গীবত সম্পর্কে বর্তমান সময়ে প্রচলিত গুরুত্বপূর্ণ ৭ টি বিষয়ের উপরে আলোচনাঃ
★(১) খাবারের গীবত :
যেমন বলা, খাবারটা মজা হয় নাই, লবণ কম হইছে, এত লবণ দিয়েছে যে তিতা লাগছে ইত্যাদি ।
নবী(স:) কখনই খাবারের দোষ ধরতেন না । ভালো না লাগলে এক পাশে সরিয়ে রাখতেন । কখনই বলতেন না, কী খাবার রান্না করেছে মুখেই দেয়া যাচ্ছে না !
★(২) দৈহিক কাঠামোর গীবত :
কারো কাছে কোন ব্যক্তির দৈহিক ত্রুটি উল্লেখ করাও গীবত ।
যেমন বলা, অমুক ব্যক্তি খুব মোটা, তার নাক বোঁচা, চোখ খুবি ছোট, চোখে দেখে না, মাথায় তো চুল নাই, পেটে ভূড়ি আছে, সে তো খুবি খাট ইত্যাদি ।
তো কোন ব্যক্তির আড়ালে অন্য কারো সাথে যদি আপনি ঐ ব্যক্তির দৈহিক কাঠামো নিয়ে এরকম আলোচনা করেন তাহলে তা গীবত হয়ে যাবে ।
"একবার আয়েশা(রা:) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল ! আপনি কী সাফিয়ার বেঁটে হওয়াটা অপছন্দ করেন না ?
রাসূল(স:) বললেন, হে আয়েশা ! তুমি এমন একটি কথা বললে যা নদীর পানির সাথে মিশিয়ে দিলে তার উপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে ।" (আবু দাউদ )
★(৩) পোশাকের গীবত :
এভাবে বলা, অমুকের পোশাক খাট, কেমন কালারের জামা-কাপড় পরে দেখতে বিশ্রি লাগে, ঐ মেয়ে এত ফিটিং ওয়ালা পোশাক পরে, অমুক তো পাতলা ড্রেস পরে ইত্যাদি ।
" একবার আয়েশা(রা:) বলেন, অমুক স্ত্রীলোকের আচল খুব লম্বা । রাসূল(স:) একথা শুনে বললেন, হে আয়েশা ! তোমার থুথু ফেলা কর্তব্য । আয়েশা(রা:) বলেন, আমি থুথু ফেললে মুখ থেকে গোশতের একটি টুকরা বের হয়ে আসে ।"
(আত তারগীব ওয়াত তারহীব)
ইসমে আযম কি? ইসমে আ’যমের কি ফযীলত?
★(৪) অভ্যাস বা আচার-আচারণের গীবত :
কোন ব্যক্তির আচার ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করা । যেমন, সে মানুষকে কষ্ট দিয়ে কথা বলে, ব্যবহার খারাপ, অভদ্র, পেটুক, অলস, সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘুমায় ইত্যাদি ।
একবার সালমান ফারসী(রা:) আহার করে শুয়ে পড়লেন । দুই ব্যক্তি তার খাওয়া ও শোয়ার ধরণ নিয়ে সমালোচনা করলে নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হয়,
"তোমরা পরস্পরের গীবত কর না । "
(সুরা হুজরাত : ১১)
(ইবনে জুরাইহ এর সূত্রে দুররুল মানছুরে)
(৫) বংশের গীবত :
তুচ্ছ করার জন্য কাউকে বলা, অমুকের বংশ নিচু, অমুকের পূর্ব পুরুষেরা ছিল কূলি মজুর বা চোর ডাকাত ইত্যাদি, অমুকের তো কোন বংশই নেই ইত্যাদি বলা ।
"নবী(স:) বলেন, দীনদ্বার ও সৎকর্ম ব্যতীত কোন ব্যক্তির অপর কোন ব্যক্তির উপর শ্রেষ্ঠত্ব্য নেই ।"
(আব্দুর রহমান আশ-শারানী)
তুচ্ছ করার জন্য কাউকে বলা, অমুকের বংশ নিচু, অমুকের পূর্ব পুরুষেরা ছিল কূলি মজুর বা চোর ডাকাত ইত্যাদি, অমুকের তো কোন বংশই নেই ইত্যাদি বলা ।
"নবী(স:) বলেন, দীনদ্বার ও সৎকর্ম ব্যতীত কোন ব্যক্তির অপর কোন ব্যক্তির উপর শ্রেষ্ঠত্ব্য নেই ।"
(আব্দুর রহমান আশ-শারানী)
★(৬) ইবাদতের গীবত :
ইবাদতের ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে সমালোচনা করা । যেমন, কাউকে গিয়ে বলা অমুকতো ঠিকমত নামায পরতে পারে না, মাকরুহ ওয়াক্তে নামায পরে, রমযানের রোজা রাখে না, এত বড় হইছে কিন্তু এখনো নামায পড়ে না, এত বড় মেয়ে কুরআন পড়তে জানে না ইত্যাদি ।
"তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে কতক লোক ঘুমিয়ে থাকলে শেখ সাদী(রহ:) তাদের সমালোচনা করেন এবং বলেন, এই লোকগুলো যদি তাহাজ্জুদ পড়তো তবে কতই না ভালো হত । সাদীর পিতা একথা শুনে বলেন, কতই না ভালো হত যদি তুমি তাহাজ্জুদ না পড়ে এদের মত ঘুমিয়ে থাকতে । তাহলে এদের গীবত করার পাপ তোমার ঘাড়ে চাপত না ।"
(ইহয়া উলূমিদ-দীন)
ইবাদতের ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে সমালোচনা করা । যেমন, কাউকে গিয়ে বলা অমুকতো ঠিকমত নামায পরতে পারে না, মাকরুহ ওয়াক্তে নামায পরে, রমযানের রোজা রাখে না, এত বড় হইছে কিন্তু এখনো নামায পড়ে না, এত বড় মেয়ে কুরআন পড়তে জানে না ইত্যাদি ।
"তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে কতক লোক ঘুমিয়ে থাকলে শেখ সাদী(রহ:) তাদের সমালোচনা করেন এবং বলেন, এই লোকগুলো যদি তাহাজ্জুদ পড়তো তবে কতই না ভালো হত । সাদীর পিতা একথা শুনে বলেন, কতই না ভালো হত যদি তুমি তাহাজ্জুদ না পড়ে এদের মত ঘুমিয়ে থাকতে । তাহলে এদের গীবত করার পাপ তোমার ঘাড়ে চাপত না ।"
(ইহয়া উলূমিদ-দীন)
আমরা আন্দালুস হিসেবে যে দেশকে চিনি-জানি | ইসলামী ইতিহাস
★(৭)কানের গীবত :
নিজে না বললেও কারো গীবত শোনা এবং শোনার সময় কোনরুপ বাধা না দেয়া কানের গীবত । গীবত দুই ভাবে হয় -
(১) মুখে বলে
(২) কানে শোনে
গীবত বলা ও শোনা সমান পাপ ।
"রাসূল(স:) বলেছেন, গীবত শ্রবণকারীও গীবতকারীদের একজন ।" (তাবরানী)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই গীবত চর্চা থেকে হেফাজত করুন। আমিন
নিজে না বললেও কারো গীবত শোনা এবং শোনার সময় কোনরুপ বাধা না দেয়া কানের গীবত । গীবত দুই ভাবে হয় -
(১) মুখে বলে
(২) কানে শোনে
গীবত বলা ও শোনা সমান পাপ ।
"রাসূল(স:) বলেছেন, গীবত শ্রবণকারীও গীবতকারীদের একজন ।" (তাবরানী)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই গীবত চর্চা থেকে হেফাজত করুন। আমিন
Tags
গীবত