প্রশ্নোত্তর: অমুসলিম মেয়েকে বিবাহ্ করা জায়েয কিনা?
[ফতোয়ায়ে রজভীয়া শরীফ: কৃত ইমাম আহমদ রযা ফাযেলে বেরলভী (রাহ.) ইত্যাদি]
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা | বাংলা ২য় পত্র | সকল শ্রেণির জন্য পড়তে ক্লিক করুন।
প্রশ্নোত্তর:
পাগড়ী পরিধান করা শুধু ফরয নামাযের জন্য নির্দিষ্ট নাকি সুন্নাত-নফল নামাযও পাগড়ী পরিধান করা যাবে?
প্রশ্ন: পাগড়ী পরে নামায আদায় করা শুধু ফরয নামাযের জন্য নির্দিষ্ট নাকি সুন্নাত ও নফল নামায পাগড়ী পরে আদায় করলে সওয়াব পাওয়া যাবে কিনা?
উত্তর: পুরুষের জন্য মাথায় পাগড়ী বাঁধা আমাদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর একটি প্রিয় সুন্নাত। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বেশীরভাগ সময় মাথা মুবারকের টুপির উপর পাগড়ী মুবারক বাঁধতেন।
পাগড়ী বাঁধা ছিল প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর স্বভাবগত সুন্নাত।হাদীসে পাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম পাগড়ী বাঁধার জন্য উদ্বুদ্ধও করেছেন। তিনি বলেন-
عليكم بالعمائِمِ فَاِنَّهَا سِيَمَاءُ الملائكة
অর্থাৎ- তোমরা পাগড়ী বাঁধবে, কেননা এটা ফেরেশতাদের প্রতীক।
[বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান, পৃষ্ঠা ৬২৬২] প্রিয়নবী রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম প্রায় সময়, বিশেষ করে পাঞ্জেগানা নামায, সফর, আগত মেহমান ও প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাত,
যুদ্ধ এবং ভাষণ দেয়ার সময় পাগড়ী পরিধান করতেন। তবে গৃহে অবস্থানকালে ও অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়ার সময় পাগড়ী খুলে রাখতেন। অধিকাংশ ফকিহ্গণের দৃষ্টিতে নামাযের সময় পাগড়ী বাঁধা সুন্নাতে মুস্তাহাব্বাহ্।
পাগড়ী ছাড়া নামায পড়লে নামায মাকরূহ হবে না, তবে পাগড়ী সহ নামায আদায় করলে নিঃসন্দেহে সাওয়াব বেশি হবে। যেমন-
صلوة بعمامة تعدل خمسًا وعشرين صلوة بلا عمامةِ
অর্থাৎ- পাগড়ী সহ এক নামায, পাগড়ীহীন (২৫) পঁচিশ নামাযের সমান।
জামেউস্ সগীর-এ হযরত ইমাম মুহাম্মদ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন-
جمعة بعمامة تعدلُ سبعين جمعةً بلاعمامةٍ
অর্থাৎ- পাগড়ী সহ এক জুমার নামায আদায় করা পাগড়ীহীন সত্তর (৭০) জুমার নামায আদায়ের সমান।
উল্লেখ্য যে, পাগড়ীর হাদীসকে অনেকেই সনদের সূত্রে দুর্বল বললেও জাঈফ বা দুর্বল হাদীস আমল করার ক্ষেত্রে মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য।
সুতরাং ফরজ, সুন্নাত ও নফল নামাযসহ প্রত্যেক নামাযে পাগড়ী পরিধান করা অত্যন্ত ফজলিত ও বরকতময় এবং অশেষ সাওয়াব।
প্রশ্ন:
উত্তর: ওজর বা শারীরিক দুর্বলতার কারণে রুকু হতে সাজদায় যাওয়ার সময় এবং সাজদা হতে উঠার সময় হাতের উপর ভর করা মাকরূহ নয়। তবে কোন প্রকারের ওজর বা দুর্বলতা না থাকলে হাতের উপর ভর করবে না। এটাই সুন্নাত তরিকা।
প্রশ্নোত্তর:
এক তরুণী তার বান্ধবীর বাপের সাথে পুরুষের ন্যায় কোলাকুলি করেছে, ইসলামী ফয়সালা কি?
উত্তর: বান্ধবীর পিতা নিজের পিতা নয় বিধায় বান্ধবীর পিতার সাথে কোন মহিলার (প্রাপ্ত বয়স্ক) এভাবে কোলাকুলি করার ইসলামী শরীয়তে অনুমতি নাই। এ ধরনের আচরণ অনেক সময় গুনাহ্-নাফরমানীর দিকে ধাবিত করে- এ জাতীয় অবাধ আচরণে পশ্চিমা দেশে জেনা-নাফরমানী- সীমা অতিক্রম করেছে।
তাই ইসলাম নারী জাতীর মান-সম্মান, ইজ্জত, আবরু রক্ষার জন্য শালীন আচরণ ও পর্দা-পুশিদার বিধান প্রদান করেছে। এটা না বুঝে যদি কোন মহিলা/পুরুষ এ কথা বলে-
‘এই যদি ইসলামের বিধান হয় তবে আমি এ ইসলাম মানি না।’ তাকে প্রথমে ইসলামের আদর্শ মর্মবাণী ও তাহজীব তামাদ্দুন বুঝাতে হবে এবং ইসলাম নারী জাতীর মর্যাদা ও সম্মান কত উচুঁ করেছে তা জানাতে হবে।
তবে কোন মুসলিম নর-নারী জেনে শুনে বুঝে ইসলামকে কটাক্ষ করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের উক্তি করে তখন ঈমান থেকে বের হয়ে যাবে। খালিস নিয়তে পরম করুণাময় আল্লাহ্ তা‘আলার দরবারে লজ্জিত হয়ে তাওবা করতে হবে। নতুবা ঐ ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর মা-বাবার সম্পত্তির মিরাছ/তর্কা পাবে না। এবং মা-বাবা ও ভাই-বোনের সাথে ঈমানী সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।