মেট্রোরেল রচনা ( বাংলা ২য় পত্র) সকল শ্রেণির জন্য


মেট্রোরেল রচনা সকল শ্রেণির জন্য  ( বাংলা ২য় পত্র)

মেট্রোরেল রচনা সকল শ্রেণির জন্য  ( বাংলা ২য় পত্র)

Metro Rail  Essay And Composition For All Classes 

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশা করি তোমরা ভাল আছো । তো আজকে তোমাদের জন্য নিয়ে এলাম মেট্রোরেলের উপর রচনা । এই রচনা তোমরা যারা এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাদের অনেক কাজে লাগবে । তো তোমাদের ভাল লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে Facebook messenger, Whatsapp,Telegram,Instagram এবং IMO তে শেয়ার করতে পারো।

মেট্রোরেল রচনা

_________________________________________________________________________

ভূমিকা :

 বর্তমানে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত ও সহজ মাধ্যম হলো মেট্রোরেল। গবেষকদের ধারণা, এটি পুরো ঢাকার ট্রাফিক সমস্যা কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে। ঢাকা বিশ্বের জনবহুল মেগা সিটিগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাই এই শহরের ট্রাফিক সমস্যা নিরসনের জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে আগে, থেকেই মেট্রোরেল চালু রয়েছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ট্রাফিক সমস্যা কমিয়ে আনার জন্য সরকার ২০১২ সালে মেট্রোরেল নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় । মেট্রোরেল প্রকল্প ঢাকাবাসীর জন্য অতীব প্রয়োজন ।

মেট্রোরেল কী : 

ঢাকা মেট্রোরেল ব্যবস্থাকে ম্যাস র‍্যাপিড ট্রান্সপোর্ট সংক্ষেপে MRT বলা যেতে পারে। এটি মূলত দ্রুতগামী, সুবিধাজনক, স্বাচ্ছন্দ্যময় নগরকেন্দ্রিক একটি পরিবহণ। এটি বিদ্যুৎচালিত যানবাহন ।

প্রকল্প বর্ণনা : 

ঢাকা মহানগরী ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে ও পরিবেশ উন্নয়নে অত্যাধুনিক গণপরিবহণ হিসেবে ৬টি মেট্রোরেল সমন্বয়ে Dhaka Mass Transit Company Limited (DMTCL)-এর অধীনে মোট ১২৮.৭৪১ কিমি (উড়াল ৬৭.৫৬৯ কিমি ও পাতাল ৬১.১৭২ কিমি) দীর্ঘ ও ১০৪টি স্টেশন (উড়াল ৫১টি ও পাতাল ৫৩টি) বিশিষ্ট একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা ২০৩০ গ্রহণ করেছে ।

ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম ১৫০+ ভাবসম্প্রসারণ তালিকা

মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ও সম্ভাব্যতা :

১. এমআরটি লাইন-৬ বা বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল : এটি ২০.১০ কিমি দীর্ঘ হবে। প্রায় ২২,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তরা ৩য় পর্ব থেকে মতিঝিল পর্যন্ত (Mass Rapid Transit (MRT) Line-6) রাজধানীর প্রথম উড়াল মেট্রোরেল নির্মাণের সার্বিক অগ্রগতি ৫৫.১৯%। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব হতে আগারগাঁও অংশের কাজের অগ্রগতি ৭৮.৩৮%। দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও হতে মতিঝিল অংশের কাজের অগ্রগতি ৪৯.৪৭% ।

২. এমআরটি লাইন-১ বা বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল : এটি ৩১.২৪১ কিমি দীর্ঘ। MRT Line-1 দুটি ভাগে বিভক্ত। যথা- i. বিমানবন্দর, ii. পূর্বাচল ।

i. বিমানবন্দর বিমানবন্দর রুটের মোট দৈর্ঘ্য ১৯.৮৭২ কিমি এবং মোটা পাতাল স্টেশনের সংখ্যা ১২টি। এ রুটেই বাংলাদেশের প্রথম পাতাল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে।

1. পূর্বাচল : পূর্বাচল রুটের দৈর্ঘ্য ১১.৩৬৯ কিমি। সম্পূর্ণ অংশ উড়াল এবং স্টেশন সংখ্যা ৯টি। এর মধ্যে ৭টি হবে উড়াল স্টেশন।

৩. এমআরটি লাইন-৫; নর্দার্ন রুট : ২০২৮ সালের মধ্যে হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত পাতাল ও উড়াল সমন্বয়ে ২০ কিমি দীর্ঘ মেট্রোরেলের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে পাতাল ১৩.৫০ কিমি ও উড়াল ৬.৫০ কিমি। এতে ১৪টি স্টেশন (পাতাল ৯টি ও উড়াল ৫টি) রাখার পরিকল্পনা আছে। এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। আর নকশা পরিকল্পনা ও জরিপের কাজ চলমান আছে।

৪. এমআরটি লাইন-৫; সাউদার্ন রুট : ২০৩০ সালের মধ্যে গাবতলী হতে দাশেরকান্দি পর্যন্ত উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে ১৭.৪০ কিমি দীর্ঘ এবং ১৬টি স্টেশন বিশিষ্ট মেট্রোরেলের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। পাতাল ১২.৮০ কিমি ও উড়াল ৪.৬০ কিমি। এতে মোট ১৬টি স্টেশন থাকবে। ৪টি উড়াল ও ১২টি পাতাল স্টেশন।

৫. এমআরটি লাইন-২ : ২০৩০ সালের মধ্যে গাবতলী হতে চট্টগ্রাম রোড পর্যন্ত উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে প্রায় ২৪ কিমি দীর্ঘ G2G ভিত্তিতে PPP পদ্ধতিতে MRT Line-2 নির্মাণের জন্য জাপান ও বাংলাদেশ সরকার সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর সম্পাদন করেছে।

৬. এমআরটি লাইন-৪ : ২০৩০ সালের মধ্যে PPP পদ্ধতিতে কমলাপুর-নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে ট্র্যাকের পাশ দিয়ে প্রায় ১৬ কিমি দীর্ঘ উড়াল মেট্রোরেল হিসেবে এমআরটি লাইন-৪ নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মেট্রোরেলের উপকারিতা : মেট্রোরেল চালু হলে এর বহুবিধ সুবিধা জনগণ উপভোগ করবে। যেমন-

ক. যানজট নিরসন: 

ঢাকায় বর্তমানে ১.৭০ কোটির বেশি লোক আছে। এই লোকসংখ্যা ঢাকার আয়তনের তুলনায় অনেক বেশি। তাই স্বভাবতই যানজট সমস্যা এখানে নিত্যসঙ্গী। মেট্রোরেল প্রকল্প ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহণ করবে বলে যানজট অনেকটা কমবে বলে আশা করা যায়।

খ. সময়ের অপচয় রোধ: 

সময় অনুযায়ী কর্মস্থলে পৌঁছতে না পারা ঢাকাবাসীর প্রধান সমস্যা। মেট্রোরেল প্রতিটি।

স্টেশনে মাত্র ৪০ সেকেন্ড দাঁড়াবে। তাই সকলে নির্ধারিত সময়ে যার যার কর্মস্থলে পৌঁছতে পারবে।

গ. চলাফেরা সহজ হবে : 

জনসংখ্যার তুলনায় ঢাকায় যানবাহনের সংখ্যা খুব কম। লোকজন গণপরিবহণে ঠাসাঠাসি করে যাতায়াত করে। বৃদ্ধ, শিশু, প্রতিবন্ধী, নারীদের জন্য এভাবে চলাফেরা করা খুবই কষ্টকর। মেট্রোরেল যথাসময়ে অনেক যাত্রী পরিবহণ করবে বলে জনগণের চলাফেরা সহজ হবে।

ঘ. মনোরম ও পরিচ্ছন্ন ঢাকা : 

মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অকেজো যানবাহন কমে আসবে। যত্রতত্র যানবাহনের জট থাকবে না। পরিকল্পনা অনুযায়ী যানবাহন চলাচল করবে। যাত্রীরা নির্ধারিত স্থান থেকে ওঠানামা করবে। ফলে একটি মনোরম ও পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়ে উঠবে। রেলের ধারাবাহিক চলাচল মনোরম দৃশ্য ধারণ করবে। বিশ্ববাসীর নিকট আর ঢাকা অপরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে পরিচিতি পাবে না। বিদেশিরা বিনিয়োগে আগ্রহী হবে।

৫. অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালীকরণ : প্রকল্পটি ঢাকাবাসীর পরিবহণ খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনবে। এই প্রকল্প থেকে রাষ্ট্রেরও ব্যাপক আয় হবে। অপচয় রোধ হবে, দেশের জিডিপি বাড়বে।


১৫০ টি গুরুত্বপূর্ণ বাগধারা SSC, HSC ও চাকরির পরীক্ষার্থীদের জন্য

উপসংহার : 

ঢাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব অন্যান্য শহরের তুলনায় অনেক বেশি। তাই বাড়তি জনসংখ্যার চাপ মোকাবিলার জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রতি ৪ মিনিট পরপর একটি ট্রেন ১৮০০ জন যাত্রী পরিবহণ করবে। ফলে ট্রাফিক জ্যাম দ্রুত কমে আসবে । পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব নগরী হিসেবে ঢাকা বিশ্বে পরিচিতি পাবে।

পড়াশোনার সকল প্রকার সাজেশন পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad