হে অতীত তুমি ভুবনে ভুবনে কাজ করে যাও গোপনে গোপনে
মহাকাল অনাদি, অনন্ত ও নিরবিচ্ছিন্ন। মহাকালের এই অনন্ত ব্যাপ্তির মধ্যে রয়েছে ত্রিমাত্রিক কালবিন্দু-অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ। ক্ষুদ্রায়ু মানুষের পক্ষে মহাকালের অখ- প্রবাহকে উপলদ্ধি করা কখনোই সম্ভব নয়। তাই মানুষ সময়কে উপলদ্ধি করে অতীত বর্তমান আর ভবিষ্যতের সীমারেখায়। মানুষের জীবনচর্চায় বর্তমান হলো অস্তিত্বময় এক কালপর্ব, ভবিষ্যৎ হলো কল্পনা বিস্তারের এক অনাগত স্বপ্ন। আর অতীত হলো ধূসর স্মৃতির রাজ্য। জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধারাবাহিক অংশ যা একদিন বর্তমান ছিল, মহাকালের ঘূর্ণাবর্তে লাভ করে বর্তমান ও ভবিষ্যতের সৌধ।
আসলে অতীত নেপথ্যে থেকে নীরবে নিঃশব্দে বর্তমানকে প্রণোদিত করে। বর্তমানে যে সাফল্য, যে সঞ্চয়, যে অর্জন তা অতীতের অভিজ্ঞতা ও কর্মজ্ঞান থেকেই প্রাপ্ত। অতীত বিরাট মহীরুহের ন্যায় কর্ম, জ্ঞান ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে চলেছে মানুষের ওপর, একটি জাতীর উপর। বর্তমানের জীবন, সংস্কার, সংস্কৃতি অতীতের জীবনের বীজ থেকে উৎপন্ন। অতীতের বীজাঙ্কুর থেকেই জন্ম নেয় বর্তমানের বিশাল মহীরূহ। অতীতের শ্রম, সাধনা, কর্ম বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য বয়ে আনে সমৃদ্ধি ও সাফল্য।
অতীতের ব্যর্থতা বর্তমানকে সতর্কভাবে গড়ে তোলার শিক্ষা দেয়। অতীতের শিক্ষা মানুষকে সঠিক ও সতর্কভাবে পথ চলার নির্দেশ দেয়। জীবনে চলার পথে মানুষ যখন হোঁচট খেয়ে থমকে দাঁড়ায়, বিচলিত সঙ্কটে মানুষ তখন মূল্যায়ন করে অতীতকে। আজকের বর্তমান আগামী দিনে অতীত হয়ে মানুষকে অভিজ্ঞতার আলোকে পথনির্দেশ করবে, তাই আজকের বর্তমানকে সুন্দর ও অভিজ্ঞতাময় করে তোলা অত্যন্ত জরুরী।
শিক্ষা: অতীত মানবজীবনের এক অবিচ্ছেদ্য কালপর্ব। অতীত নেপথ্যে থেকে পরিচালনা করে বর্তমান ও ভবিষ্যতকে। তাই অতীতকে মূল্যায়ন করার মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যতকে সাফল্যম-িত করে তুলতে হবে।