হযরত আলী ও মুয়াবিয়া (রাঃ) মতানৈক্য ইজতিহাদী The disagreement between Hazrat Ali and Muawiya (ra) is ijtihadi

হযরত আলী ও মুয়াবিয়া (রাঃ) মতানৈক্য ইজতিহাদী

 

হযরত আলী ও মুয়াবিয়া (রাঃ) মতানৈক্য ইজতিহাদী

-মুফতী সৈয়্যদ মুহাম্মদ অসিয়র রহমান


ইসলামের ইতিহাসে মাওলা আলী শের-ই খোদা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ছিলেন একাধারে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা’র জামাতা,খোলাফা-ই রাশিদীনের অন্যতম,বিশিষ্ট সাহাবী,বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ,সুদক্ষ শাসক এবং সুনিপুণ রণকৌশলী ।

আর হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুও ছিলেন অহী লিখক এবং দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ বিশিষ্ট সাহাবী।ব্যক্তিত্ব ও কর্মদক্ষতার বলে তিনি প্রায় ৪০ বছর যাবৎ একাধিক পদে ক্ষমতার মসনদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।হযরত মাওলা আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর ওফাতের ৬মাস পর তিনি মুসলিম জগতের একচ্ছত্র অধিপতি ও প্রথম সুলতান হিসেবে শাসনভার পরিচালনা করেন । উল্লেখ্য, এ ছ’মাস হযরত হাসান রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর স্থলাভিষিক্ত হন।এরপর তিনি হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র অনুকূলে খিলাফতের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি গ্রহণ করেন ।

তখনকার জীবিত সাহাবী ও তাবে’ঈনের মধ্যে কেউ তাঁর শাসনের বিরোধিতা করেননি । কিন্তু তিক্ত হলেও সত্য যে,চৌদ্দশ’ বছর পর শিয়া,রাফেজী,শিয়া সম্প্রদায়ের দোসরগণ এবং আবুল আ’লা মওদুদী ইত্যাদি ভ্রান্ত মতবাদের অনুসারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হযরত মাওলা আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু ও আমীরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা’র মধ্য যে ইজতিহাদী মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়,তার যথাযথ ও সঠিক বিশ্লেষণ না করে সত্যের মাপকাঠি সাহাবা-ই কিরামের সমালোচনায় উঠেপড়ে লেগে যায় । 

ক্ষেত্র বিশেষে তারা এমন সব আষাঢ়ে গল্পের অবতারণা করে,যা বিবেকবান মানুষকেও নাড়া দেয়। ইতিহাসের বর্নিল পাতায় হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ও আমীর মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর মধ্যে মতানৈক্য এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যার সঠিক সমাধান অনুসন্ধান করা ও জানা প্রত্যেকের জন্য জরুরি। প্রথমে সম্মানিত সাহাবা-ই কেরামের শান-মান ও মর্যাদা সর্ম্পকে কিছুটা আলোকপাত করা যাক ।


কোরআনের আলোকে সাহাবা-ই কেরামের মর্যাদা:মহান আল্লাহ পাক প্রিয় নবী রসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র প্রিয় সহচর সাহাবা-ই কেরামকে যে মযার্দার আসনে আসীন করেছেন,পৃথিবীর ইতিহাসে তা সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।  বহু আয়াত ও হাদীস শরীফ দ্বারা তাঁদের মযার্দা প্রকাশ পায় । নিম্নে কতিপয় আয়াত উপস্থাপনের প্রয়াস পাচ্ছি ।


▶মহান মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন –


 لَا يَسْتَوِي مِنكُم مَّنْ أَنفَقَ مِن قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ أُوْلَئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِّنَ الَّذِينَ أَنفَقُوا مِن بَعْدُ وَقَاتَلُوا وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَى


অর্থাৎ,তোমাদের মধ্যে সমান নয় ঐসব লোক যারা মক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় ও জিহাদ করেছে, তারা মর্যাদায় ঐসব লোক অপেক্ষা বড়, যারা মক্কা বিজয়ের পর আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় ও জিহাদ করেছে এবং তাদের সবার সাথে আল্লাহ জান্নাতের ওয়াদা করেছেন ।  [সূরা হাদীদঃ আয়াত ১০]


وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا كَمَا آمَنَ النَّاسُ قَالُوا أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاءُ ۗ أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاءُ وَلَٰكِنْ لَا يَعْلَمُونَ


▶ অর্থাৎ, যখন তাদেরকে বলা হয়, ঈমান আন,যেমন অপরাপর লোকেরা ঈমান এনেছে’, তখন তারা বলে আমরা কি নির্বোধদের মত ঈমান আনব? শুনছো ! তারাই হলো নির্বোধ, কিন্তু তারা জানেনা । [সূরা বাকারাঃ আয়াত ১৩]


এ আয়াতে এটাই বলা হয়েছে যে, যার ঈমান সাহাবা-ই কেরামের ঈমানের মত নয়, সে মুনাফিক এবং বড় বোকা । এ আয়াতসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কোন সাহাবী ফাসিক বা কাফির হতে পারেন না এবং সকল সাহাবীর জন্য আল্লাহ তা’আলা জান্নাতের ওয়াদা করেছেন । 

এটাও প্রমাণিত হল যে, নেক্‌কার বান্দাদের মন্দ বলা মুনাফিকদের কুপ্রথা । যেমন-রাফেযী (শিয়া) সম্প্রদায় সাহাবা-ই কেরামকে খারেজীগণ ‘আহলে বায়তকে, গা্য়রে মুক্বাল্লিদগণ ইমাম আবু হানিফাকে এবং ওহাবীগণ আল্লাহর প্রিয় ওলীদেরকে মন্দ বলে।

ইয়াজিদকে খলিফা বানানোর কারণ












একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad