আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা, আমি বাঁধি তার ঘর আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই, যে মোরে করেছে পর
পৃথিবীতে মানুষের আগমন ঘটেছে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে। মানুষের পরিচায়ক হচ্ছে মনুষ্যত্ব। কারো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তার ক্ষতি সাধন করলে এই মনুষ্যত্ব প্রকাশ পায় না। মন্দকর্মের বিপরীতে মন্দকর্ম কখনোই সমর্থণযোগ্য নয়। ক্ষমা মহত্ত্বের লক্ষণ। ক্ষমার দৃষ্টিতে বিচার করে অপকারীর উপকার করলে একদিকে যেমন তার শিক্ষা হয়ে যায় অন্যদিকে আবার পরোপকারের মতো একটি মহৎ কাজও করা হয়ে যায়।
শত্রুর অনিষ্টের প্রতিশোধ নেওয়ার মধ্যে কোনো সার্থকতা নেই। আমার ঘর ভেঙ্গেছে বলে শত্রুর ঘরও না ভেঙ্গে যদি উল্টো তার ঘর বেঁধে দেওয়া যায় তাহলে তাতে ক্ষমাশীলতা ও পরোপকারের বিকাশ ঘটে। কোনো অসৎ ব্যক্তি ক্ষতিকর কাজ করলেও তার প্রতিদান ক্ষতিকর কাজ দিয়ে করতে নেই। সুন্দর আচরণ ও ক্ষমার আদর্শ স্থাপনের মাধ্যমে তার বিনিময় দেওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে, প্রতিশোধপরায়ণতা কখনো কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না।
এটি বরং নতুন সমস্যা সৃষ্টি করে। অতএব ক্ষতিকর কাজের বিনিময়ে কল্যাণের কাজ করলে তাতে মনুষ্যত্ব ফুটে উঠে। তাই শত্রুকে পর না ভেবে কাছে টেনে নিলে সমাজে ভ্রাতৃত্ব ও সংহতি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরোপকারের মধ্যে মানবজীবনের প্রকৃত সার্থকতা নিহিত। একে অপরের মাঝে প্রেম-প্রীতি ও ভালোবাসা আদান-প্রদানের মাধ্যমে একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল সমাজ গঠন করা সম্ভব। হিংসা-প্রতিহিংসা সমাজে কেবল অশান্তির সৃষ্টি করে। তাই কেউ হিংসা করলে তাকে ভালোবাসা উপহার দেওয়া এবং কেউ ক্ষতি করলে বিনিময়ে তার উপকার করা উচিত। তবেই জীবন হয়ে উঠবে সার্থক ও আনন্দময়।
শিক্ষা: মানব সমাজের প্রত্যেক সদস্যই পৃথিবীতে আগমন করেছে একে অপরের জন্য। প্রতিশোধপরায়ণতা ত্যাগ করে ক্ষমা ও পরোপকারের মাধ্যমেই অক্ষুন্ন রাখা যায় মনুষ্যত্বের মর্যাদা।