যে অন্যায় আদেশ পালন করে সেও অন্যায় করে
মানবজাতিকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব। অপরের কল্যাণসাধন করাই জীবনের মূল সার্থকতা। কিন্তু মানব সমাজের অনেকেই পরস্পরের ক্ষতি করতে চায়। সমাজে তারা বিশৃংখলা সৃষ্টির মাধ্যমে বিভেদ তৈরি করে। মানুষের কল্যাণার্থে রচিত আইন তারা ভঙ্গ করে এবং আরেকজনের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে। সমাজে এসব কাজ যারা করে তারা নিঃসন্দেহে অন্যায়কারী ও অপরাধী। কিন্তু অনেকেই আবার এদেরকে নানাভাবে সহায়তা করার মাধ্যমে নিজের অজান্তেই অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়ে।
শক্তিশালী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা অপেক্ষাকৃত দুর্বল শ্রেণির লোকদেরকে অনেক সময় তাদের অন্যায় কাজের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। সমাজের প্রভাবশালীরা অধিনস্তদেরকে নানা ধরণের অন্যায় কাজের আদেশ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে সেই আদেশ পালন করার মাধ্যমে অনেক ভালো মানুষও প্রকৃতপক্ষে অন্যায়কারীদের তালিকায় বন্দি হয়ে যায়। কেননা অন্যায় কাজের আদেশের প্রতিবাদ না করে তা সহ্য করাও একটা অন্যায়। এটি পালন করা আরো বড় অন্যায়।
অন্যায় আদেশ পালন করার মাধ্যমে তারা পরোক্ষভাবে অপরাধীদের সাহস যোগান দেয়। কাউকে অন্যায় কাজে সাহায্য করলে সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পায়। অন্যায়কারী তার অপরাধের জন্য যেরূপ শাস্তি পাওয়ার যোগ্য তেমনি অন্যায় আদেশ পালনকারীও সেরূপ শাস্তি পাওয়ার যোগ্য।
কারণ তার একটি অন্যায় আদেশ পালনের ফলে সমাজের বৃহৎ স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়। অপরদিকে সমাজের বিচারে সে অপরাধী, যে অন্যায় কাজের আদেশ দেয় তার ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধ হয় এবং সমাজে অশান্তি ও অরাজকতা সৃষ্টি হয়। তাই দুর্বলচিত্তে কারো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া ও তার অন্যায় আদেশ পালন করা সমাজের চোখে একটি গর্হিত অপরাধ।
শিক্ষা: সহযোগিতা ও আন্তরিকতা উদার মানসিকতার পরিচায়ক হলেও কাউকে অন্যায় কাজে সহযোগিতা করা যাবে না। একটি অন্যায় আদেশ পালন করার দরুন সারাজীবন সমাজে একজন অন্যায়কারী হিসেবে বিবেচিত হতে হবে।