ধ্বনিটিরে প্রতিধ্বনি সদা ব্যাক্ত করে ধ্বনির কাছে ঋণী সে যে পাছে ধরা পড়ে
ধ্বনি থেকে প্রতিধ্বনির সৃষ্টি বলে প্রতিধ্বনি ধ্বনির কাছে ঋণী। ধ্বনি সৃষ্টি না হলে প্রতিধ্বনি সৃষ্টি হতো না। কিন্তু প্রতিধ্বনি এ উপকার স্বীকার না করে নিজেকে গোপন রেখে নকলটিকে আসল বলে প্রচার করতে চায়। প্রতিধ্বনি মনে করে সে নিজে নিজেই উৎপত্তি লাভ করেছে; কেউই তাকে জন্ম দেয়নি।
সে ধ্বনির উপকারের কথা স্বীকারই করতে চায় না। আমাদের মানব সমাজে প্রতিধ্বনির মতো অকৃতজ্ঞ লোকের অভাব নেই। যেসব মানুষদের কারণে তাদের উপকার হয়েছে, যাদের কারণে তাদের স্বার্থরক্ষা হয়েছে, সেসব মানুষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে তাদের বিবেকে বাধে।
তারা মহৎ মানুষদের মহত্ত্বকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে না। তারা সর্বদা অপরের মহত্ত্বকে খাটো করে দেখে। অপরের দ্বারা উপকৃত হয়ে তার প্রতি সামান্যতম কৃতজ্ঞতাবোধও প্রকাশ করে না। এ জগতে যারা পরের কল্যাণের জন্য কাজ করেন, অপরের উদ্দেশ্যে নিজের স্বার্থ উৎসর্গ করেন, তারা অকৃতজ্ঞ লোকের নানা অপমান, ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ, অবজ্ঞা-অবহেলা পাওয়া সত্ত্বেও নিজেদের আদর্শ থেকে পিছপা হয় না।
শ্রম, শক্তি ও মেধা দ্বারা কল্যাণে রত এসব মহৎ লোক পৃথিবীতে পরম পূজনীয়। যে মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, তার মধ্যে মানবীয় গুণাবলীর ঘাটতি আছে। যার দ্বারা উপকৃত হবে, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাই মহৎ মানুষের বৈশিষ্ট্য।
শিক্ষা: পৃথিবীতে মহৎ ব্যক্তিরা জীবন বাজি রেখে হলেও মানুষের উপকার সাধন করেন। এসব পরহিতব্রতী লোকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে।