বাইবেলের আলোকে নারী ও দাস - দাসী
লেখাটিতে বাইবেলের বাস্তবতাকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র। মিশন্যারিদের মতো প্রতারণা ও ছল-চাতুরির আশ্রয় নিয়ে বাইবেলকে হেয় করার কোনো ইচ্ছা বা উদ্দেশ্য নাই। ইসলামে নারীদের মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে মূলত দুটি ধর্মের ক্ষুদ্র কিছু গ্রুপ থেকে অপপ্রচার চালানো হয়। তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে খ্রীষ্টান মিশন্যারি গ্রুপ, যারা বিভিন্ন প্রতারণা ও কলাকৌশলের আশ্রয় নিয়ে গরীব ও অজ্ঞ লোকজনকে ধর্মান্তরিত করার জন্য সদা-সর্বদা তৎপর থাকে। এরা ইসলামের অতি তুচ্ছ কিছু বিষয়, যেগুলোকে যুক্তি দিয়ে সহজেই ব্যাখ্যা করা সম্ভব, সেগুলোকে রঙ-চং দিয়ে হাইলাইট করে তার সাথে মুসলিম পরিবারে সংঘটিত বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাকে যোগ করে ইসলামের নামে বারংবার প্রচার করে। হাতিকে ছেড়ে লেজের কিছু চুল নিয়ে এমনভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে যে, অনেকেই তাদের অপপ্রচারের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছেন। কেননা অধিকাংশ মানুষ হলিউড মুভি আর পশ্চিমা বিশ্বের নারীদেরকে দেখে বাইবেলকে বিচার করে! কিন্তু বাস্তবতা যে ঠিক তার বিপরীত, সেটা বাইবেল না পড়লে কারো পক্ষেই অনুমান করা সম্ভব নয়।
যদিও স্বল্প পরিসরে বাইবেল থেকে পুরোপুরি উদ্ধৃতি দেওয়া সম্ভব নয় তথাপি এই লেখাতে নারী ও দাস-দাসীদের উপর বাইবেল থেকে কিছু ভার্স উপস্থাপন করা হচ্ছে। বিষয়গুলোকে যুক্তি দিয়ে ডিফেন্ড করা সম্ভব কি-না সেটাও দেখতে হবে। লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে ভেবে দেখুন, এই আধুনিক যুগে বাইবেল অনুসরণ করা আদৌ সম্ভব কি-না। আর এ কারণেই তারা বাইবেলে বিশ্বাসী হয়েও ‘সেক্যুলার’ সেজে ইসলামকে আক্রমণ করে। একটি গ্রন্থকে ‘গডের অভ্রান্ত বাণী’ হিসেবে বিশ্বাস করি কিন্তু অনুসরণ করতে লজ্জা লাগে – এ আবার কেমন গড! তারা নিজেরাই প্রমাণ করেছে যে, বাইবেল আসলে গডের বাণী নয়। কিন্তু অন্য কেউ বলতে গেলেই দোষ!
তারা একদিকে বাইবেলে বিশ্বাস করে, বাইবেলকে ‘গডের অভ্রান্ত বাণী’ বলে দাবি করে, বাইবেলের কিছু নির্বাচিত ভার্স ব্যবহার করে মানুষকে ধর্মান্তরিত করে, অন্যদিকে আবার মুসলিমদেরকে 'মৌলবাদী' ও 'পশ্চাৎপদ' বলে! একটি গ্রন্থ হয় গডের বাণী, না হয় গডের বাণী নয়। গডের বাণী হলে সেভাবেই বিশ্বাস ও অনুসরণ করা উচিত। অন্যথায় সত্যকে স্বীকার করা উচিত। কিন্তু একই গ্রন্থকে সকালবেলা ‘গডের অভ্রান্ত বাণী’ বলে দাবি করা হবে কিন্তু বিকালবেলা অন্যদের সাথে বিতর্কে ‘সেক্যুলার’ সেজে তাদের ধর্মকে আক্রমণ করা হবে – এ আবার কেমন ভণ্ডামী! অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা এই ভণ্ডামীটাই করছে। তারা কেউ ‘সেক্যুলার’, কেউ ‘নাস্তিক’, কেউবা আবার ‘নিধর্মী’ সেজে ইসলামকে আক্রমণ করছে এবং সেই সাথে মুসলিমদেরকেই উল্টোদিকে 'মৌলবাদী', 'পশ্চাৎপদ', 'অমানবিক' ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে হেয় করা হচ্ছে। এর চেয়ে বড় কৌতুক আর কী হতে পারে! যাহোক, বাইবেলে নারী ও দাস-দাসীদের অবস্থানটা ভালো করে একবার দেখে নিন।
১. প্রথমে পুরুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তারপর নারীকে।
For Adam was first formed, then Eve. (1 Timothy 2:13)
২. পুরুষকে নারীর জন্য সৃষ্টি করা হয়নি, কিন্তু নারীকে পুরুষের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে।
For the man is not of the woman: but the woman of the man. Neither was the man created for the woman; but the woman for the man. (1 Corinthians 11:8-9)
৩. নারীকে পুরুষের পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
And the rib, which the LORD God had taken from man, made he a woman, and brought her unto the man. (Genesis 2:22)
৪. স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের প্রতি আত্মসমর্পণ করবে, যেমন গডের প্রতি তারা আত্মসমর্পণ করে। তার মানে স্ত্রীর কাছে স্বামী হচ্ছে গডের সমতুল্য!
Wives, submit yourselves unto your own husbands, as unto the Lord. (Ephesians 5:22)
৫. পুরুষ নয়, নারী প্রতারিত হয়েছিল।
And Adam was not deceived, but the woman being deceived was in the transgression. (1 Timothy 2:14)
৬. নারী এবং পুরুষ একে অপরের শত্রু।
And I will put enmity between thee and the woman, and between thy seed and her seed; it shall bruise thy head, and thou shalt bruise his heel. (Genesis 3:15)
৭. গর্ভধারণ এবং সন্তান প্রসব এক ধরণের শাস্তি।
Unto the woman he said, I will greatly multiply thy sorrow and thy conception; in sorrow thou shalt bring forth children; and thy desire shall be to thy husband, and he shall rule over thee. (Genesis 3:16)
৮. পুরুষ নারীর উপর কর্তৃত্ব করবে।
Unto the woman he said, I will greatly multiply thy sorrow and thy conception; in sorrow thou shalt bring forth children; and thy desire shall be to thy husband, and he shall rule over thee. (Genesis 3:16)
৯. পুরুষের কর্তা হচ্ছে যীশু, আর নারীর কর্তা হচ্ছে পুরুষ।
But I would have you know, that the head of every man is Christ; and the head of the woman is the man; and the head of Christ is God. (1 Corinthians 11:3)
১০. পুরুষ হচ্ছে গডের ইমেজ এবং গৌরব, আর নারী হচ্ছে পুরুষের গৌরব।
For a man indeed ought not to cover his head, forasmuch as he is the image and glory of God: but the woman is the glory of the man. (1 Corinthians 11:7)
১১. পুরুষ শিশু জন্ম দিলে মা’কে সাত দিনের জন্য অপরিষ্কার থাকতে হবে, অন্যদিকে নারী শিশু জন্ম দিলে মা’কে পনের দিনের জন্য অপরিষ্কার থাকতে হবে।
If a woman have conceived seed, and born a man child: then she shall be unclean seven days…but if she bear a maid child, then she shall be unclean two weeks. (Leviticus 12:2-5)
১২. চার্চের মধ্যে নারীদেরকে চুপচাপ থাকতে হবে। সেখানে কথা বলা তাদের জন্য লজ্জাজনক। চুপচাপ তাদের স্বামীদের কাছে থেকে সকল প্রকার বশীভূতকরণের মাধ্যমে শিক্ষা নিতে হবে। নারীরা শিক্ষা দিতে পারবে না এবং পুরুষদের উপর কর্তৃত্ব করার অধিকারও তাদেরকে দেওয়া হয়নি।
Let your women keep silence in the churches: for it is not permitted unto them to speak; but they are commanded to be under obedience as also saith the law. And if they will learn any thing, let them ask their husbands at home: for it is a shame for women to speak in the church. (1 Corinthians 14:34-35)
Let the woman learn in silence with all subjection. But I suffer not a woman to teach, nor to usurp authority over the man, but to be in silence. (1 Timothy 2:11-12)
পশ্চিমা বিশ্বের নারীরা তাদের তথাকথিত ফ্রীডম এর বুকে পদাঘাত করে ইসলামের দিকে কেন ঝুঁকছেন তার যৌক্তিক কারণ ইতোমধ্যে নিশ্চয় পরিষ্কার। সেই সাথে বিশেষ কিছু ধর্মীয় গ্রুপ বিভিন্ন প্রতারণা ও কলাকৌশলের আশ্রয় নিয়ে মুসলিম নারীদের ‘পরিত্রাতা’ সেজে ইসলাম ও মুসলিম ওয়াচ শুরু করেছে কেন, তার পেছনের কারণও পরিষ্কার হওয়ার কথা।
এই পোস্ট এর আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন নিচের আপডেটেড পোস্ট থেকে । অনেক সোর্স লিংক সহ দেয়া আছে আশা করবো আপনাদের বুঝতে সুবিধা হবে ।