বর্গ কাকে বলে ও বর্গক্ষেত্র কাকে বলে | উদাহরণসহ

বর্গ কাকে বলে ও বর্গক্ষেত্র কাকে বলে | উদাহরণসহ | What is square called?


বর্গ কাকে বলে ও বর্গক্ষেত্র কাকে বলে

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকের পাঠে আমরা জান বর্গ এবং বর্গক্ষেত্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য । বর্গ কি এবং বর্গক্ষেত্র কি তা জানতে আজকের পোস্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখুন । আর একটি ভিডিওসহ দেওয়া আছে যাতে আপনার বুঝতে সুবিধা হয় ।


বর্গ কাকে বলে

কোন চতুর্ভুজের চারটি বাহু ও চারটি কোণ পরস্পর সমান হলে তাকে বর্গ বলে। অর্থাৎ যে চর্তুভুজের প্রতিটা বাহু এবং কোণ সমান তাকেই বর্গ বলে । বর্গ একটি সুষম ও সমকোণী চতুর্ভুজ।

বর্গের আরো সংজ্ঞা : যে চতুর্ভুজের চারটি বাহুই পরস্পর সমান ও সমান্তরাল এবং কোনগুলো সমকোণী তাকে বর্গক্ষেত্র বলা হয়। এছাড়াও আয়তক্ষেত্রের দুটি সন্নিহিত বাহু সমান হলে তাকে বর্গ বলে।


বর্গ দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রকে বর্গক্ষেত্র বলে। মূলতঃ বর্গক্ষেত্র দ্বারা বর্গের ক্ষেত্রফলকে বুঝায়। বর্গক্ষেত্র একটি সমবাহু চতুর্ভুজ; কারণ এর চারটি বাহু পরস্পর সমান। আবার এটি একটি সমকোণী চতুর্ভুজ; কারণ এর সবগুলো কোণ পরস্পর সমান এবং প্রত্যেকটি কোণের পরিমাপ এক সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রী।


একটি বর্গক্ষেত্রের সমান বাহু ও কোণ চিত্র

একটি বর্গক্ষেত্রের সমান বাহু ও কোণগুলো

বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বর্গক্ষেত্রটিকে দুইটি সর্বসম ত্রিভুজে বিভক্ত করে এবং এই ত্রিভুজ দুইটির প্রতেকেই সমকোণী ত্রিভুজ। বর্গক্ষেত্র একটি বিশেষ ধরণের আয়তক্ষেত্র, যে আয়তক্ষেত্রের চারটি বাহু পরস্পর সমান।


বর্গক্ষেত্রের সূত্র

সাধারণত, বর্গক্ষেত্রের যেসব সূত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা হয় তা নিচে দেওয়া হলো।

  • বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র
  • বর্গক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সূত্র
  • বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র
  • বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা

বর্গক্ষেত্রের বাহুগুলোর সমষ্টিকে বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা বলে। সুতরাং, বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা বলতে এর চতুর্দিকের দৈর্ঘ্যকে বুঝায়। আবার বর্গক্ষেত্রের চারটি বাহুর দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান, তাই এর একটি বাহুর দৈর্ঘ্যেকে চার দ্বারা গুণ করলে পরিসীমা পাওয়া যায়।


বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

মনেকরি ABCD বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য AB = BC = CD = AD = a এবং পরিসীমা P.

সুতরাং বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র হবে,

P = (AB + BC + CD + AD) একক

বা, P = (a + a + a + a) একক

∴ P = 4a একক

সুতরাং, বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা = 4×a একক

বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং পরিসীমা P হলে,

P = 4a একক

বর্গক্ষেত্রের কর্ণ

বর্গক্ষেত্রের বিপরীত শীর্ষ বিন্দু দুইটির সংযোজক রেখাংশকে বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বলে। আর এই রেখাংশের দৈর্ঘ্যকে বর্গক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য বলে। বর্গক্ষেত্রের যেকোন কর্ণ বর্গক্ষেত্রটিকে দুইটি সর্বসম ত্রিভুজে বিভক্ত করে। আবার এই ত্রিভুজ দুইটির প্রত্যেকটিই সমকোণী ত্রিভুজ এবং প্রত্যেকটি ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল বর্গক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফলের অর্ধেক। বর্গক্ষেত্রের কর্ণ দুইটির দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান। এছাড়া, বর্গক্ষেত্রের একটি কর্ণ অপর কর্ণকে সমকোণে সমদ্বিখণ্ডিত করে।

বর্গক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সূত্র

মনেকরি, একটি বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং কর্ণ d. আবার a, a এবং d বাহু তিনটি দ্বারা যে ত্রিভুজ গঠিত হয় তা একটি সমকোণী ত্রিভুজ যেখানে ত্রিভুজটির অতিভুজ d এবং ভুমি ও লম্ব উভয়ই a ও a. সুতরাং, পিথাগোরাসের উপপাদ্য অনুসারে

d² = a² + a²

বা, d² = 2a²

বা, d = √2a²

বা, d = a√2

বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং কর্ণ d হলে,d = a√2

বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল সূত্র

বর্গক্ষেত্রের একটি বাহুর দৈর্ঘ্যকে বর্গ করলে বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল পাওয়া যায়। বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল বলতে বুঝায় বর্গক্ষেত্রটি দ্বারা কতটুকু জায়গা আবদ্ধ অর্থাৎ সমতলের কতটুকু জায়গা এই বর্গক্ষেত্রটি দখল করে আছে। ক্ষেত্রফল দ্বিমাত্রিক জ্যামিতির অন্তর্গত। এতএব বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দ্বারা গঠিত। তাই স্মরণ রাখা দরকার - ক্ষেত্রফল হলো সমতলের জায়গা মাত্র। তাই ক্ষেত্রফল পরিমাপে উচ্চতার সংশ্লিষ্টতা নেই।


বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র

আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্যকে প্রস্থ দ্বারা গুণ করলে আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল পাওয়া যায়। যেহেতু সব বর্গক্ষেত্রই এক একটি আয়তক্ষেত্র, তাই এর বাহুর দৈর্ঘ্যকে আরেক বাহুর দৈর্ঘ্য দ্বারা গুণ করলে ক্ষেত্রফল পাওয়া যায়।


সুতরাং বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল= (দৈর্ঘ্য × দৈর্ঘ্য) বর্গএকক

একটি বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং ক্ষেত্রফল A হলে,

A = a × a বর্গএকক

∴ A =  বর্গএকক

বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং ক্ষেত্রফল A হলে,

A =  বর্গএকক


বর্গক্ষেত্রের বৈশিষ্ট্য

১। বর্গক্ষেত্রের সকল বাহু সমান হয়।

২। বর্গক্ষেত্রের প্রত্যেকটি কোন সমকোন হয় অর্থাৎ প্রত্যের কোনের পরিমান ৯০ ডিগ্রি।

৩। বর্গক্ষেত্রের কর্ণদ্বয় পরস্পর সমান হয়।

৪। বর্গক্ষেত্রের কর্ণদ্বয় পরস্পরকে সমকোনে সমদ্বিখন্ডিত করে।




বর্গক্ষেত্র থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন

১। আয়তক্ষেত্রের সন্নিহিত বাহুদ্বয় সমান হলে তাকে কি বলে।


(ক) আয়তক্ষেত্র

(খ) বর্গক্ষেত্র

(গ) রম্বস

(ঘ) ট্রাপিজিয়াম

উত্তর: (খ) বর্গক্ষেত্র


২। একটি বর্গক্ষেত্রের এক বাহুর দৈর্ঘ্য a হলে এর ক্ষেত্রফল কত?

(ক)  বর্গমিটার

(খ)  মিটার

(গ) a বর্গমিটার

(ঘ) a*a মিটার

উত্তর:- (ক)  বর্গমিটার


৩। একটি বর্গাকৃতি বাগানের ক্ষেত্রফল ১ হেক্টর। বাগানটির পরিসীমা কত মিটার।


(ক) ২০০ মিটার

(খ) ৩০০ মিটার

(গ) ৪০০ মিটার

(ঘ) ৪৫০ মিটার

উত্তর: (গ) ৪০০ মিটার


বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল ও পরিসীমা নির্ণয়ের পদ্ধতি

মনে কর, একটা বর্গাকার বাগানের প্রতিটি বাহুর মাপ 10 মিটার। তাহলে চারপাশে বেড়া দিলে বা হাঁটতে কতটা পথ চলতে হবে, এমন প্রশ্নর উত্তর দেবে, (4 × 10) বা 40 মিটার। কারণ বর্গক্ষেত্রের প্রতিটা দিক 10 মিটার।

তাহলে, পরিসীমা হল : 10 মিটার + 10 মিটার + 10 মিটার + 10 মিটার = 40 মিটার। এটাই হ'ল পরিসীমা। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র একক অর্থাৎ এখানে মিটার শব্দটি জুড়ে হবে।

আবার, ঐ বর্গের ভিতরে বাঁধাই করবে । তাহলে, এটা হবে ক্ষেত্রফলের উদাহরণ। সেক্ষেত্রে উত্তর হবে : 10 মিটার × 10 মিটার = 100 বর্গ মিটার। ক্ষেত্রফলে বর্গ একক, এখানে বর্গ মিটার


বর্গ ক্ষেত্র এর ক্ষেত্রফল এবং পরিসীমার পার্থক্য হলো

বর্গক্ষেত্রের একটি বাহুর দৈর্ঘ্যকে বর্গ করলে বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল পাওয়া যায়। বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল বলতে বুঝায় বর্গক্ষেত্রটি দ্বারা কতটুকু জায়গা আবদ্ধ অর্থাৎ সমতলের কতটুকু জায়গা এই বর্গক্ষেত্রটি দখল করে আছে। ক্ষেত্রফল দ্বিমাত্রিক জ্যামিতির অন্তর্গত। এতএব বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দ্বারা গঠিত।

অপরদিকে, বর্গের চার বাহুর দৈর্ঘ্যের সমষ্টিকে বর্গের পরিসীমা বলে। বর্গের বাহুর সংখ্যা চার এবং বাহুগুলোর দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান। ফলে, বর্গক্ষেত্র হলো চার বাহুবিশিষ্ট একটি সুষম বহুভুজ যার প্রত্যেকটি কোণ এক সমকোণ। তাই একটি বাহুর দৈর্ঘ্যকে চার দ্বারা গুণ করলে বর্গের পরিসীমা পাওয়া যায়।


২৫ এর বর্গমূলের বর্গমূল কত?

আমরা জানি , ৫x ৫ = ২৫ , কাজেই ২৫ এর বর্গমূল ৫ । কাজ : কয়েকটি বর্গসংখ্যার বর্গমূলের তালিকা তৈরি কর ।


২৪৩৩৬ সংখ‍্যাটি বর্গমূল কত অঙ্ক বিশিষ্ট?

আমাদের বিভিন্ন কম্পেটেইটিভ পরীক্ষায় খুবই কম সময়ে আমাদের অংকের সমাধান করতে হয় , সেক্ষেত্রে আমাদেরকে কৌশল অবলম্বন করতে হবে না হলে যথাসময় উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে না । 

মুখে মুখে করতে গেলে, সমস্ত এক এবং দুই অংকের সংখ্যাগুলির বর্গ মনে রাখলেই হবে।

প্রদত্ত সংখ্যাটির শেষ দুটি অংক হল বর্গমূলের শেষ অংকের বর্গ। এক্ষেত্রে 36 হল 6 এর বর্গ।

সুতরাং, বর্গমূলের শেষ অংকটি হল 6।

বাকী রইল 243।

দেখুন,  ১৫ এর বর্গ হল = ২২৫

আবার, ১৬ এর বর্গ হল = ২৫৬

তো আমাদেরকে যেটা ছোট সেটাই নিতে হবে, সেক্ষেত্রে আমরা নিব ১৫ এর বর্গ বা ২২৫

সুতরাং, বর্গমূলের শেষ অংক 6 এর আগে 15 বসবে ।

সুতরাং, বর্গমূলটি 156।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad