কাক কোকিলের এক বর্ণ, স্বরে কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন
কাক ও কোকিল দেখতে একই রকম। উভয়ের গায়ের বর্ণ কালো। কিন্তু পাখি দুটি আমাদের কাছে সমানভাবে সমাদৃত হয় না। কণ্ঠস্বরের কারণে তাদের মান আলাদা। কোকিলের কণ্ঠস্বর অত্যন্ত সুমধুর। কোকিল তার গানে মানুষের মন আনন্দে ভরিয়ে দেয়। অন্যদিকে কাক মানুষের কাছে অত্যন্ত অপ্রিয় একটি পাখি। কাকের কণ্ঠস্বর খুবই কর্কশ।
কাকের ডাকাডাকিতে মানুষ বিরক্ত হয়। অনুরূপভাবে আমাদের সমাজেও অনেক মানুষ দেখা যায় যারা শুধু দৈহিক বৈশিষ্ট্যের কারণেই মানুষ। তাদের ভেতরটা মানুষ হয়ে উঠতে পারেনি। তাদের মনটা থেকে গেছে পশুর মতো। ত্যাগ, পরোপকার মহত্ত্ব প্রভৃতি মানবীয় গুণাবলীর সাথে তারা পরিচিত নয়। নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করাই এদের মূল উদ্দেশ্য।
এরা সমাজ ও জাতির কোনো উপকারেই আসে না। ফলে সমাজের কাছে এদের মান, মর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতা নেই। সমাজ সবসময় এদের হীন দৃষ্টিতে দেখে।
পক্ষান্তরে আমাদের সমাজে এমন মানুষও আছে যাদের অন্তর ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। তাদের দৈহিক বৈশিষ্ট্যকে ছাপিয়ে প্রকাশিত হয় তাদের মনুষ্যত্ব। মানবজাতির বৃহৎ কল্যাণের কাছে তারা জলাঞ্জলি দেয় নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ। লোভ-লালসা তাদের স্পর্শ করতে পারে না। সমাজে এসব মানুষদের স্থান তাই সবার উপরে। মৃত্যুর পরও তারা তাদের কর্মের মধ্য দিয়ে অম্লান থাকে মানুষের মনে।
শিক্ষা: বাহ্যিক চেহারা ও গুণাবলী পরিমাপের মাপকাঠি নয়। মানুষ হিসাবে জন্ম নিলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যায় না। উৎকৃষ্ট কর্মের মাধ্যমে ‘মানুষ’ পরিচয় অর্জন করে নিতে হয়।