বদলে যাচ্ছে জিপিএভিত্তিক ফল, থাকছে না সৃজনশীল প্রশ্ন
- শিখনকালীন ও সামষ্টিক—এই দুই ভাগে মূল্যায়ন।
- সৃজনশীল নামে চলা প্রশ্নপদ্ধতি বাদ যাচ্ছে।
- এমসিকিউ থাকবে না।
- পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে তবে শুধু কাগজ-কলমনির্ভর পরীক্ষা হবে না।
- জিপিএ থাকবে না, মূল্যায়ন হবে তিন শ্রনিতে।
- মূল্যায়নের তথ্য অ্যাপভিত্তিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হবে।
আগামী বছর থেকে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন হবে দুইটি পদ্ধতিতে। এক ভাগের মূল্যায়ন হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই, শিখনকালীন নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। আরেক অংশের মূল্যায়ন সামষ্টিকভাবে। এখানে পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও তা এখনকার মতো শুধু কাগজ-কলমনির্ভর পরীক্ষা হবে না। অ্যাসাইনমেন্ট, উপস্থাপন, যোগাযোগ, হাতে-কলমের কাজ ইত্যাদি বহুমুখী পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এখনকার মতো জিপিএভিত্তিক ফল প্রকাশ করা হবে না।
মূল্যায়ন ব্যবস্থায় এ রকম বড় পরিবর্তন এনে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখার আলোকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন নীতিমালা’ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে এনসিটিবির সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে, তার বিস্তারিত নির্দেশিকার কথা রয়েছে নীতিমালায়।
নতুন শিক্ষাক্রমটি যোগ্যতাভিত্তিক, যেখানে একজন শিক্ষার্থীকে এমন সব যোগ্যতা শেখানো হবে, যা সে জীবনযাপনের বাস্তব কাজে প্রয়োগ করতে পারে। এ পদ্ধতিতে জিপিএর বদলে যোগ্যতা অর্জনে শিক্ষার্থীর পারদর্শিতাকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে ফলাফল দেওয়া হবে। আর সৃজনশীল নামে চলা বিদ্যমান কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নও করা হবে না। এমনকি এখনকার মতো হুবহু বহুনির্বাচনী প্রশ্নও (এমসিকিউ) থাকবে না। বিষয় ভেদে যোগ্যতা অর্জনে শিক্ষার্থীরা কতটা সক্ষম, তা সমস্যাভিত্তিক নানা বিষয়বস্তু দিয়ে, তাতে তাঁরা কতটা পারদর্শী, তার মূল্যায়ন করা হবে বহুমুখী পদ্ধতি প্রয়োগ করে।
জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মসিউজ্জামান বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী মূল্যায়নের এ নতুন পদ্ধতিতে অপ্রয়োজনীয়ভাবে কোনো শিক্ষার্থীকে আরেকজনের সঙ্গে তুলনা করা হবে না। শিক্ষার্থীদের ওপর আরোপ করা হবে না গ্রেড বা স্কোরের বাড়তি চাপ। একজন শিক্ষার্থীকে আরও সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবিদদের কেউ কেউ মনে করেন, শিক্ষকদের উপযুক্ত না করে নতুন এ পদ্ধতি চালু হলে তা বুমেরাং হওয়ার আশঙ্কা আছে। এনসিটিবির কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের মাধ্যমিক স্তরের ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এরপর ২০২৩ সালে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে।
সুত্র: প্রথম আলো