অতিবাড় বেড়ো না, ঝড়ে পড়ে যাবে অতি ছোট থেকো না, ছাগলে মুড়াবে
অহংকার এবং নম্রতা কোনোটিই অতিমাত্রায় মঙ্গলজনক নয়। এগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমস্যা দেখা দেয়। মানুষ রক্ত মাংসের প্রাণী। মানুষের সহজ ধর্ম হলো নিজেকে প্রকাশ করা। তবে প্রতিটি কাজেরই কিছু নিয়ম-কানুন থাকে। এগুলো মানুষকে মেনে চলতে হয়। আর এই নিয়ম-কানুনগুলো না মেনে চললেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
অহংকারীর পতন হবে এটাই স্বাভাবিক। অহংকারী ব্যক্তি নিজে ধ্বংস হয় এবং সমাজেরও ক্ষতি মাধন করে। মানবজীবন পুষ্পশয্যা নয়। তাকে সংগ্রাম করেই পৃথিবীতে টিকে থাকতে হয়। মানুষ তার শ্রম ও মেধার মাধ্যমে কোনো কাজে বিজয়ী হয়। বিজয়ী মানুষের মধ্যে এক ধরণের অহংবোধ কাজ করে। মানুষের মধ্যে পরিমিত অহংকারবোধ থাকবে।
কখনো কখনো এই অহংবোধ এত তীব্র হয়ে ওঠে যে সমাজের মানুষ তার নিকট থেকে দূরে চলে যায়। ফলে অতিমাত্রায় বাড়াবাড়ির জন্য সে তার জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলে। সমাজে আমরা আর এক শ্রেণির লোক দেখতে পাই যারা খুব বেশি নমনীয়তা বা নম্রতা দেখায়। তারা নিজেদের খুব ছোট বা তুচ্ছ মনে করে। এ ধরণের লোক কোনো কাজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সমাজের নিকট এই শ্রেণির লোকেরাও উপযুক্ত সম্মান পায় না।
অতিরিক্ত অহংকারী হওয়ার ফল ধ্বংস। আবার নিজেকে মাত্রাতিরিক্ত নম্র বা তুচ্ছ ভাবাটাও অনুচিত। চার্লস ডারউইন বলেছেন- “জীবন যুদ্ধে যোগ্যরাই টিকে থাকে।” তাই আমাদের পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। যে জায়গায় যে সব আচার-ব্যবহার প্রয়োজন সে জায়গায় তাই করতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশ তাদের অতিমাত্রায় অহংকার ও ক্ষমতার দাপটের কারণে ধ্বংস হয়েছে। আবার অনেক জাতি তাদের হীন বা তুচ্ছ মনে করার জন্যে তাদের স্বাধীনতা হারিয়েছে। প্রকৃতির দিকে তাকালে আমরা সুন্দর উদাহরণ দেখতে পাই। যে গাছগুলো বেশি বড় হয় সেগুলো অল্প ঝড়েই ভেঙে যায়। আবার সে গাছগুলো খুব ছোট সে গুলো বিভিন্ন তৃণভোজী প্রাণী খেয়ে ফেলে। ফলে গাছগুলোর আর বিকাশ ঘটে না। তাই স্থান-কাল ও পাত্র ভেদে আচার-ব্যবহারের ভিন্নতা থাকা প্রয়োজন।
শিক্ষা: মানুষ হিসেবে আমাদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে অহংবোধ এবং নমনীয়তা থাকবে। তবে সেগুলো যেন সীমা অতিক্রম করে ধ্বংসের কারণ না হয়ে দাঁড়ায় এ বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।