️শাবান মাসে করণীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ
.
১) বেশি বেশি নফল রোজা রাখা।
উম্মে সালমা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (ﷺ)-কে শাবান ও রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। ’
(আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৩৬)
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি নবী করিম (ﷺ)-কে শাবান মাসের মতো এত অধিক (নফল) রোজা আর অন্য কোনো মাসে রাখতে দেখিনি। এ মাসের সামান্য কয়েক দিন ছাড়া সারা মাসই তিনি রোজা রাখতেন। ’
(তিরমিজি, হাদিস : ৭৩৭)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসুল (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, রমজানের পর কোন মাসের রোজা সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ? উত্তরে তিনি বলেন, শাবানের রোজা রমজানের সম্মানার্থে।
(তিরমিজি, হাদিস : ৬৬৩)
আমদের উচিত এই মাসের অন্তত প্রতি সোম, বৃহঃ বার ও আইয়্যামে বিধ (১৩, ১৪, ১৫) এই তিনদিন রোজা রাখা। তাছাড়া যাদের বাকি রোজা আছে (বিশেষ করে মহিলাদের) তাদের উচিত দ্রুত তা আদায় করে নেয়া।
২) শিরক থেকে দূরে থাকা ও অন্তর থেকে সমস্ত মুসলিমকে মাফ করে দেয়া। কারণ আল্লাহ্ তা'অালা লাইলাতুম মিন নিসফে শা'বানের রাতে দুই ধরণের লোক ব্যতিত সকলকে ক্ষমা করে দেন।
মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। ’
(সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫)
বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে অন্তর থেকে মাফ করে দিন। আল্লাহ্ তা'অালা আপনাকে মাফ করে দিবেন ইন শা আল্লাহ্।
৩) রমাদানে ইফতার করানোর জন্য, বেশি বেশি সাদাকা করার জন্য এখন থেকে কিছু টাকা জমানো শুরু করা। রমাদান উপলক্ষে বিভিন্ন গ্রুপ/প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে রোজাদারদের ইফতার করানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। যথাসাধ্য আমাদের সকলের অংশগ্রহণ করা উচিত। রমাদানের জন্য যেকোনো দান কমপক্ষে ৭০ গুণ বৃদ্ধি পায়।
৪) দুনিয়াবি ব্যস্ততা সেরে ফেলা। রমাদান মাস আমলের মাস। সে মাসে যেন বেশি বেশি আমল করা যায় সেজন্য এখন থেকে কাজ গুছিয়ে ফেলা দরকার। যারা ঈদে কাপড় কিনবেন তারা রমাদান আসার আগেই কিনে রাখতে পারেন যেন রমাদানে বের হতে নাহয়। যথাসম্ভব রমাদানের সময় দুনিয়াবি ব্যস্ততা কমিয়ে রাখার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নেয়া দরকার।
৫) যাদের কোরআন সহীহ, শুদ্ধ নেই তাদের উচিত যতদ্রুত সম্ভব কোরআন শুদ্ধ করে নেয়া। রমাদান মাস কোরআনের মাস। তাই রমাদান মাসে যেন বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা যায় তাই এখন থেকে তিলাওয়াত সহীহ করে নেয়া উচিত।
৬) রমাদানের জন্য টার্গেট সেট করা, পরিকল্পনা করা। আমরা যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজের আগে পরিকল্পনা করি। রমাদান আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। তাই এর জন্য আমাদের পরিকল্পনা করা দরকার। রোজার মাসায়ালা মাসায়েল জেনে নেয়া, আমলের লিস্ট তৈরি করা, বিভিন্ন দুয়া মুখস্ত করে নেয়া ইত্যাদি কাজ করা যেতে পারে।
৭) বেশি বেশি দুয়া করা যেন আমরা রমাদান পাই এবং এই মোবারক মাস থেকে পূর্ণ ফায়দা হাসিল করে নিজেদের গোনাহসমূহ মাফ করিয়ে নিতে পারি। নেক আমল করতে পারার জন্য আল্লাহর কাছে তৌফিক চাইতে হবে। কারণ আল্লাহর মেহেরবানী থাকলেই কেবল আমরা আমল করতে পারি।
আল্লাহ্ তাআলা আমাদের শা'বান মাসকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে রমাদানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের তৌফিক দিন এবং রমাদান পর্যন্ত আমাদের হায়াত বৃদ্ধি করে দিন। আমীন।