অল্প বয়সে বিয়ে করার যত উপকারিতা
গবেষকরা বাল্যবিবাহের উপকারিতা সম্পর্কে জানেন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক দেখেছেন যে, যারা অল্প বয়সে বিয়ে করেন তারা বেশি দিন বাঁচেন। নর্থ ক্যারোলিনার ডিউক ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টার বিয়ে নিয়ে এই গবেষণা চালায়।
গবেষনায় বলা হয়- "অল্পবয়সে বিয়ে করলে দীর্ঘ জীবন বেঁচে থাকা যায়। মৃত্যু ঝুঁকিও অনেকাংশে কমে যায়" বলে জানিয়েছেন গবেষক ইলিনসিয়ে গলার ও তার সহযোগীরা।
২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল মানুষ মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিল তাদের মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ এর বেশি মানুষ আরোগ্য লাভ করতে সক্ষম হত যদি তারা বিবাহিত হত। এই সাফল্যের হার কেমোথেরাপির থেকেও বেশি।
সুখী দম্পতিদের ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, ফাইব্রোমাইলজিয়ার মত অসুখ বিসুখ তুলনামূলকভাবে অনেক কম হয় ।
গবেষনায় এসেছে, অল্প বয়সে বিয়ের উপকারিতা পাওয়া যায় মানসিক ও শারীরিক উভয়দিক থেকেই । যেমন-
১. স্বামী স্ত্রী একে অপরের জীবন এবং ব্যক্তিত্ব গড়তে সাহায্য করেন, ফলে তাদের মাঝে ব্যক্তিত্বের সংঘর্ষ কম হয়।
২. এই বয়সে বিয়ে করলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সহজেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে এবং এই বন্ধুত্ব বজায় থাকে সারাজীবন।
৩. হাতে হাত রেখে জীবনের অনেক বড় কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়ে দু'জনকে। ফলে একটা বোঝাপড়া গড়ে ওঠে তাদের মাঝে।
৪. এই বয়সে পড়াশোনা বা ক্যারিয়ার নিয়ে অনেকেই চিন্তায় থাকেন, ভাবেন পাশে প্রেরণা দেবার একজন মানুষ থাকলে ভালো হলো। বিয়ে করে থাকলে এই মানুষটি সর্বক্ষণই আপনার পাশে থাকবেন।
৫. কম বয়সে সবাই থাকেন বেশ টানাটানির মধ্যে। বিলাসিতা ছাড়া এভাবে জীবন শুরু করে একটা সময়ে সচ্ছলতার মুখ দেখেন দু'জনেই। এর ফলে একজনের প্রতি আরেকজনের আস্থা তৈরি হয়।
৬. সন্তান নেওয়ার ইচ্ছে থাকলে অল্প বয়সে সন্তান নেওয়া সুবিধা। কারণ এ সময়ে শরীর সন্তান ধারণের জন্য উপযুক্ত থাকে।
৭. কম বয়স থেকেই নিজের জীবন দু'জনের জন্য মানিয়ে নিয়ে তৈরি করলে কখনোই সমস্যা হয় না দু'জনের মাঝে।
৮. কম বয়সে বিয়ে করলে জীবনের বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি সামলে একই সাথে কিছু সাফল্যের স্বাদ নেওয়া যায়। পরে বিয়ে করলে আর এই সুখটা পাওয়া যায় না।
৯. দু'জনের কারও মাঝেই স্বার্থপর কোনো অভ্যাস গড়ে ওঠে না।
১০. দু'জনে একসাথে ভবিষ্যত পরিকল্পনা করাটা সহজ হয়।
১১. একে অন্যকে জানার সুযোগ পায়, পরষ্পরের প্রতি মুহব্বত বৃদ্ধি পায় সহনশীল হয়। পারষ্পরিক সহযোগিতা করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, এরা সক্রিয় হয় এবং একে অন্যকে সহযোগিতা করার মনোভাব বৃদ্ধি পায়।
১২. একসাথে অনেক বছর জীবন কাটানোর সুযোগ পায়। সন্তান জন্মদানে বেশি সক্ষম থাকে ।
১৩. ভালোবাসা হৃদযন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বিবাহিত অথবা কোন সম্পর্কের মাঝে আছে তাদের হার্ট-অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা নিঃসঙ্গ মানুষের চেয়ে কম। গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে যে, সঙ্গীর নিবিড় সঙ্গ এবং নতুন পরিবারের নতুন সব আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে ভালো বন্ধনের কারণে হার্ট-অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পায়। কারণ পরিবারের সাথে থাকলে মানুষ উৎফুল্ল থাকে।
১৪. বিয়ে শরীরের হাড় মজবুত করে। অবাক হচ্ছেন? আসলেও তাই। বিয়ে শরীরের হাড় শক্ত করে এবং বিভিন্ন হাড়ের রোগের ঝুঁকি কমায়। বিয়ে হাড়ের খনিজ ঘনত্ব ঠিক রেখে হাড়ের এক ধরণের রোগ 'অস্টিওপরোসিস' হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
১৫. চরিত্র ভালো থাকে। ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্যই চারিত্রিক অধ:পতন হওয়ার সুযোগ থাকে না। কেননা দু'টি পরিবার তাদের দিকে নজর রাখে। এছাড়া স্বামী স্ত্রীর দিকে এবং স্ত্রী স্বামীর দিকে খেয়াল রাখে।
১৬. ক্যারিয়ার গড়তে দু'টি পরিবার সহযোগিতা করে।
১৭. একটি মেয়ের অল্প বয়সে বিয়ে হলে সে ইভটিজিং, সম্ভ্রমহরণসহ নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে যায়।
২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল মানুষ মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিল তাদের মধ্যে শতকরা ২০ভাগ এর বেশি মানুষ আরোগ্য লাভ করতে সক্ষম হত যদি তারা বিবাহিত হত। এই সাফল্যের হার কেমোথেরাপির থেকেও বেশি।
তাই দেরী নয়, সঠিক সময়ে বিয়ে করুন, ভালো থাকুন ।