আমরা যখন তর্ক করি তখন অপরকে আত্মমতাবলম্বী করিয়া জয়লাভের জন্য ব্যগ্র হই,
আমরা যখন তর্ক করি তখন অপরকে আত্মমতাবলম্বী করিয়া জয়লাভের জন্য ব্যগ্র হই, যখন আত্মমত প্রকাশ করি তখন অপরের মতকে বশে আনিয়া প্রবল হইবার চেষ্টা করি এবং যখন অপ্রয়োজনীয় গল্প বলি তখনও অপরের হৃদয়কে আশ্রয়প্রার্থী করিয়া আশ্রয়দাতা প্রভু হইতে চাই। সংসারের কাজে আমরা অপরের অভাব ও আকাক্সক্ষার উদ্রেক বৃদ্ধি করিয়া সফল হইবার নিমিত্তে প্রভু সাজিয়া আপনাদিগকে দুর্লভ করি। আমাদের নিজেদের অভাব থাকিলেও পাছে বিপক্ষ আমাদের অভাব বুঝিতে পারিয়া প্রবল হয় এই ভয়ে আমরা সেই ভাবটিকে হৃদয়ের এক প্রান্তে লুকায়িত রাখিয়া বাহিরে কপট বিমুখতার ভাবটিকে প্রকাশ করি। সংসারে প্রত্যেকেই জয়লাভের উদ্যোগে ব্রতী, কিন্তু তাই বলিয়া সকলেই জয়লাভ করিতে পারে না। একের জয়ে অন্যের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। সম্পূর্ণ জয়লাভ কদাচিৎ ঘটে। আংশিক জয়লাভই নিত্য ঘটনা। সংসার-সংগ্রামী আড়ম্বরের যদিও অভাব নাই কিন্তু শেষ ফল সন্ধি। এই সন্ধিতে যাহার লাভের ভাগ অধিক তিনিই জয়ী এবং যাহার লাভের ভাগ অল্প তিনি পরাজিত।
সারাংশ: নিজের চিন্তার বীজ অন্যের মনে বপণ করাই আমাদের বিতর্কের উদ্দেশ্য। আপন অভাবকে সংগোপন রেখে বাইরের জগতে রাজা হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা আমাদের। জয়ী হওয়ার আকুলতাই অন্যকে পরাজিত করে, আর শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে পরাজয়ের ইতিহাসই বেশি। পরস্পর সন্ধির ফলে নির্ণিত হয় শেষ ফল, সেখানে অধিক ভাগের অধিকারী সর্বদা জয়ী।