকে বেশী মাংস হয়, তাহলে গরু উত্তম হবে। যখন দুয়ের মাংস ও মূল্য সমান হবে, তখন যার মাংস ভালো হবে, তার কুরবানী করা উত্তম হবে। যদি মাংসের পরিমাণ কমবেশি হয়, তাহলে যার মাংস বেশি হবে তার কুরবানী উত্তম হবে। অনুরূপ মাংস ও মূল্য সমান হলে দুম্বা অপেক্ষা দুম্বী, বকরী (ধাড়ী) অপেক্ষা খাসী, উট অপেক্ষা উটনী ও বলদ অপেক্ষা গাভী কুরবানী করা উত্তম হবে (রুদ্দুল মুহতার)।
কুরবানীর পশুর নিখুঁত হওয়া উচিত
মাসয়ালা (১) - কুরবানীর পশু নিখুঁত হতে হবে। সামান্য খুঁত থাকলে কুরবানী জায়েজ হবে, তবে মাকরুহ হবে। খুব বেশি খুঁত থাকলে আদৌ কুরবানী হবেনা। জন্ম হতে শিং না থাকলে কুরবানী জায়েজ হবে। শিং সামান্য ভেঙে গেলে জায়েজ হবে। কিন্তু শিং গোড়া হতে ভেঙে গেলে জায়েজ হবেনা। যদি পশু পাগল হয়ে যায় এবং চড়ে পানাহার করা ত্যাগ করে থাকে, তাহলে জায়েজ হবেনা। এই প্রকার পাগলামি না হলে জায়েজ হবে (রদ্দুল মুহতার, আলমগিরী)।
মাসয়ালা (২) - যে পশুর অণ্ডকোষ ও লিঙ্গ কেটে নেওয়া হয়েছে সে পশুর কুরবানী জায়েজ হবে। অনুরূপ যে পশুর অত্যন্ত বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছে যে, বাচ্চা হবেনা, যে পশুর দাগ দেয়া হয়েছে, যে পশুর দুধ দেয়া বন্ধ করেছে, এইসমস্ত পশুর কুরবানী জায়েজ। যে পশুর চুলকানি হয়েছে কিন্ত খুব মোটাতাজা রয়েছে, তার কুরবানী জায়েজ। যে পশু অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে গিয়েছে এবং হাড়ের মগজ পর্যন্ত শুকিয়ে গিয়েছে এই প্রকার পশুর কুরবানী জায়েজ নয়। (আলমগিরি ও রদ্দুলমুহতার)।
মাসয়ালা (৩) - অন্ধ পশুর কুরবানী জায়েজ নয়। অনুরূপ কানা পশুর কুরবানী জায়েজ নয়। যে ল্যাংড়া পশু হেঁটে কুরবানীর স্থানে যেতে না পারে, সে পশুর কুরবানী জায়েজ নয়। অনুরূপ খুব অসুস্থ পশুর কুরবানী জায়েজ নয়। যে পশুর কান অথবা লেজ একতৃতীয়াংশর বেশি অথবা তার কম কেটে গেছে তার দ্বারা কুরবানী জায়েজ হবে। যদি জন্ম হতে কান না থাকে, তাহলে কুরবানী জায়েজ হবেনা। কান ছোটো হলে জায়েজ হবে। (হিদায়া ও আলমগিরী)
মাসয়ালা (৪) – যে পশু একতৃতীয়াংশর বেশি দৃষ্টিহীন হয়ে গিয়েছে সে পশুর কুরবানী জায়েজ নয়। দু’চক্ষুর জ্যোতি কম হলে পরীক্ষা করা সহজে সম্ভব। একটি চোখের জ্যোতি কম হলে পরীক্ষা করার নিয়মঃ - পশুটির দুয়েকদিন আহার বন্ধ করে দিবে। তারপর খারাপ চক্ষুটি বন্ধ করে দিবে এবং ভালো চক্ষুটি খুলে রাখবে। বহু দূরে খাদ্য রেখে দিবে, যাতে পশুটি তা দেখতে না পায়। তারপর খাদ্য পশুর দিকে নিকটবর্তী করবে। যেখান থেকে পশু খাদ্য দেখতে পাবে সেখানে চিহ্ন করে রাখবে। এবার ভালো চক্ষুটি বন্ধ করবে এবং খারাপটি খুলে দিবে। তারপর খাদ্য ধীরেধীরে পশুর নিকটে আনতে থাকবে। যেখান থেকে দেখতে পাবে, সেখানে চিহ্ন করে রাখবে। এবার দুইটির স্থান মেপে দেখবে। যদি এইস্থানটি প্রথমস্থানের একতৃতীয়াংশ হয় তাহলে চক্ষুর জ্যোতি একতৃতীয়াংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর যদি অর্ধেক হয় তাহলে অর্ধেক নষ্ট হয়ে গিয়েছে। (হিদায়া)
মাসয়ালা (৫) - যে পশুর দাঁত নেই অথবা যার থানকাটা অথবা শুকিয়ে গিয়েছে সে পশুর কুরবানী জায়েজ নয়। ছাগলের একটি থান শুকিয়ে গেলে কুরবানী জায়েজ হবে। গরু ও মহিষের দুইটি থান শুকিয়ে গেলে কুরবানী নাজায়েজ হবে। নাককাটা পশু অথবা ঔষধের দ্বারা যে পশুর দুধ শুকিয়ে দেয়া হয়েছে অথবা দুই লিঙ্গ বিশিষ্ট হিজড়া পশু অথবা যে পশু অত্যন্ত পেশাব ও পায়খানা খায়, সে পশুর কুরবানী জায়েজ নয় (দুররে মুখতার)।
মাসয়ালা (৬) – ভেড়া অথবা দুম্বার পশম কেটে নিলে কুরবানী জায়েজ হবে। যে পশুর একটি পা কেটে নেওয়া হয়েছে তার কুরবানী জায়েজ নয়। (আলমগিরী)
মাসয়ালা (৭) – পশু ক্রয় করার সময় এমন কোনো দোষ ছিলোনা, যাতে কুরবানী নাজায়েজ হয়ে যায়। কিন্ত পরে পশুর মধ্যে ঐপ্রকার দোষ পাওয়া গিয়েছে। এখন ক্রেতা যদি মালেকে নিসাব (ধনীব্যক্তি) হয়, তাহলে অন্য পশু কুরবানী করবে। ক্রেতা মালিকে নিসাব নাহলে ঐ দোষযুক্ত পশুটি কুরবানী করবে। যদি কোনো গরীব মানুষ কুরবানী মান্নত করে থাকে এবং নির্দোষ পশু ক্রয় করে থাকে, পরে পশুর মধ্যে দোষ পাওয়া গেলে অন্য পশু কুরবানী করতে হবে। (হিদায়া, রদ্দুল মুহতার)
মাসয়ালা (৮) - গরীব মানুষ এমন দোষযুক্ত পশু ক্রয় করেছে, যার কুরবানী জায়েজ নয়। যদি কুরবানীর দিন পর্যন্ত এপ্রকার দোষ থেকে যায় তাহলে গরীব তার কুরবানী করতে পারবে। যদি কোনো ধনীমানুষ দোষযুক্ত পশু ক্রয় করে থাকে এবং কুরবানী দিনপর্যন্ত ঐ প্রকার দোষ থেকে যায়, তাহলে ধনীর জন্য তার কুরবানী জায়েজ হবেনা। দোষযুক্ত পশু ক্রয় করার পর কুরবানী করার পূর্বে যদি পশু নির্দোষ হয়ে যায়, তাহলে গরীব ও ধনী উভয়ের জন্য কুরবানী জায়েজ হবে (দুররে মুখতার ও রদ্দুল মুহতার)।
মাসয়ালা (৯) - যদি কোনো নির্দোষ পশু কুরবানী করার সময় লাফালাফি করার কারণে দোষযুক্ত হয়ে যায়, তাহলে তার কুরবানী জায়েজ হবে (রদ্দুল মুহতার)।
মাসয়ালা (১০) - কুরবানীর পশু মারা গেলে ধনী ব্যক্তির জন্য অন্য পশু কুরবানী করা ওয়াজিব। কিন্ত গরীবের জন্য ওয়াজিব নয় (দুররে মুখতার)।
মাসয়ালা (১১) - ধনী ব্যক্তির কুরবানীর পশু হারিয়ে গিয়েছে অথবা চুরি হয়ে যাবার পর পুনরায় পশু ক্রয় করার পর পশুটি পাওয়া গেলে দুইটির মধ্যে যেকোনো একটি কুরবানী করতে পারে। কিন্ত এই অবস্থা গরীবের হলে দুইটির কুরবানী করা ওয়াজিব হবে (দুররে মুখতার)।
মাসয়ালা (১২) - ধনী ব্যক্তির পশু হারিয়ে যাবার পর পুনরায় পশু ক্রয় করার পর যদি প্রথমটি পাওয়া যায়, তাহলে প্রথমটি কুরবানী করলে তার মূল্য দ্বিতীয়টির অপেক্ষা কম হলে কোনো দোষ নেই। যদি দ্বিতীয়টি কুরবানী করে থাকে এবং তার মূল্য প্রথমটি অপেক্ষা কম হয়, তাহলে যত টাকা কম হবে ততটাকা সদকা করতে হবে। অবশ্য দুইটি কুরবানী করে দিলে কোনো টাকা সাদকা করতে হবেনা (রদ্দুল মুহতার)।
YouTube এ সকল অ্যাসাইনমেন্টের সমধান পেতে আমাদের অফিসিয়াল YouTube চ্যানেলটিতে এখনি সাবস্ক্রাইব করো।
আমাদের চ্যানেলঃ 10 Minute Madrasah
প্রশ্ন প্রকাশ হলে সবগুলো বিষয়ের উত্তর দেওয়া হবে। তাই তোমরা পেজটি সেভ বা বুকমার্ক করে রাখো।
আপডেট পাওয়ার জন্য আমাদের ফেসবুক পেইজে যুক্ত থাকো
আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন।
Join Our Facebook Group
Hi, I am Jabed Hossain from 10 Minute Madrasah. I am an online graver, working as freelancer. This site is only for gathering knowledge process.
Comments 3