এসএসসি ৯ম সপ্তাহের ইতিহাস অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশা করি তোমরা সবাই ভালো আছো তোমরা যারা নবম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট এর উত্তর এর জন্য অপেক্ষায় আছো তাদের জন্য আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন।
এই প্রতিবেদনে থাকছে তোমাদের ইতিহাস বিষয়ে এসাইনমেন্টের উত্তর। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তোমরা চাইলে দেখে নিতে পারো নয়তো প্রিন্ট আউট করে নিতে পারো।
মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে মিশরীয়, সিন্ধু, গ্রিক ও রোমান সভ্যতার অবদান শীর্ষক প্রতিবেদনটি নিম্নে পেশ করা হল।
মিশরীয় সভ্যতার পটভূমি
আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর পূর্ব অংশে বর্তমানে যে দেশটির নাম ইজিপ্ট সে দেশের প্রাচীন নাম মিশর। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ থেকে ৩২০০ পর্যন্ত নীল নদের অববাহিকায় একটি সমৃদ্ধ জনপদ এর উদ্ভব হয়। এসময় থেকে মিশরের প্রাচীন সভ্যতায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে শুরু করে। এরপর ৩২০০ খ্রিস্টপূর্ব থেকে প্রথম রাজবংশের শাসন আমল শুরু হয়। ওই সময় থেকে মিশরের ঐতিহাসিক যুগের সূচনা হয়। একই সময়ে নারমার বা মেনন হন একাধারে মিশরের প্রথম নরপতি এবং পুরোহিত। তিনি প্রথম ফারাও এর মর্যাদা লাভ করেন। এরপর থেকে ফারাওদের অধীনে মিশর প্রাচীন বিশ্ব সভ্যতার অগ্রগতিতে একের পর এক উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়।
সিন্ধু সভ্যতার পটভূমি
সিন্ধু নদীর অববাহিকা অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল বলে এই সভ্যতার নাম সিন্ধু সভ্যতা। সিন্ধু সভ্যতার সংস্কৃতিকে অনেক সময় হরপ্পা সংস্কৃতি বা হরপ্পা সভ্যতা বলা হয়ে থাকে। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা। জেলায় মহেঞ্জোদারোতে এবং দয়ারাম সাহানি চেষ্টায় পাঞ্জাবের পশ্চিম দিকে মন্টোগোমারী জেলার হরপ্পায় এই সভ্যতা আবিষ্কৃত হয়। জন মার্শাল এর নেতৃত্বে পুরাতত্ত্ব বিভাগ অনুসন্ধান চালিয়ে আরো বহু নিদর্শন আবিষ্কার করেন। মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা সভ্যতার অন্তর্গত। সিন্ধু সভ্যতা উপমহাদেশের প্রাচীনতম সভ্যতা।
গ্রীক সভ্যতার পটভূমি
থিমের মহাকবি হোমার এর ইলিয়াড ও ওডিসি মহাকাব্য দুটিতে বর্ণিত চমকপ্রদ কাহিনীর মধ্যে লুকিয়ে থাকা সত্যকে খুঁজে বের করার অদম্য ইচ্ছা উৎসাহিত করে তুলে প্রত্নতত্ত্ববিদদের।
১৯শতকের শেষে হ্যামারের কাহিনী আর কবিতায় সীমাবদ্ধ থাকেনা, বেরিয়ে আসে এর ভিতরের সত্য ইতিহাস। ইজিয়ান সাগর দ্বীপপুঞ্জ এবং এশিয়া মাইনরের পশ্চিম উপকূলে আবিষ্কৃত হয় প্রাচীন নগর সভ্যতার। সন্ধান মেলে মর্য কাব্যের ট্রয় নগরীর সহ একশত নগরীর ধ্বংসস্তূপের। ইউরোপ মহাদেশের এই অঞ্চলে প্রথম সভ্যতার উন্মেষ ঘটেছিল।
আরো পড়ুন: প্রশ্নঃ বিশ্বগ্রাম কী? বিশ্বগ্রাম ধারণার জনক কে? বর্তমান পৃথিবীতে বিশ্বগ্রামের বাস্তবতা আলোচনা করো।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি ?
সভ্যতার অগ্রগতিতে মিশরীয় সভ্যতার অবদান
আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর পূর্ব অংশে বর্তমানে যে দেশটির নাম ইজিপ্ট, সেই দেশেরই প্রাচীন নাম মিশর। খ্রিস্টপূর্বে ৫০০০ থেকে ৩২০০ পর্যন্ত নীল নদের অববাহিকায় একটি সমৃদ্ধ জনপদ উদ্ভব হয়, যা প্রাচীন মিশর সভ্যতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে । তিনটি মর্থদেশ দ্বারা ঘিরে থাকা মিশরের ভৌগলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশটি এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপ মহাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত ভূমধ্য সাগরের উপকূলে অবস্থিত। এর উত্তরে ভূমধ্যসাগর, পূর্বে লোহিত সাগর, পশ্চিমের সাহারা মরুভূমি, দক্ষিণ সুদান এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশ। প্রাচীন সভ্যতায় মিশরীয়দের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই ধর্মের চিন্তার, শিল্প,ভাস্কর্য ,লিখন পদ্ধতি, কাগজের আবিষ্কার, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার- সবকিছুই তাদের অবদান সমৃদ্ধ। মিশরীয়দের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে তাদের জীবন ধর্মীয় চিন্তা ও বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত ছিল।
সভ্যতার অগ্রগতিতে সিন্ধু সভ্যতার অবদান
সিন্ধু নদের অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল বলে এর নাম রাখা সিন্ধু সভ্যতা। সিন্ধু সভ্যতা সংস্কৃতি হরপ্পা সংস্কৃতি বা হরপ্পা সভ্যতা বলা হয় । ঐতিহাসিকদের মতে আড়াই হাজার থেকে দেড় হাজার খ্রিস্টপূর্ব পর্যন্ত সভ্যতা টিকে ছিল। ঐতিহাসিকরা আরো মনে করেন পাঞ্জাব থেকে আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সিন্ধু সভ্যতা গড়ে উঠেছিল পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতাগুলোর অন্যতম সিন্ধু সভ্যতা ও বিশ্ব সভ্যতার অগ্রগতিতে তার অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তার অবদানের কয়েকটি দিক হলো নগর পরিকল্পনা
সিন্ধু সভ্যতার এলাকায় যেসব শহর আবিষ্কৃত হয়েছে তাদের মধ্যে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সবচেয়ে বড় শহর ঘরবাড়ি সবই পোড়া মাটি বা রোদে পোড়ানো ইট দিয়ে তৈরি। শহর গুলোর বাড়ি ঘরের নকশা থেকে সহজে বোঝা যায় যে সিন্ধু সভ্যতার যুগের অধিবাসীরা উন্নত নগরকেন্দ্রিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিল। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো নগর পরিকল্পনা একই রকম ছিল নগরীর ভেতরে দিয়ে চলে গেছে পাকা রাস্তা, রাস্তা গুলো ছিল সোজা। প্রত্যেকটি বাড়িতে খোলা জায়গা, কুপ ও স্নানাগার ছিল। জল নিষ্কাশন এর জন্য ছোট নর্দমা গুলোকে মূল নর্দমার সঙ্গে সংযুক্ত করা হতো। রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হতো। পথের ধারে ছিল সারিবদ্ধ ল্যাম্পপোস্ট।
পরিমাপ পদ্ধতি
সিন্ধু সভ্যতার যুগের অধিবাসীরা দ্রব্যের ওজন পরিমাপ করতে শিখেছিল। তাদের পরিমাপ পদ্ধতির আবিষ্কার সভ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান বলে বিবেচিত। তারা বিভিন্ন দ্রব্য ওজনের জন্য নানা মাপের ভিন্ন ভিন্ন আকৃতির বাটখারা ব্যবহার করত। দাগ কাটা স্কেল দিয়ে দৈর্ঘ্য মাপার পদ্ধতি ও তাদের জানা ছিল।
স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
সিন্ধু সভ্যতা যুগের অধিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ এবং চমৎকার স্থাপত্য-শৈলীর নিদর্শন রেখে গেছে। সেখানে দুই কক্ষ থেকে ২৫ কক্ষের বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। রোম সভ্যতার পটভূমি গ্রিসের সভ্যতার অবদান এর আগে ইতালিতে তাইবার নদীর তীরে একটি বিশাল সাম্রাজ্য সভ্যতা গড়ে ওঠে। রোমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই সভ্যতার রোমান সভ্যতা নামে পরিচিত। প্রথমদিকে রোমে একজন রাজার শাসনাধীন ছিল। এসময় একটি সভা ও সিনেট ছিল। রাজা স্বৈরাচারী হয়ে উঠলে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ৫১০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ রোমে একটি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। রোমান সভ্যতা প্রায় 600 বছর স্থায়ী হয়েছিল।
সভ্যতার অগ্রগতিতে গ্রীক সভ্যতার অবদান স্থাপত্য
গ্রীক শিল্পের বিশেষ করে স্থাপত্য ও ভাস্কর্য বিশেষ উন্নতি হয়েছিল। গ্রিক চিত্র শিল্পের নিদর্শন মৃৎপাত্র আঁকা চিত্রের মধ্যে দেখা যায়। পরিশেষে স্থাপত্যের সুন্দর সুন্দর নিদর্শন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে। বড় বড় স্তম্ভের উপর তারা প্রসাদ তৈরি করত। আর প্রাসাদের স্তম্ভগুলো থাকতো অপূর্ব কারুকার্যখচিত। পার্থেনন মন্দির বা দেবী এথেনার মন্দির স্থাপত্য রীতির অন্যতম নিদর্শন। এথেন্সের অ্যাক্রপলিনে স্থাপত্যের সুন্দর নিদর্শনের ভগ্নাবশেষ এখন চোখে পড়ে ।
ভাস্কর্য
গ্রিক ভাস্কর্য পৃথিবীর শিল্পকলার ইতিহাসে এক স্বর্ণ যুগের জন্ম দিয়েছিল। সেই যুগের প্রখ্যাত ভাস্কর্য শিল্পী ছিলেন মাইরন, ফিদিয়ান ও প্রাক মিটালেন।
বিজ্ঞান
গ্রিকরা প্রথম বিজ্ঞান চর্চার সূত্রপাত করে ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পৃথিবীর মানচিত্র প্রথম অংকন করেন বিজ্ঞানীরা। তারাই প্রথম প্রমাণ করেন যে, পৃথিবী একটি গ্রহ এবং তার নিজ কক্ষপথে আবর্তিত হয়। গ্রিক জ্যোতিবিদরা সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের কারণ নির্ণয় করতে সক্ষম হন। চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। বজ্র ও বিদ্যুৎ এর কারণে নয়, প্রাকৃতিক কারণে ঘটে-এইসব তারাই প্রথম আবিষ্কার করেন।জ্যামিতির পন্ডিত ইউক্লিড পদার্থ বিদ্যায় পারদর্শী।বিখ্যাত গণিতবিদ পিথাগোরাস ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী হিপোক্রেট যথেষ্ট ছিল।
সভ্যতার অগ্রগতিতে রোমান সভ্যতার অবদান।
স্থাপত্য:
রোমান স্থাপত্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল এর বিশালতা। সম্রাট হরণের তৈরি ধর্ম মন্দির প্যানথিয়ন রোমানদের স্থাপত্যের এক অসাধারণ নিদর্শন ও খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট ঠিকঠাক নির্মিত যেখানে একসঙ্গে ৫৬০০ দর্শক নির্মিত হয় জানতে পারত।
ভাস্কর্য
স্থাপত্য কলার পাশাপাশি রোমান ভাস্কর্য উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। রোমান ভাস্কর্য কোন দেবদেবীর সম্রাটদের বিভিন্ন চরিত্রের মূর্তি তৈরি করতেন মার্বেল পাথরের বিজ্ঞান এছাড়া কলোসিয়াম বিজ্ঞানীদের মধ্যে কেউ কেউ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হন। তাদের মধ্যে প্লিনি বিজ্ঞান সম্পর্কে বিশ্বকোষ প্রণয়ন করেন। এতে প্রায় 500 বিজ্ঞানী এ গবেষণা কর্ম স্থান পেয়েছে। তাছাড়া চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোমানদের অবদান ছিল বিজ্ঞানীরা সালমান চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর বই লেখেন। এছাড়া চিকিৎসাশাস্ত্রে অনন্য অবদান রেখেছে।