যে যুগে আমাদের নারীরা শিক্ষার
আলোয় আলোকিত ছিল
একবার আন্দালুসে সেই সময়ের খলিফা তার ছেলেকে বিয়ে করানোর জন্য পাত্রী খুঁজতে চাইলেন, আর তিনি কোন সাধারণ পাত্রী খুঁজছিলেন না। তিনি চাচ্ছিলেন না, যেনতেন মেয়েকে তার ছেলে বিয়ে করুক। তিনি সাধ্যের মধ্যে সবচেয়ে ভালো মেয়ে খুঁজছিলেন। তাই তিনি কর্ডোভা শহরে ঘোষণা করলেন যে, কোন পরিবারে যদি বিবাহ উপযোগী মেয়ে থাকে আর, সে যদি কুরআন এর হাফেজা এবং বিয়ে করতে ইচ্ছুক হয়, তাহলে তারা যেন আজ রাতে জানালার পাশে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখে।বলা হয়, সেই রাতে গোটা শহর আলোকিত হয়েছিল। আল্লাহু আকবার
কারণ সেখানে অনেক তরুণী ছিল যাদের পুরো কুরআন মুখস্থ ছিল! খলিফা বললেন ভালো, কিন্তু আমার ছেলেতো এত মেয়েকে বিয়ে করতে পারবেনা! তাই তিনি পরদিন ঘোষণা করলেন যাদের বিয়ে দেবার মত মেয়ে আছে এবং কুরআন এর পাশাপাশি অন্য কোনও ফিকহের কিতাব যেমন, মালেকি ফিকহ (সেখানে মালিকি ফিকহ জনপ্রিয় ছিলো) এর কোন বই মুখস্থ আছে তারা যেন আজ রাতে জানালার পাশে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখে। বলা হয়ে থাকে, আগের মত না হলেও প্রায় গোটা শহর আলোকোজ্জ্বল ছিল! আল্লাহু আকবার!
আমার ভয় হয়... যদি আমাদের গোটা উম্মাহকে আজ এমন নারী খুঁজে বের করতে বলা হয় যে, কোরআন এর পাশাপাশি মালেকি বা যে কোন ফিকহ এর একটি বই মুখস্থ করেছে, তাহলে দেখা যাবে জানালার পাশে হয়ত একটি প্রদীপও জ্বলতে দেখা যাবেনা!
এটা আমাদের উম্মাহর বর্তমান অবস্থা বলে দেয়। এবং এটি একটা সংকেত যে, যখন আমাদের নারীরা দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত থাকে তখনই উম্মাহ শক্তিশালী হয়।
আর পুরুষদের বেলায়, তারা তো বেশিরভাগ সময় শিক্ষিত হয় কেননা তাদের হতে হয়, যেমন আমাদের সব সময় একজন ইমাম লাগবে, কিন্তু উম্মাহর সত্যকার পরীক্ষা হল মেয়েদের শিক্ষিত করা, আপনি দেখবেন বিশ্বের অনেক জায়গায় নারীরা এমন কি মসজিদেও যেতে পারেনা, মসজিদেও তাদের জায়গায় নেই! তাদের শিক্ষিত করা তো দূরের কথা সে জানে কিভাবে রান্না করতে হয় বাসা পরিষ্কার করতে হয়, মাশা'আল্লাহ খালাস! আমাদের এটাই যথেষ্ট না, তাদের অবশ্যই শিক্ষিত হতে হবে, এর জন্যই আন্দালুস উম্মাহর অন্যতম উচ্চ শিখরের প্রতীক ছিলো।
দরকার হলো ইসলামকে জানা, না আমি বলছিনা তাকে বিশ্ববিদ্যালয় যেতে হবে এবং আর্টস পড়তে হবে, অ্যাকাউন্টিং পড়তে হবে। আমি ইসলাম সম্পর্কে বলছি, আমি বলছি তাকে ইসলামি হালাকায় যেতে এবং দ্বীনকে জানতে বলছি। আমাদের অবশ্যই এটা করতে হবে কারণ সে একটা জাতিকে গড়ে তুলবে, একজন বাবা সব সময় বাসায় থাকে না সন্তানের লালনপালনের জন্য। মা থাকেন, তিনি যদি দ্বীন সম্পর্কে নাই জানেন তাহলে তার সন্তানকে কি জানাবেন ? এটাই আমাদের অবস্থার মাপকাঠি! আর উম্মাহ হিসাবে আমরা অনেক অসুস্থ, মেয়েরা ইসলাম সম্পর্কে কিছুই জানেনা আর পুরুষরাও বেশিরভাগ অজ্ঞ, তাই আমাদের এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হবে।