জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম - Birth Certificate Correction Online

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম - Birth Certificate Correction Online 


জন্ম নিবন্ধন সংশোধন:  

জন্ম নিবন্ধন আমাদের সবারই একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ।(Birth Certificate Correction Online) জাতীয় পরিচয় পত্র পাই আমরা ১৮ বছর বয়স হলে পাই কিন্তু তার আগে জন্ম নিবন্ধন কার্ড টা আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে খুব প্রয়োজন । বাংলাদেশে প্রতিদিন জন্ম নিবন্ধন করতে ভুল হচ্ছে তার কারণ হলো যখন জন্ম নিবন্ধন বই থেকে অনলাইন আপডেট করা হয় তখন টাইপিং মিসটেক এর কারনে অনেক কিছু ভুল হয়ে যায়।


জন্ম নিবন্ধন সংশোধন এর ক্ষেত্রে যে সকল ভুলগুলো প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে তা নিচে দেয়া হলো - (Birth Certificate Correction Online):

১) নিজের নাম

২) বাবার নাম

৩) মায়ের নাম

৪) স্বামীর নাম

৫) জন্ম তারিখ

৬) ঠিকানা



জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম স্টেপ বাই স্টেপ -

আমাদের জানা উচিত,জন্মনিবন্ধনের সার্ভারটি ভোটার আইডি কার্ড এর সার্ভার এর মত ডিজিটাল করা হয়েছে। ভোটার আইডি কার্ডের মত জন্ম নিবন্ধন কার্ড আমাদের অনেক কাজে ব্যবহৃত হয় তাহলে চলুন step-by-step আমরা জেনে নেই কিভাবে জন্ম নিবন্ধন ভুল সংশোধন করতে হবে।


জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য প্রথমে যে কাজটি করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার জন্য আগে জন্ম নিবন্ধন কার্ড ডিজিটাল করতে হবে সেজন্য আগে আপনাকে ইউনিয়ন পরিষদে অথবা কোন কম্পিউটার দোকানে গিয়ে ডিজিটাল করার কাজটি সম্পন্ন করতে হবে।আবেদনটি অনলাইনের মাধ্যমে মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটার দিয়ে করা যায় তবে কম্পিউটার দিয়ে করাই শ্রেয় কারণ আবেদন করার পর ডকুমেন্ট প্রিন্ট করতে হয়।


জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার ধাপসমূহ নিচে দেয়া হলো -


জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার প্রথম ধাপ-


*** আপনার পিতা/মাতার নাম সংশোধন করতে হলে, নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন।


*** যদি আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর থাকে, তাহলে তাদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন করে তাদের নাম সংশোধন করে আসতে হবে। এরপর যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন করার সময় আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে থাকেন, তবে তাদের নাম সংশোধন করার পর আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনর্মুদ্রণ করলে সেখানে পিতা/মাতার সংশোধিত নাম দেখা যাবে। আর যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন করার সময় আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর না দিয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্ম নিবন্ধন নম্বরের সাথে পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ম্যাপ করতে হবে। পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ম্যাপ করার পর আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনর্মুদ্রণ করলে, সেখানে পিতা/মাতার সংশোধিত নাম দেখা যাবে।


*** যদি আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর না থাকে এবং আপনার জন্ম তারিখ 01/01/2001 এর পূর্বে হয়, তবে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন করার সময় আপনার পিতা/মাতার নাম সংশোধন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার পিতা/মাতা মৃত হলেও তাদের মৃত্যুর কোন প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে না।


*** যদি আপনার পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর না থাকে এবং আপনার পিতা/মাতা মৃত হয় এবং আপনার জন্ম তারিখ 01/01/2001 এর পরে হয়, তবে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন করার সময় আপনার পিতা/মাতার নাম সংশোধন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার পিতা/মাতার মৃত্যুর প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে।



প্রথমে আপনি আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার একটি ব্রাউজার ওপেন করে নিন। তারপর গুগলে সার্চ করুন- bdris.gov.bd অথবা এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। ওয়েবসাইট লিঙ্ক। bdris.gov.bd/br.correction.


উপরে উল্লেখিত ছবিতে, জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন নামে একটি অপশন পাওয়া যাবে তারপর দেখতে পারবেন যে জন্ম নিবন্ধন কার্ড সংশোধন করতে চাচ্ছেন সেটা জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্মতারিখ দিয়ে অনুসন্ধানী অপশনে ক্লিক করবেন।


উপরের ছবিতে আপনার নাম ডিটেলস আসবে। তারপর নির্বাচন অপশনে ক্লিক করবেন, নিবন্ধন কার্যালয় ঠিকানা দিবেন ( আপনাকে মনে রাখতে হবে সর্বোচ্চ চার বার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করা যাবে তাই যখন সংশোধন করবেন অনেক মনোযোগ সহকারে সঠিকটা সংশোধন করার চেষ্টা করতে হবে)


উপরের ছবিতে অপশন দেখতে পাবেন যে কোন কোন বিষয়গুলো আপনি সংশোধন করতে চাচ্ছেন। আপনার যে যে তথ্যগুলো জন্ম নিবন্ধনে পরিবর্তন করার দরকার সেগুলো সিলেক্ট করে সঠিক তথ্য দিবেন। তার পাশে সংশোধনের কারণসহ উল্লেখ করে দিবেন।Birth Certificate Correction Online.


আপনার আরও কিছু তথ্য দিতে দিতে পারেন যেমন আপনার ঠিকানা। আপনার বাবার নাম মায়ের নাম ইত্যাদি।



উপরের ছবিতে, একেবারে নিচের অপশন এ গিয়ে দেখবেন আবেদনকারী তথ্য ওখানে যিনি নিজে আবেদন আবেদন করবেন তার সঠিক তথ্য দিবেন। বিশেষ করে ফোন নাম্বারটা কারণ আবার যদি কোনো সংশোধনের দরকার হয় তাহলে সে ফোন নাম্বারে তার সাথে যোগাযোগ করা হবে।


তারপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যেমন।

১) যিনি আবেদন করবেন তার জন্ম নিবন্ধন।
২) আবেদনকারীর পিতা ও মাতার জন্ম নিবন্ধন।
৩) তথ্য প্রমাণের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ টিকা সনদ আর যদি ভোটাধিকার থাকে।
ইত্যাদি এগুলো ফাইল সাবমিট করতে হবে
৮) জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করা অষ্টম ধাপ :পেমেন্ট অপশনে গিয়ে দুটো অপশন দেখতে পারবেন
১. ফি আদায় : এটি অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
২. চালানের মাধ্যম: ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করলে এই অপশন প্রযোজ্য। আর এক্ষেত্রে কোন ব্যাংক থেকে টাকা দেওয়া হয়েছে, ব্যাংকের ব্রাঞ্চ, চালান নং, চালান জমা দেওয়ার তারিখ এগুলো সঠিকভাবে কি করতে হবে।
আপনার যেভাবে সুবিধা হয় সে অপশনে পেমেন্ট করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে দিবেন

টাকা জমা দেয়া পর নিচের নোটিশ টা পাবেন । 


জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য ফি-

জেনে নিন,সরকার কর্তৃক নির্ধারিত জন্মনিবন্ধন সনদ ফি আসলে কত টাকা?



অ্যাপ্লিকেশন সম্পন্ন হলে একটি আবেদনপত্র নাম্বারটা হবে যে নাম্বারটি আপনার মোবাইলে মেসেজ করে দেওয়া হবে। তারপর আবেদনের ডকুমেন্ট প্রিন্ট আউট করে উল্লেখিত ডেট এর বছরের মধ্যে নিবন্ধন অফিসে সাবমিট করতে হবে। নিবন্ধন কার্যালয় যোগাযোগ করার পর তার পরবর্তী যা করতে হবে সেখান থেকে আপনাকে বলে দেওয়া হবে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের কোন কিছু বুঝে না থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন আমরা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। আর আমাদের পোস্টট আপনাদের উপকারি হলে অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সাপোর্ট করবেন।


জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কে প্রায়শ জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর 


১। জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে কিংবা পরবর্তী সময়েও নিবন্ধন করতে অনেক সময় পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন পাওয়া যায় না, করণীয় কী?

        জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ অনুযায়ী জন্ম নিবন্ধন সকলের জন্য ব্যধ্যতামূলক (ধারা ৫(১), ৬ক এবং ৮(১)) । আইনের এ নির্দেশনা কেউ না মানলে তিনি আইন লঙ্ঘনকারী হিসাবে গণ্য হবেন এবং অনধিক ৫০০০ টাকা অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। তাছাড়া, এখন বিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরিতে নিয়োগ, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয় পত্রসহ ১৯ টি ক্ষেত্রে জন্ম সনদ আবশ্যক। আবার জন্ম নিবন্ধন ব্যতীত কোন ব্যক্তির মৃত্যু নিবন্ধন করা যাবে না। মৃত্যু নিবন্ধন না হলে উত্তরাধিকার নিশ্চিত করা যাবে না।

        বিষয়টি এভাবে বুঝিয়ে বললে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জন্ম নিবন্ধনে আগ্রহী হবেন। সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের সঙ্গে পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন অপেক্ষাকৃত সহজ। কারণ সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের জন্য যে তথ্যাদি/রেকর্ডপত্র প্রয়োজন তার সঙ্গে পিতামাতার শুধু বয়স প্রমাণের রেকর্ড (শিক্ষা সনদ বা আইনের ৭(১) ধারা অনুযায়ী তদন্তসহ এনআইডি) যোগ করলেই অতি সহজে তাদের জন্ম নিবন্ধন করা সম্ভব। বিষয়টিকে সমস্যা হিসাবে না দেখে ‘সুযোগ’ হিসাবে দেখা যেতে পারে।

        তাছাড়া, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের শুদ্ধ ডাটাব্যাজের জন্য ‘ফ্যামিলি ট্রি’ আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত একটি উত্তম চর্চা। বাংলাদেশ এটি গ্রহণ করেছে। এই পদ্ধতিতে সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের সঙ্গে পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর যুক্ত করে একটি পারিবারিক কাঠামো তৈরি করা হয়, যাতে পিতা-মাতার সন্তানের সংখ্যা এবং তাদের ক্রমিক নম্বর জানা যায়। এর মাধমে উত্তরাধিকার নিশ্চিত হয় এবং অনৈতিকভাবে বয়স বা অন্যান্য তথ্য পরিবর্তনের প্রবণতা রোধ করা সম্ভব হয়। এই পদ্ধতি বাংলাদেশে ভবিষ্যতে ‘পপুলেশন রেজিস্টার’ প্রণয়নে সহায়ক হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে নাগরিককে বিষয়টি ভালভাবে বুঝিয়ে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করে নিবন্ধন করিয়ে নিতে হবে।

২। ম্যানুয়াল জন্ম নিবন্ধন,যেগুলি এখনও অনলাইনে করা হয়নি-এগুলির বিষয়ে করণীয় কী?

        ম্যানুয়াল জন্ম নিবন্ধনসমূহ অনলাইনে অন্তর্ভুক্তির জন্য অনেকবার সময় দেওয়া হয়েছে। অনলাইন বহির্ভূত এই সকল জন্ম নিবন্ধন এখন হুবহু একই জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে অনলাইনে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নাই। যে এলাকায় হাতে লিখা জন্ম নিবন্ধনটি করা ছিল, সেই কার্যালয়ে রক্ষিত বইতে  সনদের তথ্যটি পাওয়া গেলে নিবন্ধক সরাসরি হাতে লিখা সনদের তথ্য দিয়েই  অনলাইন নিবন্ধন করে দিবেনযদি না  ইতঃপূর্বে অন্য কোথাও জন্ম নিবন্ধন করা হয়ে  থাকে।। তবে জন্ম নিবন্ধন নম্বরটি পরিবর্তিত হবে। এতে অবশ্য সংশ্লিষ্ট নাগরিকের কোন ক্ষতি বা অসুবিধা হবে না।

 ৩। পূর্বের সফটওয়্যারে সংশোধিত কোন তথ্য BDRIS সফটওয়্যারে পাওয়া না গেলে কী করতে হবে?

        ইতঃপূর্বে সংশোধিত কোন তথ্য BDRIS সফটওয়্যারে পাওয়া না গেলে এই সকল সংশোধনের একটি বিস্তারিত তালিকা নির্বাহী অফিসার/ডিডিএলজির মাধ্যমে রেজিস্ট্রার জেনারেল-এর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হলে তা হালনাগাদ করে দেওয়া হবে।

৪। পূর্বের যে সকল জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন শুধু বাংলায় আছে সেগুলি কীভাবে ইংরেজিতে করা হবে?

        সফটওয়্যারে কোন তথ্য সংযোজন বা বিয়োজন সংশোধন হিসাবে গণ্য হবে। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রথমেই তা উভয় ভাষায় করা প্রয়োজন ছিল। ইংরেজিতে না থাকায় তা এখন সংযোজন করতে গেলে তাও সংশোধন হিসাবে গণ্য হবে এবং তা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮-এর ১৫ বিধি অনুযায়ী সংশোধন করতে হবে।

৫। জমজ সন্তানের জন্ম নিবন্ধন কীভাবে করা হবে?

        জমজ সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রথমে একের পর এক আবেদন করে অনলাইনে সাবমিট করতে হবে তারপর যথাযথ নিয়মে নিবন্ধন করতে হবে । (একটি নিবন্ধন সমাপ্ত করে ফেললে অপর আবেদনটি অনলাইনে সাবমিট করতে সমস্যা হবে।)

৬। ১৭ ডিজিটের কম জন্ম নিবন্ধন নম্বর কিভাবে ১৭ ডিজিটে উন্নীত করা যাবে?

        ১৭ ডিজিটের কম জন্ম নিবন্ধন নম্বর হলে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধকের কার্যালয়ে পুরাতন সনদটি জমা প্রদান করে ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন  নম্বর সম্বলিত সনদ নেওয়া যাবে। নিবন্ধনের সকল স্তরের মত এক্ষেত্রেও নাগরিকের নিজস্ব মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

৭। পূর্বে নিবন্ধন না হয়ে থাকলে বিবাহিত নারীর জন্ম নিবন্ধন স্বামীর বাড়ির ঠিকানায় করা এবং সনদে স্বামীর নাম লিখা যাবে কি?

        পূর্বে নিবন্ধন না হয়ে থাকলে আইনের ৪ ধারা অনুযায়ী বিবাহিত নারীর বিলম্বিত জন্ম নিবন্ধন স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় করা যাবে। তিনি চাইলে তার জন্ম স্থানের ঠিকানায়ও নিবন্ধন করতে পারবেন। জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পিতা ও মাতার নাম লিখতে হবে, স্বামীর নাম লেখার কোন সুযোগ নাই। 

৮। নিবন্ধনাধীন ব্যক্তিকে কি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় সনদ দিতে হবে?

             হ্যাঁ! বাধ্যতামূলকভাবে  উভয় ভাষায় সনদ দিতে হবে। আবেদনপত্রটি গ্রহণের সময় জন্ম তথ্যসমুহ বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় আছে কি-না তা ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।

৯।  জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন বা তথ্য সংশোধন সংক্রান্ত আবেদনের সময় নিবন্ধনাধীন ব্যক্তি বা তার পিতা-মাতা-অভিভাবক  ছাড়া অন্য কারও মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করা যাবে কি?

        যেহেতু বিষয়টি ব্যক্তিগত তথ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট, সেহেতু এ ক্ষেত্রে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তি বা তার পিতা-মাতা-অভিভাবকের  মোবাইল ফোন নম্বরই দিতে হবে। এর সঙ্গে এদের কারও ইমেইল নম্বব (যদি থাকে) দিলে তা আরও সুবিধাজনক হবে।পরিবারের  সদস্য সংখ্যা ৫ জন হতে পারে এমন ধারণা থেকে সফ্টওয়্যারে একটি মোবাইল ফোন নম্বর পরিবারের সর্বোচ্চ ৫ জন সদস্যের ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কোন ফোন নম্বর ৫-এর অধিক সংখ্যক নিবন্ধনে ব্যবহার করলে পরবর্তী সময়ে সেসকল নিবন্ধনের কোন সন্ধান পাওয়া যাবে না।

        পরিবারের কোন মোবাইল ফোন না থাকলে বা সদস্য সংখ্যা মোবাইল ফোনের ধারণ ক্ষমতার বেশী হলে সে ক্ষেত্রে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তি বা তার পিতা-মাতা-অভিভাবকের সম্মতিতে তার কোন নিকট-জনের ফোন নম্বর ব্যবহার করা যাবে। এইরূপ ক্ষেত্রে কোন অবস্থায়ই নিবন্ধন কার্যালয়ের কোন দাপ্তরিক বা কোন কর্মচারীর ব্যক্তিগত ফোন নম্বর ব্যবহার করা যাবে না।

১০। বিবাহ বিচ্ছেদ বা পিতা-মাতার একজন অপ্রাপ্য/নিখোঁজ হলে সন্তানের জন্ম নিবন্ধন কীভাবে হবে?

         এইরূপ ক্ষেত্রে পিতা-মাতার একজনের তথ্য দিয়ে, অপরজনের শুধু নাম উল্লেখক্রমে সন্তানের জন্ম  নিবন্ধন করা যাবে।

 ১১।  পিতা-মাতার যে কোন একজন বিদেশী হলে কীভাবে সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করা হবে ?

        মাতা অথবা পিতার যে কোন একজন বিদেশী হলে যিনি বাংলাদেশী তার স্থায়ী ঠিকানার প্রয়োজনীয় দলিলাদি নিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। তখন নিবন্ধক প্রয়োজনীয়  অনুসন্ধান  শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে নিবন্ধন করে দিবেন।

১২। বিদেশে জন্ম নিবন্ধন করে দেশে ফেরৎ আসা কোন প্রবাসী জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংশোধন অথবা সনদ পুনঃমুদ্রণের আবদেন করলে করণীয় কী?

          যে নিবন্ধন অফিসে জন্ম/মৃত্যু নিবন্ধন করা হয়, কোন সংশোধন বা সনদ পুনঃমুদ্রণের প্রয়োজন হলে সে অফিস থেকেই তা করতে হবে। আইনত অন্য অফিস থেকে তা করার  সুযোগ নাই। তবে স্থানীয় নিবন্ধন অফিসের সহায়তা নিয়ে অথবা নাগরিক নিজে সরাসরি অনলাইনে মূল নিবন্ধন অফিস বরাবর উপযুক্ত দলিলাদিসহ সংশোধন বা পুনঃমুদ্রণের আবেদন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আবেদনের অনুলিপি রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে (arg1bdr@gmail.com) প্রেরণ করা হলে প্রয়োজনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে তা নিস্পত্তির ব্যবস্থা করা হবে।

         ভবিষ্যতে জন্ম নিবন্ধন সনদের কোন করণিক ভুল সংশোধন অথবা ইংরেজি বা বাংলায় প্রতিলিপির প্রয়োজন হলে তা যে কোনো নিবন্ধন অফিস থেকে যাতে প্রদান করা যায়  সে বিষয়ে বাবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

১৩। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের ফি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ চালানের মাধ্যমে জমা সংক্রান্ত তথ্য BDRIS-এ প্রবেশ করাতে  গেলে অনেক সময় ফাইল আপলোড করা যায় না বা নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। সমাধান কী?

         জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮-এর বিধি ২১ (৬) অনুযায়ী প্রতি মাসে আদায়কৃত অর্থ পরবর্তী মাসের ৭ তারিখের মধ্যে সরকারি তহবিলে জমা প্রদান বাধ্যতামূলক।

         BDRIS-এ চালান সংক্রান্ত তথ্য আপলোড করতে না পারার দুইটি কারণ থাকতে পারে:

         ক) চালানের তথ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ফাইলের পরিমাণ ১০২৪ কিলোবাইট এর বেশি হওয়া।  (প্রতিটি ফাইলের পরিমাণ  সর্বোচ্চ  ১০২৪ কিলোবাইট বা এর নিচে হতে হবে। )

         খ) চালানের টাকার পরিমাণ  ব্যালান্স-এর  পরিমাণের চেয়ে বেশি হওয়া। ( চালানের টাকার পরিমাণ সর্বদা ব্যলান্স-এর  সমান অথবা এর কম হতে হবে।)

        এখানে উল্লেখ্য যে, বদলি বা অন্য কোন কারণে ‘অথরাইজড ইউজার’কে রিলিজ করতে হলে বিধি ২১ (১) অনুযায়ী আদায়কৃত সমুদয় টাকা চালানের মাধ্যমে জমা দিয়ে ব্যালান্স শুন্য করে তারপর জেলা/উপজেলা অ্যাডমিনের মাধ্যমে তাকে রিলিজ করা যাবে।

১৪। অনেক সময়  জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করলে আরও এক বা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ‘পসিবল ডুপ্লিকেট’ দেখায়। এটি একই নিবন্ধন অফিস, উপজেলা বা জেলার আওতাধীন এলাকার মধ্যে যেমন হয়, তেমনি জেলার সীমানা ছাড়িয়ে অন্য জেলা, বিভাগ এমন কি বিদেশ থেকেও এমনটি দেখায়।  আমরা কীভাবে  বিষয়টির সমাধান করতে পারি?

        ‘পসিবল ডুপ্লিকেট’ দেখানোর কারণঃ

         জন্ম নিবন্ধনের আবেদন পত্র দাখিল করার পর কোনো আবেদনাধীন বাক্তির নাম, পিতার নাম এবং মাতার নাম জন্ম নিবন্ধন ডেটাবেসে সংরক্ষিত কোন নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির সঙ্গে হুবহু মিলে গেলে সফটওয়্যার সয়ংক্রিয়ভাবে “সম্ভাব্য সদৃশ” বা ‘পসিবল ডুপ্লিকেট’ স্ট্যাটাস দেখায়।

         নিম্নে বর্ণিত ৫টি নির্ণায়ক বা  ‘প্যারামিটার’ মিলে গেলে ‘পসিবল ডুপ্লিকেট’  ১০০% ‘ডুপ্লিকেট’ হিসাবে প্রতীয়মান হয়ঃ

         ক. আবেদনাধীন বাক্তির নাম; খ. পিতার নাম; গ. মাতার নাম; ঘ. নিবন্ধন কার্যালয়ের নাম; এবং ঙ. জন্ম তারিখ।

         উল্লেখ্য যে ‘পসিবল ডুপ্লিকেট’ হিসাবে চিহ্নিত ব্যক্তিগণের জন্ম তারিখের  ব্যবধান ৮ থেকে ১০ বছর বা তার  বেশি হলে বা স্থায়ী ঠিকানা না মিললে সেই ক্ষেত্রে ‘ডুপ্লিকেট’ হবার সম্ভাবনা সাধারণত ০% হয়ে যায়।

      ‘পসিবল ডুপ্লিকেট’টি একই জেলায় হলে অথরাইজড ইউজার বা ক্ষেত্র বিশেষে উপজেলা নির্বাহী  অফিসার বা উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) প্রয়োজনীয় অনু্সন্ধান বা তদন্ত কিংবা সংশ্লিষ্ট নিবন্ধন অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টির নিষ্পত্তি করবেন।

         ‘পসিবল ডুপ্লিকেট’টি একই জেলায় না হলে প্রথমে প্রশাসনিকভাবে ভিন্ন জেলার সাথে যোগাযোগ করে অনু্সন্ধান বা তদন্ত করতে হবে। এতে ডুপ্লিকেট হওয়ার অনুকুলে কোনো তথ্য পাওয়া না গেলে আবেদনকারীকে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার কাছে থেকে অন্যত্র তার জন্ম নিবন্ধন করা হয়নি মর্মে লিখিত নিয়ে আবেদনটি মঞ্জুর করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে  আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করতে হবে।

             এখানে উল্লেখ্য যে, আবেদনপত্রটি বাতিল বা মঞ্জুর যা-ই করা হোক না কেন, এর লগ (log) স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকবে।

১৫। কোন কোন ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করা হলে সফ্টওয়্যারে একই নম্বরে একাধিক ব্যক্তিকে দেখায়। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী?

        অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের শুরুতে অসাবধানতা বা অন্যান্য কারণে কোন কোন ক্ষেত্রে একই নম্বর একাধিক ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন নম্বর হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। এইরূপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিবন্ধন অফিসে এনে সম্মতির ভিত্তিতে ঐ নম্বরটি একজনকে বরাদ্ধ প্রদান করে অপরজনকে একটি নতুন নম্বর দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা যেতে পারে। সমঝোতা না হলে যার নিবন্ধন আগে হয়েছে তার জন্য এই নম্বরটি রেখে অপরজনকে নতুন নম্বর বরাদ্দ (reset) করতে হবে। এই অপশনটি BDRIS এর “জন্মতথ্য” মডিউলে “জন্ম নিবন্ধন বিষয় সঠিক করুন” অপশনে গেলে পাওয়া যাবে। সফটওয়্যারে এই অপশনটি শুধু ‘অথরাইজড ইউজার’ পাবেন।

        অপর ব্যক্তিকে হাজির করা না গেলে, উপস্থিত ব্যক্তি সম্মত হলে তাকে একটি নতুন নম্বর প্রদান করা যেতে পারে। তদন্ত/অনুসন্ধানে অপর ব্যক্তি অস্তিত্ব-শুন্য প্রমাণিত হলে সেই নিবন্ধনটি বাতিল করতে হবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Be alert before spamming comments.

নবীনতর পূর্বতন

Sponsored

Responsive Ad