জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো ভাবসম্প্রসারণ
মানুষ “আশরাফুল মাখলুখাত” অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে বিবেচিত। মানুষ তার এই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে জন্মের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে নয়, কর্মের শ্রেষ্ঠত্বের দ্বারা। জন্মের ব্যাপারে মানুষের নিজের কোনো হাত নেই। উঁচু বা নিচু, ধনী বা দরিদ্র পরিবারে তার জন্ম হওয়াটা তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। তবুও মানুষকে বংশ বা ধর্মের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়। যা ন্যায়সঙ্গত নয়।
কারণ সমাজের নিচুতলায় জন্মগ্রহণ করেও অনেকে কর্মের মাধ্যমে অনেক বড় হতে পারেন। মানব সমাজের ইতিহাসে তার বহু প্রমাণ আছে। আমেরিকার জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন, ফ্রান্সের নেপোলিয়ান বোনাপার্ট, ভারতের এ.পি.জে আবুল কালাম আজাদ, প্রমুখ ব্যক্তি অতি সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়েছেন। পদ্মফুলের সৌন্দর্যই বড়। পঙ্কে জন্মেছে বলে তাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
নিচুকুলে জন্মগ্রহণ করলেই যে নিচু হতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। তার কৃতকর্মই তাকে উঁচু নিচুর পরিচয় করিয়ে দেয়। তাই মানুষ যেখানেই জন্মগ্রহণ করুক, যে কাজই করুক, সে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে কি না সেটাই বিবেচ্য বিষয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, বংশগৌরবই মানুষের যথার্থ পরিচয় নয়। তাই জন্ম কোথায় হলো এ বিষয়টা একেবারে অযৌক্তিক ও অবান্তর। বরং মানুষের মহৎ কর্মই তার আসল পরিচয় বহন করে।
শিক্ষা: মানুষের জন্ম পরিচয়ের চেয়ে তার কর্মই সর্বাপেক্ষা তাৎপর্য বহন করে। তাই মানুষকে তার কর্মগুণের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা উচিত।