বিত্ত হতে চিত্ত বড়
বিত্ত অর্থ ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা, আর চিত্ত অর্থ মন বা অন্তর। ধন-সম্পদ মানুষকে বাহ্যিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দেয়। কিন্তু মনের প্রশান্তির জন্য বিত্তের প্রয়োজন হয় না। এক শ্রেণির মানুষ অর্থের মোহে উদারতা, সহানুভূতি, মানবতাকে হারিয়ে ফেলেছে। তারা নিজেদের ভোগ, বিলাসিতা নিয়ে ব্যস্ত।
অথচ প্রচুর অর্থ উর্পাজন করেও তারা মানসিক ভাবে সুখী নয়। আবার পৃথিবীতে এমন মানুষও আছে যারা নিজেদের সম্পদ মানবতার খাতিরে ব্যয় করেন। তারা ধনকে নয় মনকে গুরুত্ব দেন। সম্পদের মোহ না থাকায় তারা কোনো সংকটের মুখোমুখী হন না। মানুষের কল্যাণই এসব ব্যক্তির মূল লক্ষ্য।
কৃপণ ধনী ব্যক্তির সম্পদের পাহাড় থাকলেও পৃথিবীর মানুষ তাদের মনে রাখে না। কারণ তাদের সম্পদ কারো উপকারে আসে না। তাই কৃপণ ধনী ব্যক্তি মারা যাবার সাথে সাথে মানুষ তাকে ভুলে যায়। অথচ অনেক রাজা বাদশা আভিজাত্য ও ঐশ্বর্যের পথ ত্যাগ করে মানবতার তরে কাজ করে গেছেন।
একারণে তাদের কথা মানুষ মনে রাখে। উদাহরণ হিসেবে রয়েছে গৌতম বুদ্ধ, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন, শ্রীচৈতন্যসহ অনেক মহান ব্যক্তি। এসব মানুষই প্রকৃত মানুষ। কারণ তারা বিত্তকে তুচ্ছ করে হৃদয়ের ডাকে সারা দিয়েছেন। আর তাই সভ্যতার ইতিহাসে তারাই স্মরণীয় হয়ে আছেন।
পৃথিবীতে অনেক দেশে সম্পদের অভাব নেই কিন্তু সেখানে মানুষের মনের শান্তি নেই। উন্নত দেশগুলোর মানুষের মাঝে পারিবারিক বন্ধন অনেক দুর্বল। তাই আজ তাদের মাঝেও দেখা যায় পারিবারিক বন্ধনকে দৃঢ় করার নানা উদ্যোগ। কারণ তারা বুঝতে পেরেছে অর্থ নয় মানসিক প্রশান্তিই প্রকৃত শান্তি।
শিক্ষা: বাহিরের চাকচিক্যতে বড় না হয়ে, মনকে বড় করতে হবে। মনের প্রশান্তি না থাকলে জীবন অর্থহীন। মনের সম্পদে ধনবান মানুষই প্রকৃত মানুষ।