মূত্রথলির ক্যানসারের এই লক্ষণগুলো জানা আবশ্যক !
স্বাস্থ্য সচেতনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা মানব সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য সচেতনতা বোঝার মাধ্যমে, একজন ব্যক্তি তার শরীরের স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিশেষজ্ঞের সাহায্য চাইতে পারেন এবং তার সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন।
স্বাস্থ্য সচেতনতা ছাড়া, মানুষ সঠিকভাবে তাদের শরীরের সমস্যাগুলির সম্পর্কে জানতে এবং সমাধান করতে পারে না। এছাড়াও, স্বাস্থ্য সচেতনতা ছাড়া, মানুষ সম্পূর্ণ সুস্থ থাকতে পারে না এবং তাদের ইচ্ছামতো জীবন পরিচালনা করতে পারে না।তাই স্বাস্থ্য সচেতনতা সমাজের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে ফিট রাখতে অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের পরিবেশ তৈরি করতে স্বাস্থ্য সচেতনতা অপরিহার্য।
একজন রোগীর পেটের ওপরের অংশে সামান্য ব্যথা ছিল। আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্টে ইউরিনারি ব্লাডার বা মূত্রথলিতে একটি ছোট্ট (২ সেমি x ১ সেমি) টিউমারের কথা বলেছে! কী করা যায় এখন?
আরেক রোগীর প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে, কিন্তু কোনো ব্যথা, জ্বালাপোড়া নেই। তাঁর আল্ট্রাসনোগ্রামেও মূত্রথলিতে একটি টিউমার দেখা যাচ্ছে, যা মোটামুটি বড় (৩ সেমি x×৪ সেমি)। এ ক্ষেত্রে কী করণীয়?
প্রথম রোগীর ক্ষেত্রে টিউমারটি খুব ছোট এবং এটি ব্লাডার বা মূত্রথলির মাংসপেশিতেই সীমাবদ্ধ। এটি এন্ডোসকপির মাধ্যমেই অপসারণ সম্ভব।
মূত্রথলির ক্যানসারের এই লক্ষণগুলো
দ্বিতীয় রোগীর ক্ষেত্রে এন্ডোসকপির মাধ্যমে অপসারণের পরও মূত্রথলিতে কিছুদিন ধরে কেমোথেরাপি দিতে হবে।
এবার তৃতীয় একজনের সমস্যার কথায় আসা যাক। আট থেকে নয় মাস যাবৎ মাঝেমধ্যেই তাঁর প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেত। দুই সপ্তাহ ধরে সেটা আর বন্ধ হচ্ছে না। সঙ্গে দেখা দিয়েছে কোমরে ব্যথা। ডান পা’টাও গেছে ফুলে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মূত্রথলিতে বড় সাইজের একটি টিউমার ধরা পড়েছে, যা পার্শ্ববর্তী অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও লসিকাগ্রন্থিতে ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসা কী? আগে কেমোথেরাপি দিয়ে পরে মূত্রথলিটি অপসারণের মাধ্যমে ফেলে দিতে হবে।
শরীরে কোন কোন লক্ষণ দেখা দিলেই সতর্ক হতে হবে?
১) যদি প্রস্রাবে রক্ত মিশে থাকে, অবশ্যই সতর্ক হন।
২) মূত্রত্যাগ করার সময় যদি সব সময় জ্বালা বা ব্যথার অনুভূতি হয়, সে ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে।
৩) রাতে ঘুমোনোর পরেও যদি বারে বারে প্রস্রাব পায়, সাবধান হতে হবে।
৪) প্রস্রাবের বেগ থাকলেও প্রস্রাব হচ্ছে না? ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব হচ্ছে? এই লক্ষণও কিন্তু মূত্রাশয়ের ক্যানসারের কারণ হতে পারে।
৫) দীর্ঘ দিন ধরে কোমরে যন্ত্রণা। অথচ বাতের ব্যথা নয়। সে ক্ষেত্রে মূত্রাশয়ের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, দেখতে হবে।
ওপরের রোগীদের ঘটনাগুলো থেকে মূত্রথলির ক্যানসারের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়।
মূত্রাশয় ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর উপায়
আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির মতে, যারা ধূমপান করেন তাদের ছেড়ে দেওয়া উচিত কারণ এটি ক্যানসার বিকাশের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত, কারণ পানি মূত্রাশয় ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে বলে বিশ্বাস করা হয়। ফল ও শাকসবজি সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া কিছু ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
আজ মূত্রাশয় ক্যানসার সচেতনতা দিবস। প্রতি বছর ৭ মে পালিত হয় দিবসটি। এদিনে মূত্রাশয় ক্যানসারের লক্ষণ, কারণ ও চিকিত্সা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতনতা বার্তা দেওয়া হয় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে। মূত্রাশয় ক্যানসার বিশ্বব্যাপী ১০তম সবচেয়ে সাধারণ ক্যানসার।