অসির চেয়ে মসি বড়
‘অসি’ অর্থাৎ তরবারি ক্ষমতার প্রতীক। আর ‘মসি’ অর্থাৎ লেখার জন্য ব্যবহৃত কালি জ্ঞানের প্রতীক। ক্ষমতালিপ্সু মানুষরা অসির বলে অনেক প্রাণ বিনষ্ট করে নিজের আধিপত্য বিস্তার করে। কিন্তু অল্পদিনই তারা নিজেদের প্রাধান্য বজায় রাখতে পারে। কিছুদিনের মধ্যেই আবার সেই স্থান দখল করে নেয় অন্য কোনো ক্ষমতাপিপাসু মানুষ। এমন অনেক দৃষ্টান্ত আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই। পক্ষান্তরে মনীষীগণ মসির সাহায্যে মানবজাতির কল্যাণে অনেক সৃষ্টিশীল কর্ম লিপিবদ্ধ করে যান। যা যুগে যুগে মানুষকে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ দেখায়। তাঁদের লিপিবদ্ধ চিন্তাধারা সভ্যতাকে নিয়ে যায় উৎকর্ষের পথে।
আর এই উৎকর্ষের পথ ধরেই মনীষীগণ সম্মান পান মানুষের অন্তরে। অন্য কেউ তাঁদের সম্মানটি দখল করতে পারে না। এমনকি মৃত্যুর পরও তাঁরা অমলিন হয়ে থাকেন মানব সভ্যতার ইতিহাসে। কিন্তু যারা অসির বলে বলীয়ান মৃত্যুর সাথে সাথে তাদের অস্তিত্ব হারিয়ে যায় মহাকালের স্রোতে। অসি আর মসির মধ্যে যুদ্ধে মসি হেরে যাবে। কিন্তু অসির এ জয় ক্ষণিকের। শাশ্বত ন্যায় যুদ্ধে মসিই বিজয়ী। অসির ক্ষমতা ধূমকেতুর ন্যায়। এর স্থায়িত্ব খুবই কম সময়ের জন্য। কিন্তু মসির ক্ষমতা সূর্যের ন্যায়। সূর্য যেমন সৃষ্টির আদি থেকে প্রতিদিন তার নিয়মেই আলো ছড়াচ্ছে, মসিও তেমনি অনন্তকাল ধরে নীরবে মানুষকে সত্য, সুন্দর ও শান্তির পথ দেখাচ্ছে।
শিক্ষা: অসি তার ধ্বংসলীলার মধ্য দিয়ে মানবজাতিকে দুঃখের সাগরে ভাসায়। আর মসি তার ফোঁটায় ফোঁটায় গড়ে তোলে স্বপ্ন, সভ্যতাকে নিয়ে যায় সমৃদ্ধির পথে। তাই মসিই হওয়া উচিত আমাদের জীবনে চলার পথের পাথেয়।