করিতে পারি না কাজ সদা ভয় সদা লাজ।
সংশয়ে সংকল্প সদা টলে পাছে লোকে কিছু বলে
মানুষ জন্ম থেকেই কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে পৃথিবীতে আসে। প্রতিটি মানুষই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ঠের অধিকারী। ভয় ও লজ্জা তেমনি মানুষের দুটি স্বভাবজাত বিষয়। ভয় এবং লজ্জা নেই এমন কোনো মানুষ বিশ্ব সংসারে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই বলে ভয় এবং লজ্জার জন্য নিজের কর্মস্পৃহাকে অবহেলা করা ঠিক নয়। সৃষ্টিকর্তা আমাদের জ্ঞান-বুদ্ধি দিয়েছেন কর্মময় জীবন-যাপন করার জন্য।
মানুষ নিজের কর্মের দ্বারাই জগতে কীর্তিমান হয়। কর্মহীন মানুষ সমাজের অলস এবং অথর্ব হিসেবে পরিচিত। কাজকে যারা ভয় পায় তারা কখনোই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। জগতের কোনো কাজই ছোট নয়। কাজকে যারা ছোট করে দেখে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। সভ্যতা বিনির্মাণে কর্মঠ মানুষের অবদান অনেক। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর সীমাহীন ধৈর্যের বিনিময়ে সভ্যতার শুভ সূচনা হয়েছিল।
আজ সেই সভ্যতা আলোকিত হয়েছে মানুষের কর্মমুখরতার কারণে। কোনো গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে যেমন লক্ষ্য স্থির করতে হয়, তেমনি কোনো কাজ বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজন দৃঢ় সংকল্প। লক্ষ্য স্থির না করে যেমন কিছু করা যায় না তেমনি, সংকল্প না থাকলে সফল হওয়া যায় না। মানুষের কাজের জন্য যেমন প্রশংসা জোটে তেমনি সমালোচনাও হয়। তাই বলে সমালোচনার ভয়ে কাজ থেকে বিরত হওয়া কিংবা সংকল্প থেকে দূরে সরে আসা ঠিক নয়।
বুদ্ধিমান এবং সাহসী মানুষ সর্বদাই ভয় এবং সমালোচনাকে তুচ্ছ করে স্বীয় কাজে কীর্তিমান হয়। জগতের যত বড় বড় অভিযান সফলতার মুখ দেখেছে তার পিছনে ছিল দৃঢ় সংকল্প এবং সাহসী পরিকল্পনা। কর্মে সফল হওয়ার জন্য যেমন জড়তা ঝেড়ে ফেলতে হবে তেমনি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।
শিক্ষা: ভয় কে জয় না করতে পারলে কর্ম সম্পাদন সম্ভব হয় না। দৃঢ় সংকল্প না থাকলে মানুষের সমালোচনার ঝড় সামাল দিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় না। বুদ্ধিমান মানুষ মাত্রই কর্মঠ এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়।