যত মত, তত পথ
একই স্রষ্টার সৃষ্টি মানুষ। কিন্তু সেই মানুষের মধ্যে অনেক পার্থক্য বিদ্যমান। তাদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়। একই সময়ে জন্ম নেয়া দু’টি জমজ শিশুর মধ্যেও দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য বিদ্যমান। পার্থক্য দেখা যায়, তাদের পছন্দ-অপছন্দের, মতামতের। ধর্ম, পরিবেশ, সামাজিক অবস্থা ইত্যাদি মানুষে মানুষে পার্থক্য সৃষ্টি করে। এক ধর্মের অনুসারীদের রীতিনীতি, জীবনাচার ইত্যাদি অন্য ধর্মের অনুসারীদের চেয়ে ভিন্ন হয়। কারণ তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আবার উচ্চবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের মধ্যেও দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতামতের সুবিশাল পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
উচ্চবিত্ত শ্রেণিতে জন্ম নেয়া একটি শিশু যেভাবে গড়ে উঠে, নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে জন্ম নেয়া শিশু সেভাবে গড়ে উঠে না। উচ্চবিত্ত শ্রেণিতে শিশুটি যেমন সুযোগ-সুবিধা পায়, নিম্নবিত্ত শ্রেণিতে জন্ম নেয়া শিশুটি তেমন সুযোগ-সুবিধা পায় না। তাই তাদের জীবনধারার মধ্যে বিস্তর অমিল দেখা যায়। সব মানুষ যখন তাদের নিজ নিজ বিশ্বাস এবং জীবনধারা সুষ্ঠুভাবে মেনে চলে তখন সমাজে শান্তির সুবাতাস বয়ে চলে। সমাজে তখন কোনো অশান্তি দেখা যায় না। কিন্তু এর ব্যতিক্রম ঘটলেই সমাজে নেমে আসে অশান্তি। এক ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সাথে অন্য ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব ও রেষারেষি, যা সমাজের সুন্দর পরিবেশকে এক মুহূর্তেই নষ্ট করে দেয়।
একজনের নিজস্ব মতামত যখন অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়, তখনই সমাজে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ফলে নষ্ট হয় সম্প্রীতির বন্ধন। মানুষের নিজের মতকে অপরের ওপর চাপিয়ে দেয়ার হীন মনোবৃত্তি তাকে করে তোলে অহংকারী এবং উগ্র। পৃথিবীতে সমস্যা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে সমস্যার সমাধান। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি যতো ভিন্নই হোক না কেন প্রত্যেকেই নিজস্ব পথ অবলম্বন করে লক্ষ্যে পৌছায়। তাই বলা যায় পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সঙ্গে সমাধানের পথও ভিন্নতর হয়।
শিক্ষা: পৃথিবীতে প্রতিটি সমস্যার রয়েছে সমাধান। দৃষ্টিভঙ্গি যতো ভিন্ন হবে তার প্রয়োগ পদ্ধতিও ততো ভিন্নতর হবে। তাই সমাজের শান্তি এবং সম্প্রীতি রক্ষার জন্য সকলের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া, সমাজের প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।