চকচক করলেই সোনা হয় না
পৃথিবীতে খাঁটি বস্তুর চেয়ে নকল বস্তুর পরিমাণই বেশি। আসল বস্তুর প্রাপ্য মর্যাদা হরণের জন্য নকল বস্তু সর্বদা সচেষ্ট। নকল তার দোষ-ত্রুটি সৌন্দর্যের আবরণে লুকিয়ে নিজেকে আসল রূপে পৃথিবীর কাছে প্রকাশ করতে ব্যস্ত। কিন্তু শুধু বাইরের আবরণ দিয়েই বেশিদিন সবাইকে আকৃষ্ট করে রাখা যায় না। এক সময় মিথ্যা আবরণের ভেতর থেকে বের হয়ে আসে নকল বস্তুর বৈশিষ্ট্য। তখন তার চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে আসল বস্তুর কাছে। সোনা অতি মূল্যবান একটি ধাতু।
এর বর্ণ উজ্জ্বল। কিন্তু একমাত্র এই উজ্জ্বলতাই সোনাকে মূল্যবান করে তোলেনি। সোনা প্রকৃতপক্ষে মূল্যবান এর অভ্যন্তরীণ গুণের কারণে। এমন অনেক ধাতু আছে যেগুলো ঘষা-মাজা করলে বা রং করলে সোনার বর্ণ ধারণ করে। কিন্তু তাই বলে এসব ধাতু সোনা হতে পারে না। কারণ ঘষা-মাজার ফলে এগুলো কেবল সোনার বাহ্যিক বর্ণটিই ধারণ করতে পারে, তার অভ্যন্তরীণ গুণগুলো আয়ত্ত করতে পারে না। তাই বাহিরের চাকচিক্যই কেবল কোনো বস্তুকে পূর্ণাঙ্গভাবে চেনার মাপকাঠি হতে পারে না। আমাদের সমাজেও এমন অনেক মানুষ আছে যাদের ভেতরটা প্রকৃত অর্থে ফাঁপা।
কিন্তু বাহিরে তারা একটি পরিপূর্ণ ভালো মানুষের মুখোশ এঁটে থাকে। তারা কখনো মহৎ নয়, মহৎ হওয়ার অভিনয় করে মাত্র। তাদের বাহিরের ভালোমানুষী দেখে অনেকেই প্রভাবিত হয়। আকর্ষণীয় চেহারা ও মিষ্টি কথায় আকৃষ্ট হয়ে অনেকেই তাদের সম্মানের আসনে বসায়। কিন্তু এসব তথাকথিত ভালো মানুষদের সত্যিকার রূপ যখন প্রকাশ পায় তখন তাদের বীভৎসতায় সকলে বিমূঢ় হয়ে যায়। তাই বাহ্যিক সৌন্দর্য নয় ভেতরের গুণাবলির মাধ্যমেই মানুষকে বিচার করা উচিত।
শিক্ষা: দেখতে কুৎসিত অনেক মানুষের মন পবিত্র হতে পারে। আবার সুন্দর চেহারা ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী অনেক মানুষও হতে পারে চরম ভয়ংকর। তাই একটি মানুষের ভেতরকে পরিপূর্ণভাবে না জেনে তার সম্পর্কে কোনো ধারণা পোষণ করা ঠিক নয়।