গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না
তিনিই গুণী, যিনি মানবীয় গুণাবলীর ধারক ও বাহক। তার মধ্যে মানব চরিত্রের এমন কিছু গুণ প্রতিফলিত হয়, যা দ্বারা তিনি অন্য সাধারণ মানুষের চেয়ে আলাদা সম্মান পান। গুণী ব্যক্তি তার মেধা, প্রজ্ঞা দ্বারা মানুষের, সমাজ তথা রাষ্ট্রের বিকাশ সাধন করেন। পৃথিবীর মহান কবি, দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক তারা সবাই তাদের নিজ নিজ গুণের দ্বারা মানব সম্প্রদায়ের উপকার করেছেন।
তারা সবাই সম্মানের পাত্র। একটা বিষয় পরিলক্ষিত যে, এসব গুণী ব্যক্তিরা তাদের সমসাময়িক সময়ে খ্যাতি অর্জন করতে পারেননি। মানুষ গুণী ব্যক্তিদের কদর করতে শুরু করে যখন তারা জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে আসেন, নতুবা মারা যান। মহাকবি ফেরদৌসী মহাকাব্য ‘শাহনামা’ রচনার প্রতিটি শ্লোকের জন্য স্বর্ণ মুদ্রা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুলতান মাহমুদ তাকে স্বর্ণ মুদ্রার পরিবর্তে রৌপ্য মুদ্রা দেন।
ফেরদৌসী রৌপ্য মুদ্রা নিতে অস্বীকার করে রাগ করে চলে যান। সুলতান যখন তাঁর ভুল বুঝতে পারেন, তখন ফেরদৌসী আর জীবিত ছিলেন না। গুণী ব্যক্তিরা যখন আমাদের সাথে সমাজে চলাফেরা করেন, তখন আমরা তাকে সমাদর করি না। তাদেরকে অবহেলা করি। তাদের গুণকে আমরা সম্মানের চোখে দেখি না। তাদের সামাজিক স্বীকৃতি ও সামাজিক মর্যাদা দিতে আমরা দ্বিধাবোধ করি।
অথচ তারা তাদের মেধা, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শীতা দ্বারা মানুষের উপকার করে থাকেন। তাই তাদের যথাযথ সম্মান করা উচিত। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন- “যে দেশে গুণের সমাদর নেই, সে দেশে গুণী জন্মাতে পারে না।” তাই সমাজে তথা রাষ্ট্রে যেসব গুণী ব্যক্তি বাস করেন তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু দেয়া আমাদের কর্তব্য।
শিক্ষা: মানবীয় গুণে গুণান্বিত ব্যক্তি শ্রদ্ধার পাত্র। তাকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে সমাজে স্থান করে দিতে হবে। তার গুণের কদর করতে হবে।