সোম অথবা মঙ্গলবারেই হতে পারে মেডিকেল ভর্তির ফল প্রকাশ
সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শুক্রবার (১ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত এমবিবিএস (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশে এবার কিছুটা দেরি হতে পারে। কয়েক বছর ধরে পরীক্ষা গ্রহণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফল প্রকাশ করা হলেও এবার নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার্থীদের ফল পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীণ।
এ বছর এক লাখ ৪৩ হাজার ৯১৫ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেন, যা মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ইতিহাসে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় কত শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন, তা এখনো জানা যায়নি। তবে অনুপস্থিতির হার খুব কম বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
বেশি পরীক্ষার্থী ও একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ওএমআর মেশিনের মাধ্যমে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য বেশি সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।
তারা জানান, এবার ফল প্রকাশে দেরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে আগামী সোম বা মঙ্গলবার (৪ বা ৫ এপ্রিল) পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এর আগে ফল প্রকাশের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
জানা গেছে, শুক্রবার স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে একযোগে ১৯টি কেন্দ্রের ৫৭টি ভেন্যুতে চলতি শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ১৮টি মেডিকেল কলেজ ও একটি ছিল ডেন্টাল কলেজ। দেশব্যাপী সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট চার হাজার ৩৫০টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন এক লাখ ৪৩ হাজার ৯১৫ জন। আবেদনকারীদের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬১ হাজার ৬৭৮ জন। সেই হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৩৩ শিক্ষার্থী, যা বিগত যে কোনো বছরের তুলনায় বেশি।
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত সারাদেশ থেকে উত্তরপত্র অধিদপ্তরের চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন দপ্তরে এসে পৌঁছেছে।
অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, ঢাকার বাইরের পাঁচ-সাতটি কেন্দ্রের পরীক্ষার উত্তরপত্র কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। প্রতিটি কেন্দ্র থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশি প্রহরায় উত্তরপত্র নিয়ে আসছেন। সবগুলো খাতা বুঝে পাওয়ার পর শনিবার (২ এপ্রিল) প্রথমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একটি বিশেষজ্ঞ দল উত্তরপত্র ওএমআর মেশিনের মাধ্যমে মূল্যায়ন করবে।
তিনি আরও জানান, প্রতি বছর বুয়েটের পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বিশেষজ্ঞ পরীক্ষকরা পুনর্নিরীক্ষার কাজ করেন। তবে এবার বুয়েট ফলাফল তৈরি করে জমা দিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিশেষজ্ঞ দল উত্তরপত্র দ্বিতীয় দফায় মূল্যায়ন করবে। বুয়েটের পর ঢাবির পরীক্ষকরা ঠিক কতটা সময় নেবেন, তা বলা সম্ভব নয়। সার্বিক দিক বিবেচনায় ফল প্রকাশে দেরি হওয়ার শঙ্কা বেশি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবীব জাগো নিউজকে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সারাদেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার বাইরে হাতেগোনা দু-একটা কেন্দ্র ছাড়া সব কেন্দ্রের পরীক্ষার খাতা পৌঁছে গেছে। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ফল প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ দল বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের প্রস্তুত করা ফলাফল পুনরায় মূল্যায়ন করবে। দুটি প্রতিষ্ঠান দুটি স্থানে পৃথকভাবে কাজ করবে। দুই পক্ষের ফল এক হলে বোঝা যাবে সব ঠিক আছে। যদি ব্যত্যয় ঘটে, তবে তা খতিয়ে দেখা হবে।’
কবে নাগাদ ফল প্রকাশিত হতে পারে, জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সোম কিংবা মঙ্গলবারের আগে ফল প্রকাশ করার সম্ভাবনা খুবই কম বলে জানান তিনি।
সুত্র: জাগো নিউজ২৪
Tags
শিক্ষা সংবাদ