কাঠুরে থেকে যেভাবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন এই লোক
কাঠুরে আব্রাহাম লিংকনের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়ে উঠার গল্প। আব্রাহাম লিংকন আমেরিকার ১৬ তম রাষ্ট্রপতি তিনি পর পর ২ বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন আব্রাহাম কোন আনুষ্ঠানিক শিক্ষা না পেয়েও ছিলেন অসাধারন জ্ঞান সম্পূর্ণ এক মহাম ব্যাক্তি। তার প্রমাণ মেলে তার অসাধারন প্রতিভার স্বাক্ষর রাখা বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই Topic এ থাকছে একজন দরিদ্র ছেলে আব্রাহাম লিংকন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়ে উঠার গল্প।
১৮০৯ সালে ১২ই ফেব্রুয়ারী আমেরিকার কেন্টাকি রাজ্যের হারজিং কাউন্টিতে অতি সাধারন পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। বাবার নাম থমাস লিংকন ও মার নাম নাঞ্চি হাংচস লিংকন মাত্র ৯ বছর বয়সে আব্রাহাম মাকে হারান এর কয়েক বছর পরে তার বাবা আবার বিয়ে করেন। কিন্তু তার সেই মায়ের তিনটি সন্তান ছিলো সে আব্রাহামের সৎ মা হলেও আব্রাহাম কে অনেক ভালবাসতেন। তার লেখাপড়ার জন্য তাকে উৎসাহ দিতেন ছোট বেলা থেকেই আব্রাহামের বই পড়ার প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন কিন্তু লিংকন শুধু ১৮ মাস প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার সুযোগ পায়।
লিংকন একজন স্বশিক্ষিত ব্যাক্তি তিনি বই পারার জন্য মাইলের পর মাইল পথ হেঁটে হেঁটে বই সংগ্রহ করতেন তিনি তখনকার বিখ্যাত বই তীর্থ যাত্রীর আগ্রগ্রতি ও ইসপের গল্প পড়তে খুব পছন্দ করতেন। জ্ঞান অন্বেষণের জন্য লিংকন হলো একজন মনযোগী পাঠক খুব ছোট বেলা থেকে আব্রাহাম তার বাবার সাথে পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি নৌকা চালিয়ে স্পরিবারের জন্য জীবিকা অর্জন করতেন এমন কি তিনি কাঠুরিয়ার কাজ করেছেন। ১৭ বছর বয়সে তিনি তার এক বন্ধুর সাথে ব্যবসা শুরু করেছিলেন ব্যবসাটি ভালো চলছিলো না তাই তিনি তার অংশটুকু বিক্রি করে দেন কিন্তু হঠাৎ করে তার বন্ধুর মৃত্যুর পরে এক হাজার ডলারের ঋণের ভার তার উপরে আসে পরে।
বছরের পর বছর ধরে তিনি এই ঋণ পরিশোধ করেন তিনি পোস্ট মাস্টার হিসেবেও কাজ করেছেন কিছু দিন। ব্লাকহ্যাট যুদ্ধের পরে তিনি রাজনৈতিক জিবন শুরু করেন ১৮৩৮ সালে ইলিয়সে উইং পার্টি রাজ্যে আইন সভায় একজন সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়। এই সময় তিনি একজন আইনজীবী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং উলিয়াম ব্লাকস্টোনের কমেন্টারিতে অব দ্যা লও অব ইংল্যান্ড বই পরে নিজে নিজে পড়া শুরু করে দেয়। তার পরে আইনের চর্চা করতে থাকেন এর পর শুরু হয় তার রাজনৈতিক জীবন। তিনি নিউসালেমের ইলিয়েস জেনারেল অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে উইং পার্টির পক্ষে রাজনিতি শুরু করেন মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি পার্টির মনোনয়ন পায়।
রাজনৈতিক সফলতায় কখনই তাকে পিছু ফিরে তাকাতে হয় নি তিনি ১৮৪৭-১৮৪৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৫৮ সালে সিনেট নির্বাচন রিপাব্লিকান পার্টিতে যোগ দিয়ে স্টিফেন ডগ্লাসের বিরুদ্ধে পরাজিত হন। এই সময় লিংকন ডগ্লাস বিতর্ক এবং কৃতদাস প্রথা সংক্রান্ত বিতর্ক লিংকন কে জাতীয় পর্যায় সুখ্যাতি এনে দেয়।
১৮৬০ সালে রিপাব্লিকান পার্টির পক্ষ থেকে আব্রাহাম লিংকন আমেরিকার ১৬ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ১৫ এপ্রিল ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি সফল ভাবে দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন। তিনি ছিলেন মিষ্টি ভাষী ও বিনয়ী জনতাকে আকর্ষণ করার জন্য তার অসাধারন ক্ষমতা ছিলো। তিনি ছিলেন রিপাব্লিকান পার্টির প্রথম রাষ্ট্রপতি ১৮৬১-১৮৬৫ পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দাস প্রথার অবসান করেন ১৮৬৩ সালে মুক্তি ঘোষণার মাধ্যমে ৩৫ লাখ কৃতদাস কে মুক্তি করে দেন এবং ১৮৬৩ সালের নভেম্বর মাসে একটা ভাষণ দেয় যে ভাষণ পৃথিবীর সেরা ভাষণ হিসাবে আখ্যায়িত।
একটা কথা সব সময় মাথায় রাখা দরকার সেটি হলো, অন্যদের চেয়ে কতোটা পিছিয়ে আছো সেটা না ভেবে তুমি তোমার লক্ষ্য থেকে কতোটা পিছিয়ে সেটা দেখ। যদি তুমি জানো তোমার ভিতরে অসম্ভব বলে কোন শব্দ নেই তবে তুমিই পারবে কিছু করতে। কেউ রাতা রাতি সফল হতে পারে না তার জন্য দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করতে হয় আর সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
একজন কাঠুরিয়া যদি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে পারে তাহলে আপনি কেন আপনার ছোট্ট স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে না?
Chris gayle যে জঞ্জাল পরিষ্কার করার কাজ করতো সে যদি বিশ্বের অন্যতম ক্রিকেটার হতে পারে তাহলে আপনি কেন আপনার চাওয়া পূরণ করতে পারবেন না?
টমাস আলভা এডিশন যে ৯৯৯ বার হেরে গিয়েও ১০০০ বারের মাথায় বাল্ব তৈরি করতে পারে তাহলে আপনি কেন চেষ্টার কমতি রেখে দিবেন?
কি ছিলো তাদের ভিতরে যা আপনার আমার ভিতরে নেই? প্রস্তত থাকো চারপাশ লক্ষ্য রাখো আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কখনও হাল ছেড়ে দিও না।