মহানবী (ﷺ) এর হাদিস শরীফ পর্ব - ১
প্রিয় পাঠক বন্ধু ও প্রিয় ইসলামী ভাই ও বোনেরা , আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ, শুরু করছি মহানবী (ﷺ) এর হাদিস শরীফ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনা "মহানবী (ﷺ) এর হাদিস শরীফ"। তো চলুন শুরু করা যাক -
হাদিস নম্বরঃ ১ | 1 | ۱
১।আবু আবদুর রহমান আবদুল্লাহ ইবনে আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বল বলেনঃ আমাকে আমার পিতা আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বল বিন হিলাল বিন আসাদ তদীয় পুস্তক থেকে জানিয়েছেন এবং বলেছেনঃ আমাকে আবদুল্লাহ বিন নুমায়ের বলেছেন, আমাকে ইসমাঈল (অর্থাৎ খালিদের পিতা) কায়েস থেকে বর্ণনা করেছেন যে, একদিন আবু বাকর (রাঃ) জনসমক্ষে দাঁড়ালেন, আল্লাহর প্রশংসা করলেন, অতঃপর বললেনঃ হে জনগণ! তোমাদের মধ্যে যে কোন ব্যক্তি এ আয়াত পাঠ করে থাকেঃ
কিন্তু আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ “লোকেরা যখন অন্যায় সংঘটিত হতে দেখবে, অথচ তার প্রতিরোধ করবে না, তখন অচিরেই আল্লাহ্ তাদের ওপর সর্বব্যাপী আযাব নাযিল করবেন।” (অর্থাৎ অন্যায়কারী ও অন্যায় সহ্যকারী-সকলেই সেই আযাবে নিপতিত হবে।) [১]
[১]. হুমায়দী, ইবনে আবি শায়বাহ আবদ বিন হুমাইদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, বাযযার, মারওয়ায, আবু ইয়ালা, তাহাবী, ইবনে হিব্বান, বাইহাকী ও বাগাওয়ী নিজ নিজ হাদীস গ্রন্থে এবং আত্তাবারী তদীয় তাফসীরে এ হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন। এর সকল বর্ণনাকারী বিশ্বস্ত। অত্র মুসনাদেও ১৬, ২৯, ৩০ ও ৫৩ নং হাদীসে এর পুনরাবৃত্তি লক্ষণীয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার / গ্রন্থঃ মুসনাদে আহমাদ / অধ্যায়ঃ মুসনাদে আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) [আবু বকরের বর্ণিত হাদীস] (مسند أبي بكر)
হাদিস নম্বরঃ ২ | 2 | ۲
[১] তায়ালিসী, হুমাইদী, ইবনে আবী শাইবা, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, বাযযার, আবু ইয়ালা, আত-তাবারী, উকাইলী, মারওয়াযী, ইবনু হিব্বান, তাবারানী, তুম্মাম, আবু নাঈম, বাগাওয়ী ও ইবনে আবি হাতেম নিজ নিজ হাদীস গ্রন্থে এ হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন। মুসনাদে আহমাদেও ৪৭ ও ৪৮ নং হাদীসে এর পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার / গ্রন্থঃ মুসনাদে আহমাদ / অধ্যায়ঃ মুসনাদে আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) [আবু বকরের বর্ণিত হাদীস] (مسند أبي بكر)
ফজিলত পূর্ণ দরুদ , "দুরুদে তাজ" পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
হাদিস নম্বরঃ ৩ | 3 | ۳
“আমরা রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে বের হলাম। পুরো একদিন ও একরাত বাহক জন্তুটিকে দ্রুত গতিতে চালাতে লাগলাম। যখন দুপুর হলো, চারদিকে তাকিয়ে খুঁজতে লাগলাম, কোথাও একটু ছায়া পাওয়া যায় কিনা যার নিচে আমরা আশ্রয় নিতে পারি। একটু পরে একটা ছোট পাহাড় দেখেই সেদিকে ছুটে গেলাম। দেখলাম তার ছায়ার কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে। তাই আমি সেই ছায়াটুকুতেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবস্থানের ব্যবস্থা করলাম এবং একটি পশুর চামড়া তাঁকে বিছিয়ে দিলাম। তারপর আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি এখানে শুয়ে পড়ুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুয়ে পড়লেন। এরপর আমি বেরিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখতে লাগলাম, আমাদের তালাশ করছে এমন কাউকে দেখা যায় কিনা।
সহসা দেখলাম, আমার কাছেই একজন রাখাল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে কিশোর, তুমি কার মেষপাল চরাও? সে বললোঃ কুরাইশের এক ব্যক্তির। সে ঐ ব্যক্তির নাম বললো এবং আমি তাকে চিনলাম। আমি বললামঃ তোমার মেষপালে কি দুধ আছে? সে বললোঃ আছে। আমি বললামঃ তুমি কি আমার জন্য একটু দুধ দুইয়ে দেবে? সে বললোঃ দেব। অতঃপর আমি তাকে একটা ছাগল বাঁধতে আদেশ দিলে সে একটা ছাগল বাঁধলো। তারপর আমি তার স্তন থেকে ধুলো মুছতে আদেশ দিলে সে তা মুছে ফেললো। তারপর আমি বললামঃ তোমার দুই হাতের তালুর ধুলো মুছে ফেল। সে মুছে ফেললো। আমার কাছে একটা পাত্র ছিল- যার মুখ ন্যাকড়া দিয়ে ঢাকা ছিল। রাখাল আমার জন্য বেশ খানিকটা দুধ দোহালো।
অতঃপর আমি পেয়ালায় পানি ঢেলে তার তলা ঠাণ্ডা করলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলাম এবং তাকে জাগ্রত অবস্থায় পেলাম। বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! দুধ পান করুন। তিনি পান করলেন এবং তা দেখে আমি তৃপ্তি বোধ করলাম।
তারপর বললামঃ এখন কি রওনা হবার সময় হয়েছে? অতঃপর আমরা রওনা হলাম। তখনো কুরাইশের লোকেরা আমাদের তালাশ করছিল। তাদের মধ্য থেকে একজন ঘোড় সওয়ার সুরাকা ইবনে মালিক আমাদেরকে দেখে ফেললো। আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, ঐ যে একজন সন্ধানকারী আমাদের সন্ধান পেয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ দুশ্চিন্তা করো না। আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। সুরাকা আমাদের দিকে আরো এগিয়ে এল এবং এত কাছে এল যে, আমাদেরও তার মধ্যে একটা, দুইটা বা তিনটে বর্শার ব্যবধান ছিল। আমি আবার বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই যে সন্ধানকারীরা আমাদের সন্ধান পেয়ে গেছে। আমি কেঁদে ফেললাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কাঁদছ কেন? আমি বললামঃ আল্লাহর কসম!
আমি নিজের জন্য কাঁদছিনা। আমি শুধু আপনার জন্য কাঁদছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুরাকার বিরুদ্ধে এই বলে বদদেয়া করলেন- اللهُمَّ اكْفِنَاهُ بِمَا شِئْتَ “হে আল্লাহ, তুমি যেভাবে চাও, ওকে প্রতিহত করতে যথেষ্ট হয়ে যাও।”
সঙ্গে সঙ্গে তার ঘোড়ার পাগুলো কঠিন মাটিতে তার পেট পর্যন্ত দেবে গেল। সুরাকা তার পিঠের ওপর থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়লো। অতঃপর সে বললোঃ হে মুহাম্মাদ, আমি বুঝেছি, এটা তোমার কাজ। সুতরাং তুমি আল্লাহর কাছে দু’আ কর। যেন আমি যে দুর্দশায় পতিত হয়েছি, তা থেকে তিনি আমাকে নিষ্কৃতি দেন। আল্লাহর কসম! আমার পেছনে অন্য যারা তোমার অনুসন্ধান করছে, তাদের কাউকে আমি তোমাদের খবর জানাবো না। এই যে আমার তীর ধনুক।
এখান থেকে একটা তীর নিয়ে নাও। তুমি অমুক জায়গা দিয়ে যাওয়ার সময় আমার উট ও মেষপাল পাবে। সেখান থেকে যে কটা দরকার নিয়ে নিও। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওগুলোর আমার প্রয়োজন নেই।
এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুরাকার জন্য দু’আ করলেন। সে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেল এবং তার দলবলের কাছে ফিরে গেল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলতে লাগলেন। আমিও তার সাথে চলতে লাগলাম। অবশেষে মদীনায় পৌছলাম।
মদীনাবাসী রাস্তায় নেমে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অভ্যর্থনা জানালো। রাস্তায় শিশু কিশোররা প্রবল ভীড় জমিয়ে ধ্বনি তুললোঃ “আল্লাহু আকবার, রাসূলুল্লাহ এসেছেন, মুহাম্মাদ এসেছেন”। এরপর মদীনাবাসী প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে গেল কে আগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেহমানদারী করবে তা নিয়ে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- আজকের রাতটা আবদুল মুত্তালিবের মামাবাড়ি বনু নাজ্জারদের বাড়িতে কাটিয়ে তাদেরকে সম্মানিত করবো। পরদিন সকালে যে দিকে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ পেলেন সেদিকে রওনা হলেন।
বারা বিন আযিব বলেনঃ আমাদের কাছে প্রথম হিজরাত করে যিনি এলেন, তিনি ছিলেন বনু আবদুদ্দারের মুসয়াব বিন উমাইর। তারপর বনু ফিহরের অন্ধ ইবনে উম্মে মাকতুম।
তারপর বিশজন আরোহীসহ উমার ইবনুল খাত্তাব। আমরা উমারকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথায়? তিনি বললেন, তিনি আমার পরে আসছেন। এরপরই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবু বাকর এলেন, তখন আমি কয়েকটি লম্বা সূরা মুখস্থ করে ফেলেছি। বর্ণনাকারী ইসরাইল বলেছেনঃ বারা ছিলেন বনু হারেসা নামক আনসার গোত্রের লোক।
[বুখারী, ৩৬১৫, মুসলিম, ২০০৯, ইবনু হিব্বান ২৬৮১, বুখারী এটিকে সহীহ সাব্যস্ত করেছেন।]
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
পাবলিশারঃ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার / গ্রন্থঃ মুসনাদে আহমাদ / অধ্যায়ঃ মুসনাদে আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) [আবু বকরের বর্ণিত হাদীস] (مسند أبي بكر)
আল্লাহ আমাদের সবাইকে প্রিয় নবীজি হযরত মুহাম্মদ দঃ এর জীবনাদর্শ আমাদের জীবনে অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন আমিন।
আরও পড়ুন.........
- 10 Minute Madrasah ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- 10 Minute Madrasah ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- 10 Minute Madrasah ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে 10 Minute Madrasah সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- 10 Minute Madrasah সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.10minutesmadrasah.com সাইট।
- 10 Minute Madrasah ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- 10 Minute Madrasah ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- 10 Minute Madrasah ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে 10 Minute Madrasah সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- 10 Minute Madrasah সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.10minutesmadrasah.com সাইট।