আপনা রাখিলে ব্যর্থ জীবন সাধনা জনম বিশ্বের তরে পরার্থে কামনা
মানুষ সামাজিক জীব। তাকে সমাজে বসবাস করতে হয়। কোনো মানুষই অপরের সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া চলতে পারে না। মানুষ সমাজ থেকেই প্রাথমিকভাবে এই সাহায্য সহযোগিতা পেয়ে থাকে। কেউ কেউ পরের কল্যাণে আত্মতৃপ্তি লাভ করে সুখী হয়। কেউবা নিজের স্বার্থলাভে আত্মতৃপ্তি পেয়ে থাকে। এই শ্রেণির লোক সব সময় নিজের সুখের কথা ভাবে।
অন্যের সুখ-দুঃখ নিয়ে ভাবার মতো সময় তাদের থাকে না। এভাবে তারা নিজের সুখের কথা ভাবতে ভাবতে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। তারা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারা সমাজের কোনো কাজে আসে না। তাদের মনে স্নেহ, মায়া-মমতা ও ভালোবাসা থাকে না বলে তাদের হৃদয় পাথরের মতো। এই ধরণের মানুষেরা মৃত্যুর পর পরই পৃথিবী থেকে বিলীন হয়ে যায়। সমাজে আবার কিছু লোক আছেন, যারা অন্যের উপকারের মাধ্যমে আত্মতৃপ্তি লাভ করে।
তারা সমাজের যেকোনো বিপদ-আপদে এগিয়ে আসে। সমাজের মানুষের সাথে তাদের সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই শ্রেণির লোকেরা শুধু সমাজের উন্নয়নই নয় জাতীয় উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তারা মৃত্যুর পর যুগ যুগ ধরে অমর হয়ে থাকেন। ফুল প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়ায় এবং মানুষকে আনন্দ দেয়; নিজের জন্য কিছু করে না।
তেমনি পৃথিবীতে এমন কিছু মহৎ ব্যক্তি আছেন যারা ফুলের মতোই মানব কল্যাণে কাজ করে অমর হয়ে আছেন। হাজী মুহাম্মদ মুহসীন তার বিশাল সম্পদ মানবকল্যাণে দান করেছিলেন। আবার মাদার তেরেসা সারাজীবন মানব সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। যে সমাজে সাহায্য সহযোগিতা থাকে না সে সমাজে নানা ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এতে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। পৃথিবীতে যত দিন বাঁচা যায় ততদিন সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে বেঁচে থাকা প্রয়োজন। আমরা যদি পরস্পরর সুখ-দুঃখ ভাগ করে চলি, তাহলে পৃথিবীকে অনেক সুন্দর ও মনোরম মনে হবে। তাই প্রত্যেকের অবস্থান থেকে মানব সেবায় আত্মনিয়োগ প্রয়োজন।
শিক্ষা: আত্মসুখের পিছনে ছুটে কোনো লাভ নেই। বরং এতে নিজের দুঃখই আরো বাড়ে। তাই মানব সেবায় আত্মনিয়োগ করা প্রয়োজন।