দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ
পৃথিবীর ছোট বড় যেকোনো কাজে সম্মিলিত অংশগ্রহণের মধ্যেই সর্বোত্তম সফলতা নিহিত। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাঝে আছে বিপুল উৎসাহ, বিজয়ের দুর্দমনীয় নেশা আর অফুরন্ত উদ্দীপনা। ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে সফলতার সম্ভাবনাই থাকে বেশি। অন্তত পরাজিত হওয়ার আগে পরাজয়ের নেতিবাচক মানসিকতা স্থান পায় না মিলিত শক্তিতে। সবাই মিলেমিশে কাজ করতে গিয়ে পরস্পরের মাঝে তৈরি হয় একতা, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ। সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এক সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সৃষ্ট সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্ববোধের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তৈরি করেছে সমাজ ও রাষ্ট্রের মতো ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী সংগঠন।
ঐক্যবদ্ধ মানুষের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় অস্ত্রের ক্ষমতা। একক ব্যক্তিসত্তা একতাবদ্ধ হয়ে পৃথিবীর যেকোনো পরাক্রমশালী শক্তিকে হারিয়ে দিতে পারে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত বিশাল পাক হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে দিয়েছিলেন ঐক্যমন্ত্রে দীক্ষিত আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আর সমবেতভাবে কাজ করার মাঝে হার-জিত মুখ্য বিষয় নয়। সমবেত কাজ জয় পরাজয়কে ছাপিয়ে মহত্তম হয়ে ওঠে সম্মিলনের সৌন্দর্যে। তাছাড়া সমবেত কাজে বিজয়ের আনন্দ যেমন সকলের, তেমনি ব্যর্থতার দায়ভার ও গ্লানিও সকলের। একক কাজের ক্ষেত্রে পরাজয়ের গ্লানিও একাকী নিজেকে বহন করতে হয়। সম্মিলিত কাজ ব্যর্থতার গ্লানিও সমভাবে সবার ওপরে বর্তায় বলে গ্লানিবোধ তীব্র হয় না।
শিক্ষা: সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণে কাজের সফলতা ব্যর্থতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। মিলেমিশে কাজ করে ব্যর্থ হলেও লজ্জা কিংবা অগৌরব নেই।